প্রত্যাখ্যানের মোকাবিলা
পথে নামবে ৪ হাজার নতুন ট্যাক্সি
চালকদের প্রত্যাখ্যান করার প্রবণতা কমাতে ট্যাক্সির সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বাড়াতে হবে। এমনটাই মনে করছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ট্যাক্সিমালিকদের উল্টো যুক্তি। মালিকদের মতে, প্রত্যাখ্যানের প্রবণতা বা রিফিউজাল কমাতে প্রশাসনকে আরও কড়া হতে হবে। এই প্রবণতা কমাতে মালিকদের নয়, পুলিশকে শাস্তি দিতে হবে চালকদের।
কিন্তু দাওয়াইয়ের রাস্তা যা-ই হোক না কেন, দু’পক্ষই মানছে, দিন দিন ট্যাক্সিচালকদের প্রত্যাখ্যানের প্রবণতা বাড়ছে। এবং রাতের দিকে সেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।
রাজ্য পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, প্রত্যাখ্যান কমাতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায় ৪ হাজার নতুন ট্যাক্সি রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১৫০০ ট্যাক্সি হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মহাকরণের এক কর্তা বলেন, “এ বারে যে সব নতুন ট্যাক্সি বেরোবে, তার মধ্যে অ্যাম্বাসাডর থাকবে না। কারণ পরিবেশ-বান্ধব বিএস-৪ প্রযুক্তির অ্যাম্বাসাডর গাড়ি তৈরিই হচ্ছে না। ফলে, অন্য সংস্থার গাড়ি এ বার রাস্তায় নামবে। অন্য সংস্থার গাড়ি ট্যাক্সি হিসেবে রাস্তায় নামানোর জন্য দু’টি শর্ত রাখা হয়েছে। এক, নন-এসির ক্ষেত্রে ১০৫০ সিসি ইঞ্জিন এবং এসি ট্যাক্সির ক্ষেত্রে ১১৫০ সিসি ইঞ্জিন। দুই, প্রতি ট্যাক্সিতে মালপত্র রাখার সুবন্দোবস্ত থাকতে হবে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে পরিবহণ দফতরের। বৈঠক হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের সঙ্গেও। ওই কর্তার মতে, “বেশি সংখ্যায় ট্যাক্সি রাস্তায় বার করার প্রধান কারণই হল, প্রত্যাখ্যানের সমস্যার মোকাবিলা করা। কারণ, এখন রাস্তায় ট্যাক্সির চাহিদার চেয়ে জোগান কম। জোগান বাড়লে স্বভাবতই ট্যাক্সিচালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে। ফলে, প্রত্যাখ্যানের সমস্যাও কমবে।” এসি ট্যাক্সি বার করার পক্ষে ওই কর্তার যুক্তি, “ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় বার করার প্রবণতা কমাতেই এসি ট্যাক্সি পথে নামানোর কথা ভাবা হয়েছে।”
প্রত্যাখ্যান নিয়ে পরিবহণ কর্তাদের এই যুক্তি অবশ্য মানতে চাইছেন না ট্যাক্সিমালিক এবং চালক সংগঠনগুলির নেতা। ট্যাক্সিচালক সংগঠনের নেতা বিমল ঘোষের বক্তব্য, “ট্যাক্সির সংখ্যা বাড়িয়ে প্রত্যাখ্যানের প্রবণতা কোনও ভাবেই কমানো যাবে না। রিফিউজাল কমাতে হলে প্রশাসনকে আরও শক্ত হতে হবে।” বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বিমল গুহর দাবি, “প্রত্যাখ্যান কমাতে পুলিশকে চালকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। তা না হলে এই প্রবণতা কমানো অসম্ভব। এখন, পুলিশ প্রত্যাখ্যানের জন্য মালিককে কেস দেয়। চালকের এতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু মালিকদের নির্দেশে তো আর চালকরা যাত্রী প্রত্যাখ্যান করেন না, বা মালিকেরা জানতেও পারেন না কোথায় তাঁর চালক কী করছেন। এটা পুরোপুরি একটা অবাস্তব চিন্তাভাবনা। আমরা রাজ্য সরকারকে অনেক বারই বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।”
শুধু ট্যাক্সিচালকদেরই কেস দেওয়া নয়, ট্যাক্সি পরিষেবা ঠিকঠাক করতে প্রশাসনকে আরও শক্ত হতে হবে বলে মনে করছেন বিমলবাবু। তিনি বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই চালক মিটারে কারচুপি করেন। আমরা সেটা জানতেও পারি না। অনেক জায়গায় যাওয়ার জন্য মিটারের বাইরেও বেশি টাকা দাবি করেন চালকেরা। সেটাও বন্ধ হওয়া দরকার।
এ জন্য পুলিশকেই বাড়তি সক্রিয় হতে হবে।”
মালিকদের সঙ্গে অবশ্য কিছু প্রশ্নে এক মত পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তাঁর মতে, “মালিকদের একটা যুক্তি সঠিক, কিছু চালক রাস্তায় বেরিয়ে আইন ভাঙছেন, তার দায় বর্তাচ্ছে মালিকদের উপর। বিষয়টি নিয়ে কী করা যায়, তা নিয়ে আমরাও ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি। তবে যে ভাবেই হোক, ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যানের সমস্যা সমাধানে আমরা বদ্ধপরিকর।”

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.