ভোট শেষ হতে পেরোল রাত
ভীর রাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলল জেলার গ্রামীণ এলাকার ৩৯৮২টি বুথের মধ্যে ৪৪৯টি বুথে। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “রাত ৮টার মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ বুথে ভোট নেওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। সাত-আটটি বুথে রাত একটা পর্যন্ত ভোট চলে।” প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, কোথাও বৃষ্টিতে, কোথায় রমজানের কারণে বা ভোটারের সংখ্যা বেশি হওয়ার জন্য ভোট প্রক্রিয়া শেষ হতে দেরি হয়েছে। জেলায় শতকরা প্রদত্ত ভোটের হার ৮৪ ভাগ। মোট ৩৬৮০৩০৭ ভোটারের ৩০৮১৮১৯১ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১৬১৭৮০০ ও মহিলার সংখ্যা ১৪৬৪০৯১। সর্বাধিক শতকরা ৮৯ ভাগ ভোট পড়েছে কালনা ২ ব্লকে, সর্বনিম্ন শতকরা ৭৩ ভাগ ভোট পড়েছে জামুড়িয়া ব্লকে। কাটোয়া মহকুমার বিভিন্ন বুথেও গভীর রাত পর্যন্ত ভোট হয়। কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙা, মঙ্গলকোট, চাকুলিয়া-সহ বেশ কিছু বুথে ভোট মিটতে গভীর রাত হয়ে যায়। দেরি হয় কাটোয়ার পানুহাটের একটি বুথেও।
কালনা মহকুমার দু’টি জায়গায় ভোট শেষ হতে ভোর হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি গ্রামে ভোট শেষ হতে গভীর রাত হয়ে যায়। হয়রানি পোহাতে হয় ভোটার ও ভোটকর্মী, দু’জনকেই।
তখন বিকেল ৫টা পেরিয়ে গিয়েছে। সোমবার কালনার এক বুথে।—নিজস্ব চিত্র।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার ৭০টির বেশি বুথে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও ভোটগ্রহণ চলে। এর মধ্যে গভীর রাত পর্যন্ত ভোট চলে প্রায় ২৫টি জায়গায়। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের সোনাকুড়ি গ্রামে ভোট শেষ হয় মঙ্গলবার ভোট চারটের সময়। বিকেল পাঁচটার কিছুক্ষণ আগে ধরা পড়ে, এক জায়গার ব্যালট অন্য বাক্সে জমা পড়েছে, দাবি করেছেন ভোটাররা। ফলে বিকেল পাঁচটা থেকে বন্ধ হয়ে যায় এখানকার ভোট। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে প্রায় ৬ ঘণ্টা লাগে। এর পর আবার ভোটগ্রহণ শুরু হলে তা শেষ হতে ভোর হয়ে যায়। মন্তেশ্বরের পিপলন পঞ্চায়েতের ১০৫ নম্বর বুথ কুলজোড়া গ্রাম থেকে ব্যালট বাক্স নিয়ে ভোটকর্মীরা সকাল ৬টায় স্ট্রংরুমে পৌঁছয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বুথে ভোটার সংখ্যা ১০৭৩। ভোট পড়ে ৯১১টি। ওই বুথের ভোটারদের দাবি, ভোটগ্রহণের দিন দুপুর পর্যন্ত পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসনের জন্য আলাদা ব্যালট পেপার দেওয়া হয়। পরে একই সঙ্গে ব্যালট পেপার দেওয়া হলে ভোট মিটতে রাত পেরিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দা পার্থ সামন্তের কথায়, “ধীর গতিতে ভোট পর্ব চলছে এ কথা জানতে পেরে মধ্যরাতে পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক এবং সেক্টর অফিসার বুথে পৌঁছয়। তবু ভোট শেষ হতে ভোর হয়ে যায়।” মন্তেশ্বরের দেনুড়, কষা, ফুল গ্রাম, বসন্তপুর গ্রামে ভোট মিটতে দেরি হয় বলে দাবি করেছেন ওই এলাকার ভোটাররা।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের ১০টি বুথে ভোট শেষ হতে গভীর রাত হয়ে যায়। ভোটারদের দাবি, এই ব্লকের দক্ষিণ শ্রীরামপুর হেমায়েতপুরের একটি স্কুলে রাত দশটার পরেও ভোট পর্ব চলেছে। নসরত্‌পুর পঞ্চায়েতের দু’টি বুথেও রাত হয় ভোট মিটতে। শ্রীরামপুর এলাকার তৃণমূল নেতা দিলীপ মল্লিকের অভিযোগ, “হেমায়েতপুরের বুথে অত্যন্ত ধীর গতিতে ভোট গ্রহণ চলে। এর পর কালি ফুরিয়ে যাওয়া এবং এক ভোটকর্মীর অসুস্থতার জন্য দিনের বেলায় ভোটগ্রহণ ঘণ্টা দু’য়েক বন্ধ থাকে।” কালনা ১ ব্লকের কোম্পানীডাঙা, রামেশ্বরপুর, কোলডাঙা, সিংরাইল-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ভোট মিটতে রাত হয়ে যায়। কোলডাঙা এলাকার তৃণমূল নেতা সুখেন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, বুথে ভোটার সংখ্যা ৮০০। ভোট পড়ে ৬৯৬ জনের। এর মধ্যে তিনশোরও বেশি ভোট পড়ে বিকেল পাঁচটার পর। তাঁর আরও দাবি, দেরি হতে দেখে ভোট দিতে আসা অনেকেই বাড়ি ফিরে যান।
কালনা মহকুমার অনেক জায়গায় ভোট শেষ করতে দেরি হওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন মহকুমা প্রশাসন। মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, “কেন এমন ঘটল সে বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ চলছে।” মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারই প্রথম প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বেশ কিছু বুথে ভোট প্রক্রিয়া মেটাতে দেরি হয় তাঁদের, এমনই দাবি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ফলে ভোট মিটতে রাত গড়িয়ে ভোর হয়ে যায়। বহু সংখ্যালঘু এলাকায় ভোটাররা রোজা ভাঙার পর ভোট দেবেন বলে জানান।
রাত পর্যন্ত ভোট হওয়াতে অসুবিধা হয় ভোটার এবং ভোটকর্মীদের। তাঁদের অভিযোগ, বুথের ভিতর আলো থাকলেও যথেষ্ট আলো ছিল না বুথের বাইরে। এক ভোটকর্মীর কথায়, “তিন-চারটি বুথের ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের বুথ পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য বরাদ্দ হয় একটি করে বাস। যে সব বুথে ভোট শেষ হতে রাত হয়ে যায়, সেই সব বুথের কর্মীদের অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘক্ষণ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.