কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শুক্রবার বারাসত আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করেছে সিআইডি। ওই অতিরিক্ত চার্জশিটে আরও তিন অভিযুক্তের নাম ঢোকানো হয়েছে। আগে সিআইডি যে-চার্জশিট পেশ করেছিল, তাতে সইফুল আলি নামে এক দুষ্কৃতীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অসম্পূর্ণ চার্জশিট দেওয়ায় বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় সিআইডি-কে। কামদুনিবাসীও বিক্ষোভ দেখান। সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।
বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে সিআইডি অতিরিক্ত চার্জশিটে আরও তিন অভিযুক্তের নাম ঢোকালেও কামদুনিবাসীর ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। এ দিনও কয়েকটি ম্যাটাডর ভ্যানে চেপে বারাসত আদালতে হাজির হন এলাকার লোকজন। ঘটনার ৩৫ দিন পরেও বিচার প্রক্রিয়া কার্যত শুরু না-হওয়ায় আদালত-চত্বরেই তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আইনজীবীদের একাংশ এবং কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। |
শুক্রবারের বিক্ষোভে যোগ দিয়ে ধর্ষিত ও নিহত কলেজছাত্রীর দাদা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এক মাসের মধ্যে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও ফরেন্সিক রিপোর্টই জমা পড়েনি। যে-ভাবে তদন্ত চলছে, তাতে বিচার প্রক্রিয়া কবে শেষ হবে, বুঝতে পারছি না।” এ দিন বেলা ১টা নাগাদ কামদুনির বাসিন্দাদের একাংশ বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে যশোহর রোড অবরোধ করেন। এর জেরে আধ ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ থাকে। বারাসত আদালত থেকে কামদুনিতে ফিরেও এলাকায় বিক্ষোভ-সভা করেন তাঁরা।
সিআইডি সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির রিপোর্ট ও সেরোলজি-র রিপোর্ট পাওয়ার পরে তা আদালতে পেশ করা হবে অতিরিক্ত চার্জশিটের মাধ্যমে। এ দিন যে-অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করা হয়, তাতে চার গ্রামবাসী-সহ আরও ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
আজ, শনিবার রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে দিল্লি রওনা হবেন এলাকার জনা পঁচিশ বাসিন্দা। নিহত কলেজছাত্রীর দাদা জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে দোষীদের ফাঁসির দরবার করতে তাঁর বাবা এবং দুই ভাইও দিল্লি যাবেন।
এক আইনজীবী মারা যাওয়ায় এ দিন কামদুনি মামলার শুনানি শুরু হয়নি। তবে ধৃত আট জনকে বিচারকের এজলাসে তোলা হয়। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্তদের কাছে জানতে চান, তাদের কিছু বলার আছে কি না। অভিযুক্তেরা বিচারকের কাছে মুক্তির আবেদন জানায়। বিচারক তাদের বলেন, তা সম্ভব নয়। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২২ জুলাই।
|