জেএমএমের সঙ্গে জোট বেঁধে হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে বিকল্প সরকার গঠন করেই ঝাড়খণ্ডে সন্তুষ্ট থাকতে চায় না কংগ্রেস। তাদের আসল লক্ষ্য ওই রাজ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। তাই নতুন সরকারের অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি স্থির করার পরেই সরকার গঠনে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এমনিতে জেএমএম-কংগ্রেস জোট সরকার হওয়া নিয়ে আর সংশয় নেই। লালু প্রসাদের আরজেডি-ও এই জোটে যোগ দিচ্ছে। মন্ত্রিসভায় কোন দল ক’টি দফতর পাবে, তা-ও চূড়ান্ত। এমনকী আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস, জেএমএম ও আরজেডি-র মধ্যে আসন সমঝোতাও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু গোটা বিষয়টাই এখন আটকে রয়েছে জোট সরকারের অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির উপরে।
বস্তুত, ২০০০ সালে ঝাড়খণ্ড পৃথক রাজ্য হওয়ার পরে কংগ্রেস কোনও দিনই এ রাজ্যের সরকারে যোগ দেয়নি। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, প্রথম বার সরকারে যোগ দিয়েই যদি রাজ্যের মানুষকে বোঝানো যায় যে, আঞ্চলিক দলগুলির পরিবর্তে কংগ্রেসই সেখানে উন্নয়ন ও সুশাসন আনতে সক্ষম, তা হলে ভবিষ্যতে দলেরই রাজনৈতিক ভিত্তি শক্ত হবে। আর সেই কারণেই অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি এবং তা রূপায়ণের ক্ষেত্রে নজরদারি ব্যবস্থার দিকটি চূড়ান্ত করে নিতে চাইছে কংগ্রেস।
আজ সকালে হেমন্ত সোরেন দিল্লির আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দফতরে এসে ঝাড়খণ্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা বি কে হরিপ্রসাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেও তাঁর বৈঠক করার কথা ছিল। কিন্তু এই কর্মসূচির বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়াতেই শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি হয়নি। নতুন সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির খসড়ায় সনিয়া সিলমোহর বসানোর পরেই।
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য জোট-সরকারের ন্যূনতম কর্মসূচিতে মূলত সামাজিক উন্নয়ন, মাওবাদী সমস্যার মতো দিকগুলিতে গুরুত্ব দিতে চান সনিয়া-রাহুল। দলের এক নেতার কথায়, “আমরা চাই ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বিধানসভা ভোটে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা যেন রাজ্যে পাঁচ বছরের সরকার দিতে পারে। কংগ্রেসের আসন সংখ্যা বাড়লে তবেই সেটা সম্ভব।” ভবিষ্যতে শিবু সোরেনকে নিয়ে যাতে ফের কোনও অস্বস্তিতে পড়তে না হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে চাইছে কংগ্রেস। জেডিইউ বেরিয়ে যাওয়ার পরে এনডিএ যখন আরও সঙ্কুচিত, তখন জেএমএম-কে ফের ছাতার তলায় এনে নিজেদের সাফল্যও দাবি করছে তারা। মজার কথা, বিহারে বিবদমান আরজেডি এবং জেডিইউ দু’দলই হেমন্তর সরকারের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আরজেডি সরকারে যোগ দিচ্ছে। বাইরে থেকে সমর্থন দেবে নীতীশ কুমারের জেডিইউ।
|