বিধাননগর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় হাজিরার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হল সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে। রবিবার রাতে শিলিগুড়ি থেকে ট্রেনে সারদা কাণ্ডের অন্যতম দুই অভিযুক্তকে কলকাতায় নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও তাঁদের জেল হেফাজতে ১৯ জুলাই পর্যন্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন শিলিগুড়ির এসিজেএম মধুমিতা বসু। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “বিধাননগর থানায় একটি মামলায় হাজিরা থাকায় দুজনকে ট্রেনে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
এদিন শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়েছিল সারদার কর্ণধার এবং দেবাযানীকে। আদালতের নির্দেশে দুই জনই গত সাতদিনের পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। এদিন দুই জনকে ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম সন্তোষ পাঠকের এজলাসে তোলা হয়। দেবযানীর আইনজীবী অমিতাভ ভট্টাচার্য ও সুস্মিতা বসু জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা খারিজ করে দেন।
|
আদালতে তোলা হচ্ছে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে।—নিজস্ব চিত্র। |
দেবযানীদেবীর আইনজীবীরা আদালতে আবেদন করেন, শিলিগুড়ি থানায় এবছর ২২ এপ্রিল উমা পাল মজুমদার একটি অভিযোগ করেছিলেন। সেখানে তিনি সারদা হাউসিং প্রাইভেট লিমিটেডে এক লক্ষ টাকা রাখার কথা জানান। যদিও সারদার ওই নামে কোনও ব্যবসা ছিল না। যদিও এর পরে তদন্তকারী অফিসার পাল্টা প্রমাণ আদালতে পেশ করেন। অভিযোগকারী যার কাছে টাকা জমা দিয়েছিলেন তাঁকে কেন গ্রেফতার করছে না পুলিশ, এই প্রশ্ন তোলেন দেবযানীর আইনজীবী। পুলিশ তরফে জানানো হয় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত সাতদিনের পুলিশি জেরায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা-সহ বিহারে ব্যবসা বাড়িয়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। শিলিগুড়িতে থাকা সারদার স্কুলকে ঘিরে তাঁর এডুকেশনাল হাব তৈরির পরিকল্পনা ছিল। পাশাপাশি দার্জিলিং, মালদায় একই ধরণের হাব তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। সারদার শিলিগুড়ি আঞ্চলিক অফিসেও তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সারদা কর্তাকে। সেখান থেকে কিছু নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন জমির হিসেব সংগ্রহ করা হয়েছে। রাজ্যের কয়েকশ কোটি টাকার জমি রয়েছে বলে পুলিশের অনুমান।
পুলিশি জেরায় সারদা কর্তা দাবি করেছেন, তাঁর নাম করে সংস্থার তরফে কিছু নকল সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিল। এছাড়া গন্ডগোল ছিল সারদার সফটওয়ার এবং অ্যাকাউন্টে। জেরায় তিনি দার্জিলিঙের জমি, বানারহাটে দুগ্ধ প্রকল্প, লাটাগুড়িতে রিসোর্ট ইত্যাদি সম্পত্তির কথা জানিয়েছেন।
তবে পুলিশি জেরায় নিজেকে পুরোপুরি নির্দোষ বলেই দাবি করেছেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়। তিনি পুলিশ অফিসারদের জানিয়েছেন, সাধারণ কর্মী হিসেবে সংস্থায় কাজ করতেন। সবকিছুর জন্য তিনি সুদীপ্ত সেনকে দায়ী করেছেন। জেরায় বহু ক্ষেত্রেই দু’জনের কথার কোনও মিল পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। |