ভোটের পরে মঙ্গলকোট, কালনায় বোমাবাজি রাতভর
রাতভর বোমাবাজিতে ফের অশান্ত গাষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ মঙ্গলকোটের নওয়াপাড়া ও ভাটপাড়ায়। দু’টি জায়গাতেই এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভোট মিটে যাওয়ার পরে পুলিশের আর দেখা মেলেনি। তবে মঙ্গলকোট থানার দাবি, ওই দু’টি এলাকা-সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ টহল দিয়েছে। কেতুগ্রামের চিনিশপুর গ্রামেও তৃণমূল ও বিক্ষুব্ধ তৃণমূলদের মধ্যে অশান্তি হয়েছে। সোমবার ভোট চলাকালীন মঙ্গলকোটের পূর্ব নওয়াপাড়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা শাহিদুল্লা মল্লিক ওরফে কটা বোমার আঘাতে মারা যান। ঘটনার পরেই পুলিশ জানিয়েছিল, তৃণমূল ও বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের সংঘর্ষের সময় বোমা ভরা অ্যালুমিনিয়ামের বালতি নিয়ে পালানোর সময় গ্রামের বাগানেপাড়া লাগোয়া খেতজমিতে পড়ে যান শাহিদুল্লা। বালতির বোমা ফেটে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই বালতির টুকরো পেয়েছে। ওই রাতেই নিহতের বাবা ইয়ার মহম্মদ মল্লিক মঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে একদল দুষ্কৃতী বোমা ও গুলি ছুঁড়ে তাঁর ছেলেকে খুন করেছে। শাহিদুল্লা বর্তমানে বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুরে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী সাহানারা বিবি পুলিশকে জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের ভয়েই তাঁরা গ্রাম ছেড়ে বর্ধমানে থাকতেন। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পূর্ব নওয়াপাড়ার পাশের গ্রাম ভাটপাড়াতেও বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনায় পুলিশ কাউকে ধরেনি। ভাটপাড়ায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সদস্য রিনা বিবির বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। বোমায় জখম হন রিনাদেবীর শ্বশুর শেখ আকবর আলি। রিনাদেবীর অনুগামীদের বাড়িতেও বোমা ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত্‌ আলি রিনাদেবীর স্বামী। তাঁদের এক অনুগামী স্বপ্না খাতুন নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। স্বপ্নাদেবীর অভিযোগ, “লাল তৃণমূল ভোটের দিনে আমাদের উপর চড়াও হতে পারে এই আশঙ্কায় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দিয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি।” লিয়াকত্‌ শেখের দাবি, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটল।” ভোট শেষেও ভাটপাড়ায় বোমাবাজি হয়। পূর্ব নওয়াপাড়া গ্রামেও রাতভর বোমা পড়েছে। এলাকায় আতঙ্ক, থমথমে পরিবেশের জন্য কেউ বাড়ির বাইরেও বেরোতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে।
ভোট মিটতেই অশান্ত হয়ে উঠল কালনা ২ ব্লকের পূর্বসাতগাছিয়া এলাকা। সিপিএমের অভিযোগ, এই পঞ্চায়েতের মালোপাড়া এলাকায় তাঁদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ১৩টি বাড়িতে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল। একটি দোকানে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালপত্র লুঠ করা হয়। সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, হেরে যাওয়ার আতঙ্কেই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের উপরে হামলা চালাচ্ছে। ফলে বহু দলীয় কর্মী-সমর্থক আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছাড়া। তাঁর আরও দাবি, প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়েই তৃণমূল এই হামলা চালাচ্ছে। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রণব রায় দাবি করেন, গোটা ব্লকেই শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট শেষ হয়েছে। পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েতে ভোট মেটার পর পরিস্থিতি অশান্ত করছে সিপিএমের লোকজনেরাই। সিপিএমের আরও অভিযোগ, কালনা ১ ব্লকের মেদগাছি গ্রামে ভোট মেটার পর তাঁদের এক কর্মীর বাড়িতেও হামলা চালানো হয়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.