জড়িত পুণে বিস্ফোরণেও, দাবি
ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনেরই সদস্য আনোয়ার
ংগঠনের কেবল এক জন ‘লিঙ্কম্যান’ কিংবা বিস্ফোরকের ‘বাহক’ নয়, নদিয়ার চাপড়ার আনোয়ার হুসেন মল্লিক পশ্চিমবঙ্গে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের এক জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ২০০০ সালে বাংলাদেশের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর থেকেই আনোয়ার জেহাদি কাজকর্মে জড়িত হয়ে পড়ে এবং গত ছ’-সাত বছর যাবৎ সে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সঙ্গে কাজ করছে। এই সূত্রে পুণের জার্মান বেকারিতে বিস্ফোরণের সঙ্গে এ বছর ২১ ফেব্রুয়ারি হায়দরাবাদে হওয়া জোড়া বিস্ফোরণ কিংবা ২০১১-র ১১ জুলাই মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে (১৩/৭) আনোয়ারের নাম উঠে এসেছে।
ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ), হায়দরাবাদ পুলিশের কাউন্টার ইনসারজেন্সি সেল-এর পর শুক্রবার মহারাষ্ট্র পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াড (এটিএস)-এর গোয়েন্দারা এসে লালবাজারে আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষকর্তা শুক্রবার বলেন, “গত ৬ জুলাই রাতে ডালহৌসি চত্বর থেকে আনোয়ারকে গ্রেফতার করার সময়ে আমাদের মনে হয়েছিল, সে নিছকই টাকার বিনিময়ে বিস্ফোরকের বাহক হিসেবে কাজ করত। কিন্তু এই ক’দিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং আরও কিছু সূত্র পেয়ে আমরা এখন বুঝতে পারছি, জঙ্গি কার্যকলাপের ক্ষেত্রে আনোয়ার এক জন রাঘব বোয়াল। আইএমের সঙ্গে সে সরাসরি যুক্ত এবং তাদের কার্যকলাপের ক্ষেত্রে আনোয়ারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”
এসটিএফের এক তদন্তকারী অফিসারের বক্তব্য, “আনোয়ারের ভূমিকা কিন্তু বেঁধে দেওয়া ছিল। বেআইনি ভাবে নদিয়ার গোংরা সীমান্ত টপকে বাংলাদেশে গিয়ে সেখান থেকে চোরাপথে বিস্ফোরক নিয়ে এসে কলকাতায় ইয়াসিন ভটকলের মতো আইএমের চাঁইয়ের হাতে তুলে দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব ছিল আনোয়ারের।” গোয়েন্দাদের বক্তব্য, একা আনোয়ারের পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব ছিল না। এই সূত্রে নদিয়ার চাপড়ার আরও কয়েক জন বাসিন্দার নাম পেয়েছে এসটিএফ।
আর এক অফিসার বলেন, “বাংলাদেশের যারা আনোয়ারের হাতে বিস্ফোরক তুলে দিত, তারা সম্ভবত সেখানকার হুজি-র লোক। বনগাঁ ও বসিরহাটের মতো উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সীমান্তগুলিতে নজরদারি বেড়ে যাওয়ার ফলে জঙ্গিরা বিস্ফোরক আনতে নদিয়া সীমান্তকে কাজে লাগাচ্ছে। নিজের গ্রামে আনোয়ারের একটি মুদির দোকান আছে। মুদির দোকানে বিভিন্ন ধরনের মানুষের ভিড় করাটাই স্বাভাবিক। সেই সূত্রে বাংলাদেশ থেকেও লোকজন আসত আনোয়ারের দোকানে। আর দোকানের মামুলি জিনিসপত্রের থলের আড়ালে বিস্ফোরক সরবরাহ করাটা সমস্যার নয়।”
এনআইএ-র ধারণা, আইএমের ‘অপারেশনাল চিফ’ ইয়াসিন ভটকল এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা দেশের যে সব নাশকতায় সরাসরি জড়িত, সে সব ক্ষেত্রে বিস্ফোরক সরবরাহ করেছে নদিয়ার এই আনোয়ার। ২০১০-এ পুণেতে জার্মান বেকারির বিস্ফোরণের মতো এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে হায়দরাবাদের জোড়া বিস্ফোরণের আগে সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ইয়াসিনকে দেখা গিয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। এনআইএ-র বক্তব্য, দিলখুশনগরের বাসস্ট্যান্ডে ইয়াসিন নিজে বোমা বসিয়েছিল এবং সিসিটিভি ফুটেজে ইয়াসিনকে ওই জায়গায় একটি ব্যাগ হাতে বিস্ফোরণের অব্যবহিত আগে দেখা গিয়েছে। অন্য দিকে, দ্বিতীয় বিস্ফোরণটির ক্ষেত্রে আইএমের আর এক সদস্য, আজমগড়ের বাসিন্দা আসাদুল্লা আখতার ওরফে হাদ্দি একটি সাইকেলে বোমা বসিয়েছিল।
এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “দেশের পশ্চিম কিংবা দক্ষিণ প্রান্তে বিস্ফোরণ ঘটানোর উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে এবং সে সব কলকাতায় এসে নিয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু আমাদের মনে হচ্ছে, নিছক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নয়, আরডিএক্স কিংবা এমন ধরনের বিস্ফোরক, যেগুলো সাধারণ ভাবে দোকান থেকে কেনা সম্ভব নয়, সে সবই আনোয়ার মারফত পাচার হয়েছিল। কারণ, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জোগাড় কিংবা তৈরি করা সহজ। সে ক্ষেত্রে ওই বিস্ফোরক বাংলাদেশ থেকে আনার ঝুঁকি ও ঝক্কি না-নেওয়ারই কথা আইএমের।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.