বিক্ষোভ-প্রতিরোধ, হিংসা, মৃত্যু, জখমের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে অবশেষে পস্কোর ইস্পাত কারখানা তৈরির জন্য প্রথম দফার জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ করল ওড়িশা সরকার।
এ বার পুরো জমি হাতে পেলেই পারাদীপের কাছে জগৎসিংহপুরে প্রস্তাবিত প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিতে পারবে দক্ষিণ কোরীয় ইস্পাত বহুজাতিকটি। তবে ওড়িশা সরকার চায়, তার আগে ওই এলাকার উন্নয়নে হাত দিক পস্কো। এমনকী সে ক্ষেত্রে রাজ্যের সঙ্গে প্রকল্পের চুক্তি নবীকরণের আগেই দ্রুত সংস্থাকে সামাজিক দায়বদ্ধতা সংক্রান্ত চূড়ান্ত পরিকল্পনা জমাও দিতে বলেছে রাজ্য শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম। যার মধ্যে জমিহারাদের জন্য আবাসন তৈরি, রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, গাছ লাগানো ও পাঁচিল দিয়ে ঘিরে অঞ্চলের নিরাপত্তা বাড়ানো-সহ বাসিন্দাদের সার্বিক উন্নয়নের মতো বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।
বৃহস্পতিবার জগৎসিংহপুরের জেলা কলেক্টর এস কে মল্লিক বলেন, “প্রথম পর্যায়ে বছরে ৮০ লক্ষ টন ইস্পাত উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন কারখানা গড়তে পস্কো চেয়েছিল ২,৭০০ একর জমি। পুরোটাই আমরা অধিগ্রহণ করেছি। ২,০০০ একর রাজ্য আগেই হাতে নিয়েছিল। পরের পর্যায়ে বাকি ৭০০ একর নেওয়ার কাজ এ দিনই শেষ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।”
তবে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া যে একাংশের চরম বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে, তা এ দিন স্বীকার করেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ক্ষতিপূরণ হিসাবে ইতিমধ্যেই জমিদাতাদের মধ্যে ৬.৭২ কোটি টাকা বণ্টন করেছে সরকার। অনিচ্ছুকদের থেকে জোর করে জমি নেওয়ার অভিযোগও উড়িয়ে দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২০০৫-এ ওড়িশা সরকারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে মোট ১ কোটি ২০ লক্ষ টন বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতার ইস্পাত কারখানা গড়তে প্রথমে ৪,০০৪ একর জমি চেয়েছিল পস্কো। কিন্তু জমি পাওয়া নিয়ে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়ার পর তারা প্রথম দফায় চাহিদা ২,৭০০ একরে নামিয়ে আনে। সেটাই শেষ হল এ দিন। এবং সেই সঙ্গে ওড়িশায় পস্কোর ইস্পাত কারখানা তৈরির পথে আপাতত বাধা কাটল।
|