|
|
|
|
ভেঙে পড়ে সেতু, ঘুরপথে যাতায়াত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁকরাইল |
সেতু ভেঙে গিয়েছে বছরখানেক আগে। এখনও সেই অবস্থাতেই আছে। আজও শুরু হয়নি সেই সেতু সারাইয়ের কাজ।
এমনই অবস্থা সাঁকরাইলের বাণীপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মিলবাজারের কাছে রাজগঞ্জে সরস্বতী নদীর উপর তৈরি লোহার সেতুটির। কাছেই রয়েছে সাঁকরাইলের সেই বহু পুরনো ন্যাশনাল জুটমিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই জুটমিলের শ্রমিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়েছিল এই লোহার সেতুটি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। বর্তমানে সেতুটি সেচ দফতরের তত্ত্বাবধানে। সেতুটির মাধ্যমে বাণীপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে সাঁকরাইল গ্রাম পঞ্চায়েতের যোগাযোগ ছিল। সেতুটির উপর দিয়ে যাতায়াত করতেন বাণীপুর, বাসুদেবপুর, হাটগাছা, সর্দারপাড়া, হাওয়াপোতা অঞ্চলের বাসিন্দারা। সেতুটির পাশেই ছিল একটি বড় বাজার। সেটি স্থানীয় ভাবে মিলবাজার নামেই পরিচিত। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত সেখানকার প্রায় সাড়ে আটশো ব্যবসায়ীও। সেতুটির কাছেই কয়েকটি স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ২০১২ সালে পুজোর ঠিক আগেই ভেঙে পড়ে সেতুটি। তারপর থেকে বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ১০ মিনিট হেঁটে বাসিন্দাদের চাঁপাতলার একটি সেতু দিয়ে যাতায়াত চলে। |
|
এই হাল সেতুর। নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় এক বাসিন্দা অনিল দাস বলেন, “এখানকার চালু বাজারটাই তো এই সেতু ভেঙে পড়ার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। বদলে গেছে বাসের রুটও। আর সবচেয়ে অসুবিধা তো স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের। অনেকটা ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয় ওদের। বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
বাণীপুর-১ পঞ্চায়েতের বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান রামসওয়ারে প্রসাদ বলেন, “ওই সেতু ভেঙে পড়ার পর আমরা বিডিওকে জানিয়েছিলাম। ব্লক অফিসের তরফে ভেঙে পড়ার পর প্রথমে বাঁশ দিয়ে, পরে ইঁট দিয়ে গেঁথে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পঞ্চায়েতের উন্নয়নের মিটিংয়ে সেচ দফতরের প্রতিনিধিদের এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। প্রতিবারই তাঁরা করে দেবেন বললেও আজও কিছু করেননি।”
সাঁকরাইলের বিধায়ক শীতল সর্দার বলেন, “সেতুটি সেচ দফতর থেকে সারানোর জন্য অনুমোদিত হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু আর্থিক সমস্যা ও ঠিকাদারের অতিরিক্ত মজুরির দাবিতে সেতুটি আর করা হয়ে উঠছে না। আশা করছি, সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত সেতুটি সারানোর ব্যবস্থা হবে।” ওই সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং হাওড়া নাজিরগঞ্জ ডিভিশনের সেচ দফতরের আধিকারিক রানা চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “সরস্বতী নদী সংস্কারের সঙ্গে নদীর উপরে বেহাল সেতু সংস্কারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প থেকে টাকা অনুমোদন হয়েছিল। সেই মতো পরিকল্পিত ব্যয়ের হিসাব দিয়ে ই-টেন্ডারও ছাড়া হয়। কিন্তু চার-পাঁচবার টেন্ডার দেওয়া হলেও ঠিকাদার তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। নতুন করে টেন্ডারের ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।”
স্থানীয় এক ঠিকাদার সমীর পাঁজা বলেন, “সরকারি কাজে একলপ্তে টাকা পাওয়া সমস্যার। টেন্ডারে যে খরচ দেখানো হয়, তাতে বেশিরভাগ সময়ই কুলোয় না। রাজনৈতিক দলগুলোও ছেড়ে দেয় না।” |
|
|
|
|
|