|
|
|
|
খরচ হয়নি টাকা, মেলেনি ‘আমার ঠিকানা’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে পরিষেবা সরাসরি পৌঁছে দিতেই তৈরি হয়েছিল পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক প্রশাসনকে তৃণমূলস্তরে আনতেই তো ভোট। তার জন্য সরকারি কোষাগারের কোটি কোটি টাকা, পুলিশ, আধাসেনা, পর্যবেক্ষক নিয়ে রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন। কিন্তু কী পাচ্ছেন গ্রামবাসী?
গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে এখন প্রচুর টাকা। সুযোগ আছে কাজেরও। কিন্তু আর্থিক বছর ঘুরলে দেখা যায়, টাকা পড়ে আছে টাকার জায়গাতেই। কাজের সুযোগ থাকলেও, তা খরচ হচ্ছে কই? হুগলিতে মুসলিম ছাত্রীদের আবাস নির্মাণের ৭ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। একইভাবে ১৬ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে জেলার বেশ কয়েকটি কবরস্থান নির্মাণের কাজে। যদিও জেলা প্রশাসনের এক কর্তার সাফাই, ছাত্রীদের আবাস নির্মাণে জমির পরিমাপ নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। করবস্থান তৈরিতেও ছিল মামলার সমস্যা। তবে এডিএম (উন্নয়ন) আবিদ হোসেন জানিয়েছেন, দুটি সমস্যাই মিটে গিয়েছে। কাজও শুরু হবে শীঘ্রই। |
|
চলছে আমন রোয়ার কাজ।—নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু জেলায় ‘আমার ঠিকানা’ প্রকল্পে পড়ে রয়েছে যে পৌনে তিন কোটি টাকা? কূপ খনন বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র উন্নয়নের টাকা? এগুলির কী হবে, সে জবাব মেলেনি।
হুগলিতে চুঁচুড়া-তারকেশ্বর রোডের বেহাল অবস্থা ছিল দীর্ঘদিন। কেউ অসুস্থ হলে একমাত্র চিকিত্সার জায়গা সেখানে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতাল। কিন্তু ওই রাস্তা দিয়ে রোগী নিয়ে গেলে যে তাঁর প্রাণ বেরিয়ে যায়। কিন্তু কোনও উপায় নেই। দিল্লি রোডে সুগন্ধার পর থেকে রাস্তার পরিস্থিতি ছিল সবথেকে খারাপ। বছরের পর বছর দুর্ভোগ হচ্ছিল মানুষের। যদিও অতি সম্প্রতি ওই রাস্তা সারানো হয়েছে।
ডানকুনি থেকে চাঁপাডাঙ্গা হয়ে আরামবাগ যাওয়ার অহল্যাবাই রোডও রীতিমতো বেহাল। হুগলির গ্রামীণ এলাকার মানুষজন এই রাস্তার উপরেই নির্ভর করেন। কিন্তু প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। মগরা থেকে মহানাদ পর্যন্ত সাত কিলোমিটারের বেশি রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। এলাকার মানুষের বহু আবেদন-নিবেদনেও সাড়া দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। রাস্তা খারাপ থাকার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। তবু টনক নড়েনি পঞ্চায়েতের কর্তাদের। হুগলির বিভিন্ন জায়গায় জিটি রোড এবং দিল্লি রোডের চিত্রও একই রকম খারাপ। জেলা থেকে দূরে যেতে এই রাস্তা দুটিই প্রধান ভরসা। কিন্তু নজর নেই প্রশাসনের। যদিও জেলার সড়ক পরিবহণে এই রাস্তা দুটির গুরুত্ব অপরিসীম। এই সবের ভিড়ে সড়ক পথে হুগলিতে অবশ্য ইদানীং কাজ কিছু হয়েছে। পুইনান থেকে হাউর ৬ কিলোমিটার রাস্তা সারানোর কাজ হয়েছে। ধনেখালিতে হয়েছে রাস্তার সংস্কারের কাজ। প্রাশাসন সূত্রের খবর, পোলবা-দাদপুর পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর-চককেষ্টপুর, হরিপাল এবং তারকেশ্বরের বেশকিছু রাস্তা সারানোর কাজ হয়েছে। কিন্তু মোট কত রাস্তা সারানো দরকার, সেই তথ্য নেই জেলা পরিষদের কাছে।
আবার যেখানে কাজ হয়েছে সেইসব জায়গায় গ্রামবাসীরা রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, “রাস্তার কাজ বহু ক্ষেত্রে মান অনুয়ায়ী হচ্ছে না। তার ফলে রাস্তা কতদিন টিকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।” রাস্তা না-সারানোর বিষয়ে জেলার সভাধিপতি প্রদীপ সাহা অবশ্য টাকার অপ্রতুলতাকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন,“যে রাস্তার জন্য আমরা টাকা পেয়েছি, সেখানে কাজ করেছি।” কিন্তু জেলার মানুষেরা জনান্তিকে বলছেন, জেলায় সড়ক নির্মাণে দালালরাজই পুরো ব্যবস্থাটায় ঘুন ধরিয়ে দিয়েছে। টেন্ডার ডাকা হলে চেনা মুখ ঘুরে ফিরে আসে। জায়গা পান না নতুনেরা। পরিস্থিতি এমনই যে টেন্ডারে অংশ নিতে উত্সাহী না হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে কাজও বিলম্বিত হচ্ছে। |
রিপোর্ট কার্ড...
বিস্তারিত |
|
|
|
|
|