ভারতী ঘোষ মামলা
সাধারণের স্বার্থেই হওয়া উচিত তদন্ত, মত কোর্টের
কোনও সরকারি অফিসার খুবই দক্ষ ও যোগ্য হতে পারেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে আমজনতার স্বার্থেই তার তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে কোটি টাকা দাবির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার শুনানির চলাকালীন আদালতের এই মনোভাবের কথা প্রকাশ করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার মামলার শুরুতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বিমল চট্টোপাধ্যায় আদালতকে জানান, সোমবার ভারতী ঘোষের সঙ্গে তাঁর দেখা ও কথা হয়েছে। “উনি অত্যন্ত যোগ্য অফিসার।” বলেন বিমলবাবু। অ্যাডভোকেট জেনারেলের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “সরকারি অফিসার যতই দক্ষ ও যোগ্য হোন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে সাধারণ মানুষের স্বার্থেই তার তদন্ত হওয়া উচিত।”
ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ।
খড়্গপুরের ব্যবসায়ী দেবব্রত ঘোষ আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, ভারতীদেবী তাঁর কাছে এক কোটি টাকা দাবি করেছেন এবং টাকা না-দেওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে হুমকি ও ভয় দেখানো হচ্ছে। একই অভিযোগ তিনি মহাকরণকেও জানিয়েছেন। আদালতে আসা এবং মহাকরণে নালিশ পেশের পরে কী কী ঘটেছে, তার তথ্য সংবলিত একটি অতিরিক্ত হলফনামা এ দিন হাইকোর্টে জমা দেন ওই ব্যবসায়ী। কী রয়েছে তাতে?
দেবব্রতবাবুর হলফনামায় বলা হয়েছে: ৯ জুলাই খড়্গপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ একটি জেনারেল ডায়েরি করে। ১০ জুলাই রাত একটায় পুলিশবাহিনী তাঁর খোঁজে বাড়িতে যায়। দেবব্রতবাবু তখন বাড়িতে ছিলেন না। ছিলেন তাঁর দু’ভাই ও স্ত্রী শীলা ঘোষ। হলফনামা মোতাবেক, পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এক পুলিশ অফিসার শীলাদেবীর হাতে মোবাইল ফোন ধরিয়ে দিয়ে কথা বলতে বলেন। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন এসপি ভারতী ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আপনার স্বামীকে বলুন আলোচনার মাধ্যমে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিতে।’ হলফনামায় আরও দাবি: বাড়ি ছাড়ার আগে শীলাদেবীকে একটি ফোন নম্বর দিয়ে অফিসারেরা বলে যান, ‘স্বামী ফিরলে এই নম্বরে কথা বলতে বলবেন।’
এ দিন সওয়াল করতে উঠে দেবব্রতবাবুর কৌঁসুলি বলেন, “আমার মক্কেল সাধারণ ব্যবসায়ী। এসপি’র সঙ্গে তাঁর পরিচয় নেই। তা হলে কেন এসপি ওঁর মোবাইলে বার বার ফোন করছেন?” প্রসঙ্গত, ১০ তারিখ রাতে শীলাদেবীকে ধরিয়ে দেওয়া মোবাইলটিতে যে নম্বর থেকে কথা বলা হচ্ছিল, এবং শীলাদেবীকে যে নম্বরটি পুলিশ দিয়ে গিয়েছিল, হলফনামায় দু’টোরই উল্লেখ রয়েছে। সেগুলি হল: ৯৮৩৬৮৩২৭৭৭ ও ৮৯৭৬৪০৬৫৯৮। বিচারপতি এ দিন এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য না-করলেও নির্দেশ দিয়েছেন, কল রেকর্ড যাতে নষ্ট করা না হয়।
শুনানির শুরুতে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, দেবব্রতবাবু সম্পর্কে পুলিশের কাছে অনেক অভিযোগ রয়েছে। বিচারপতি এজি’কে বলেন, এখানে এক জন বিশিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এজি দাবি করেন, ওই অফিসার কর্মদক্ষ। যা শুনে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “কর্মদক্ষ অফিসার হলে কি তদন্ত হবে না?”
এবং এর পরেই বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযোগকারীর পেশ করা অতিরিক্ত হলফনামার জবাব রাজ্য সরকারকে দিতে হবে অতিরিক্ত হলফনামা মারফতই। অভিযোগকারীর হলফনামার কোন কোন অনুচ্ছেদের উত্তর দিতে হবে, বিচারপতি তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৯ জুলাই।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.