সুদীপ্ত-দেবযানীকে দেখেই বিক্ষোভে উত্তাল জনতা
ড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেও সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ল শিলিগুড়ি আদালত চত্বর। কেউ কেউ গালি দিয়ে ছাতা হাতে তেড়ে মারতেও গেলেন তাঁদের। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি আদালত চত্বরে। বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন মূলত সারদা সংস্থার এজেন্টররা। একাধিক মহিলা এজেন্ট গালি দিয়ে সারদা কর্তার দিকে তেড়ে গেলে পুলিশ প্রথমে হকচকিয়ে যান। হতভম্ব হয়ে পড়েন সারদা কর্তাও। ২৫-৩০ জন পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী মিলে কোনমতে সারদা কান্ডের অভিযুক্তদের প্রথমে আদালতে নিয়ে যান। শুনানি পর্ব শেষে পরে আদালত থেকে জেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তোলার সময়েও একই ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সামাল দেয়। শিলিগুড়ির আইসি বিকাশ কান্তি দে জানান, গোলমালের আশঙ্কা করেই বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কমিশনার।
এদিন দার্জিলিং মেলে কলকাতা থেকে সারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই কর্তাকে শিলিগুড়ি আনা হয়। প্রথমে তাঁদের শিলিগুড়ি সংশোধানাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সারদা কর্তাদের আসার ব্যাপারে সরকারি নির্দেশিকা হাতে না-পাওয়ায় জেল কর্তৃপক্ষ দুজনকে ভেতরে নেননি বলে জেল সূত্রের খবর। যদিও জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “সরকারি ভাবে কোন কিছু জানানো না হলেও তেমন সমস্যা হয় নি।”
শিলিগুড়ি আদালত চত্বরে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়।
জেল চত্বরে অফিস লাগোয়া এলাকায় কিছুক্ষণ রাখার পরে দুজনের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়। আদালতের লক আপে দুজনকে পৌনে ১০টা নাগাদ নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা ২টো নাগাদ এসিজেএম মধুমিতা বসুর এজলাসে তোলা হয় তাঁদের।
দেবযানীর পক্ষের আইনজীবী ছিলেন কলকাতা থেকে আসা অভিষেক মুখোপাধ্যায় এবং অমিতাভ ভট্টাচার্য। তবে সুদীপ্ত সেনের পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না। তবে লিগাল এডের তরফে অভিজিৎ সেন ছিলেন তাঁর পক্ষে। দুই অভিযুক্তের জামিনের জন্য আবেদন জানানো হলেও তা খারিজ করে দেন বিচারক। সরকারি পক্ষের আইনজীবী সুদীপ রায় বাসুনিয়া জানান, দুজনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেল হেফাজতে থাকলেও পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন জানালে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। আদালত চত্বরে সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে একাধিক প্রশ্ন করা হলেও কোনও জবাব দেননি সুদীপ্তবাবু।
এদিন হট্টগোল শুরু হয় বেলা ১২টা নাগাদ। সারদা কান্ডের দুই অভিযুক্তকে আদালতে আনা হয়েছে খবর চাউর হতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শতাধিক এজেন্ট ভিড় করেন। দূর থেকেই লক আপে বসে থাকা অভিযুক্তদের উদ্দেশ্য করে গালি দিতে তাকেন তাঁরা। আদালতে হাজিরা দিতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে এজেন্টরা দুজনের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেন। উত্তেজিত এজেন্টদের কয়েকজন চিৎকার করে অভিযুক্তদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করতে থাকেন। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। কোনমতে পুলিশ দুজনকে আদালত কক্ষে নিয়ে যায়।
মহিলাদের বিক্ষোভ।
শুনানির পরে ফের লকআপে নেওয়া হয় ঘুরপথে। সেখান তেকে জেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তোলার সময়ে এজেন্টদের মধ্যে কয়েকজন ছাতা নিয়ে দুই অভিযুক্তের দিকে তেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গাড়ির পেছনে ছুটতে থাকেন মিত্রা দে, মর্জিনা বেগম সহ কয়েকজন এজেন্ট। তাঁরা চিৎকার করে কী বাবে বহু টাকা মানুষের থেকে নিয়ে ওই সংস্থায় জমিয়ে বিপাকে পড়েছেন, সে কথা বলে সারদা-কর্তার জবাব চাইতে থাকেন। পুলিশ গিয়ে তাঁদের আটকে দেয়।
পুলিশ জানায়, শিলিগুড়ির সুভাষপল্লীর বাসিন্দা উমা পালচৌধুরীর অভিযোগের ভিত্তিতেই শিলিগুড়িতে আনা হয় সারদা কর্তাকে। চলতি জানুয়ারিতে সারদা হাউসিং প্রাইভেট লিমিটেডে ১ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন তিনি। ২২ এপ্রিল উমা দেবী শিলিগুড়ি থানায় এফআইআর করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়। সেই মামলার সুবাদেই ওই দুজনকে এদিন শিলিগুড়িতে আনা হয় তাঁদের।

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.