নতুন করে আর ধস নামেনি। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন চন্দননগরের হাটখোলার ভারতচন্দ্র রোডের গঙ্গার ধার ঘেঁষা দু’টি আবাসনের বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধস মেরামতির কাজে ওই বাসিন্দারা নিজেরাই হাত লাগান। বালিভর্তি বস্তা ধসের গর্তে ফেলে ভরাট করার কাজ শুরু হয়। পরে তাঁরা পাশে পেয়ে যান পুরসভাকে। সেচ দফতর গঙ্গার ধার ঘেঁষে বাঁশের খাঁচা করে তার মধ্যে গোটা ইট ভর্তি করে পুঁতে দেয়। যাতে গঙ্গার জল বাড়লেও আবাসনের ধসে এসে না পৌঁছয়।
মঙ্গলবার গভীর রাতে সশব্দে প্রায় ৫০০ ফুট লম্বা এবং ১৫ ফুট গভীর ধস নামে ‘রিভার প্যালেস’ এবং ‘গ্যাঞ্জেস ভ্যালি’ নামে পাশাপাশি ওই দু’টি আবাসনের ভিতের গা ঘেঁষে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দু’টি আবাসনের অনেক বাসিন্দাই। ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‘গ্যাঞ্জেস ভ্যালি’র পাশে ‘রেড ক্রস সোসাইটি’র কার্যালয়ের একাংশও। ধসের কারণে আবাসন দু’টির নির্মাণ যথাযথ কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। |
মজবুত করা হচ্ছে গঙ্গার পাড়। |
বৃহস্পতিবার পুরসভার অনুরোধে ‘জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া’র তিন প্রতিনিধি দল ওই ধস কবলিত এলাকায় সরেজমিনে তদন্ত করে যান। নদীর চরিত্রের সঙ্গে ধসের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। ধস কবলিত এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁরা মাটিও সংগ্রহ করে নিয়ে যান। কারণ, আবাসন তৈরির সময় ঠিকমতো মাটি পরীক্ষা করা হয়েছিল কি না, তাও তাঁরা খতিয়ে দেখবেন বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
চন্দননগর পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, “ধসের হাত থেকে আবাসনগুলিকে বাঁচানোই আমাদের প্রথম কাজ। ধসের কারণ জানার জন্য সমস্ত বিশেষজ্ঞদের কাছে আবেদন করেছি। তাঁদের তদন্ত-রিপোর্টে ভুলত্রুটি ধরা পড়লে আবাসন দু’টির প্রোমোটারের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
হাটখোলায় গঙ্গার পাড়ের আবাসন। বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ধস মেরামতির কাজ। |
তবে, দু’টি আবাসনের অনেক বাসিন্দাই মনে করছেন, গঙ্গা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার জন্য পাড়ে ঘূর্ণি সৃষ্টি হচ্ছে। তা থেকে ধস নামতে পারে। এ নিয়ে তাঁরা পুরসভার কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন। পুরসভার পক্ষ থেকে হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দার কাছে বালি তোলা বন্ধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের দফতর থেকে এক প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসে।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, সব দিক খতিয়ে দেখে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। দুই জেলার যৌথ উদ্যোগে অবিলম্বে গঙ্গা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা বন্ধ করা হবে। |