|
|
|
|
বিজেপির সমালোচনায় আইনমন্ত্রী |
বিহারের মেয়ে ইশরাত, কেন্দ্রের পাশে জেডিইউ
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
ইশরাত জহান মামলায় বিজেপিকে উত্তর দিতে আটঘাট বেঁধেই ময়দানে নামল কেন্দ্র। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে বলা হয়, ইশরাত জহান মামলার তদন্ত-ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল হাইকোর্ট। গোটা তদন্তে নজরদারি চালিয়েছে আদালত। তা-ই সিবিআইয়ের উপর কেন্দ্র প্রভাব খাটিয়েছে, এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিব্বল বলেন, সিবিআইয়ের চার্জশিটে এ কথা পরিষ্কার যে রাজ্যের পুলিশ এবং আইবি-কে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছিল গুজরাত সরকার। তাদের সাহায্যেই চারটি নিরীহ তরুণ-তরুণীকে হত্যা করে সেটিকে সংঘর্ষের রূপ দেওয়ার সব রকম চেষ্টা করা হয়েছিল। এ দিন সিবিআইয়ের কৌঁসুলি জানান, এই ভুয়ো সংঘর্ষের ঘটনা যে দশ জন পুলিশকর্মীর সাহায্যে প্রকাশ্যে আনা সম্ভব হয়েছে, তাঁদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এফআইআর-এ তাঁদের নাম থাকলেও এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে তাঁদের। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইশরাতদের যখন আটক করে রাখা হয়েছিল তখন আমজাদ আলি রানা জেরায় স্বীকার করেছিল যে গুজরাতে কোনও একটু জনবহুল এলাকায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীই তাদের নিশানা ছিলেন, এ কথা
বলেনি তারা।
তবে কংগ্রেসের পাল্টা যুক্তির সামনে পড়েও নিজেদের অবস্থান থেকে এক চুল সরেনি বিজেপি। আজ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে অসমে গিয়ে বক্তৃতায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ বলেন, ২০০৪ সালের আগে-পরে বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীর ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই কেন্দ্র ইচ্ছাকৃতভাবে ইশরাত জহানের সংঘর্ষ মামলাটি নিয়ে তোলপাড় করছে। তিনি আরও বলেন, সরকার ইশরাতের পুরনো রেকর্ড প্রকাশ করুক। সে কোন জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিল তা ঘোষণা করা উচিত সরকারের। একই সুরে আজ কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদও। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে গুজরাতে যে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিদের উপস্থিতি ভাল মতোই টের পাওয়া যেত তার যথেষ্ট প্রমাণ আইবি-র হাতে ছিল। সিবিআইয়ের হাতে সে সব তথ্যপ্রমাণ তুলেও দেওয়া হয়। তার পরেও চার্জশিটে সে সব কথার কোনও উল্লেখ নেই কেন, এই প্রশ্নের জবাব দিক সিবিআই। তাঁর বক্তব্য, লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে যুক্ত জাভেদ শেখ, আমজাদ আলি রানা এবং জিশান জোহরের সঙ্গেই বা ইশরাত জহানের কী সম্পর্ক ছিল, সে কথারও উল্লেখ নেই সিবিআইয়ের চার্জশিটে।
রাজনাথ সিংহ যে ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন তার সমালোচনা করে আজ কপিল সিব্বল বলেন, “ওঁর উচিত নিজের দলের লোকেদের প্রশ্ন করা। নরেন্দ্র মোদীকে জিজ্ঞাসা করুন কী ভাবে এ সব ঘটনা ঘটিয়েছিলেন তিনি। গুজরাতে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে তার জন্য বরং রাজনাথজির চিন্তিত হওয়া উচিত।” বিজেপি-কে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, বিজেপি বরং বলুক, বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটে লালকৃষ্ণ আডবাণীর নাম বাদ গেল কী ভাবে? বিজেপি যতই বিরোধিতা করুক না কেন, ইশরাত জহান ভুয়ো সংঘর্ষ মামলা প্রসঙ্গে ইউপিএ সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এনডিএ-এর প্রাক্তন শরিক দল সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ)। ইশরাতের মামাাবড়ি পটনায়। সেখানেই ইশরাতের জন্ম। কয়েক বছর পর মুম্বই চলে যায় তাঁর পরিবার। সেই হিসেবে ইশরাত বিহারেরই মেয়ে। তাই তাঁর পরিবারকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে সরব হয়ে নীতীশের দল এসে দাঁড়িয়েছে ইউপিএ সরকারের পাশে। রাজ্যসভার সদস্য তথা জেডিইউ নেতা আলি আলি আনোয়ার বলেন, ইশরাত জহান হত্যাকাণ্ডে নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা প্রকাশ্যে আনতে দেশজুড়ে প্রচার চালাবেন তিনি।
|
পুরনো খবর: ইশরাত খুন ঠান্ডা মাথায়, চার্জশিটে অস্বস্তিতে বিজেপি |
|
|
|
|
|