আগরতলায় ভারত-বাংলাদেশ আলোচনা
জেলাশাসক পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে আশাবাদী দু’দেশই
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে জেলাশাসক পর্যায়ের দু’দিনের বৈঠক নিয়ে আশাবাদী দু’পক্ষই।
আজ দু’দেশের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবেড়িয়ার জেলাশাসক নূর মহম্মদ মজুমদার। ৯ বছর পর ফের দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠক হল। ওই আলোচনায় ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক কিরণ গিত্যে। তিনি বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে দু’দেশের মধ্যে এই বৈঠক হয়েছে।”
২০০৪ সালে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, কার্যত সেই বিষয়গুলিই গত দু’দিনের বৈঠকে নতুন করে উঠে এসেছে। সীমান্তে বেড়া নির্মাণ, ভাঙা পিলার মেরামতি, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, পুলিশি মামলায় অভিযুক্তদের হস্তান্তর, গবাদি পশুর চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, নারী-পাচার রোধ, মাদকদ্রব্যের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, অপরাধ দমনে বেআইনি সিমকার্ড নিয়ন্ত্রণ, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ-সহ অন্য কয়েকটি বিষয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সীমান্তবর্তী এলাকায় পাক বাহিনীর হানায় নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল অনুসন্ধানের বিষয়টিও।
পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা শাসক কিরণ গিত্যে বলেন, ‘‘দ্বিপাক্ষিক কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এ রাজ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল অনুসন্ধানের বিষয়টি নিয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’’ রাজ্য সরকারের তরফে এ বিষয়ে তাঁদের সব রকম সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে বলে জেলাশাসক জানান।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তবর্তী ত্রিপুরায় মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সব মুক্তিযোদ্ধা পাক হানায় নিহত হয়েছেন, বা যাঁরা এ রাজ্যে থাকাকালীন পরবর্তীকালে মারা গিয়েছেন, তাঁদের ত্রিপুরায় বিভিন্ন স্থানে সমাহিত করা হয়েছিল। তাঁদের সমাধিস্থলগুলিকে যথোপযুক্ত সম্মান দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের---এ কথা জানান নূর মহম্মদ মজুমদার।
এ নিয়ে জেলাশাসক কিরণ গিত্যে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সরকার এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে অনেকদিন আগেই অনুরোধ করেছিল। তারপর কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধার নামের একটি তালিকা রাজ্য সরকারের কাছে এসে পৌঁছায়।’’ কিন্তু সমাধিস্থলগুলি খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি যে যথেষ্ট কঠিন, তা-ও স্বীকার করেন দু’দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরাই। মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা যাঁদের আছে, যাঁরা এখন প্রবীণ, এমন ব্যক্তিদের স্মৃতিচারণার উপরেই তাই নির্ভর করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনুসন্ধানকারী দলের ভূমিকাই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে, সে কথা বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা স্বীকার করেছেন বলে কিরণ গিত্যে জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘‘শোনা যায়, আগরতলায় রামনগর এবং গোলচক্কর এলাকায় এ রকম বহু সমাধিস্থল রয়েছে। কিন্তু চিহ্নিতকরণের কাজটা ওঁদেরই করতে হবে।’’ কয়েক মাস পরে বাংলাদেশ থেকে একটি অনুসন্ধানকারী দল ত্রিপুরায় আসবে।
যৌথ বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানের বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ দেশ থেকে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের চোরাচালান বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল। তাঁরা অভিযোগ তোলেন, আগরতলার কাটাখাল এবং কালাপানিয়ার ‘দূষিত জল’ সারা বছর ধরেই বাংলাদেশে সমস্যা তৈরি করছে। বর্ষায় সীমান্ত সংলগ্ন ব্রাহ্মণবেড়িয়ার বহু এলাকায় এই ‘দূষিত জল’ বন্যার সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। বিষয়টি পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা প্রশাসনের তরফে আগরতলা পুর-কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। ২-৩ বছরের মধ্যে কাটাখাল এবং কালাপানিয়ার দূষিত জলের সমস্যা হ্রাস পাবে বলে কিরণ গিত্যে আশা প্রকাশ করেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.