মামলা শুরুর পরে দু’মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুরের ‘অ্যাক্সেস মাল্টি ডেভলপার্স লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাত্যায়ণ ভট্টাচার্য ও আরও দুই অধিকর্তা সরস্বতী বসু ও সত্যব্রত বসুকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে জমি না দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন অন্ডালের এক বাসিন্দা। ১৯ জুন আদালত ওই তিন অভিযুক্তকে ৪ জুলাইয়ের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় আদালতের নির্দেশে দ্রুত অভিযুক্তদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানালেন আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব। |
পুলিশ জানায়, ২৯ এপ্রিল দুর্গাপুর আদালতে ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাত্যায়ন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে জমি না দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন অন্ডালের ময়রা গ্রামের বাসিন্দা অজিতকুমার দাস। বিচারক পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরেই সংস্থার অফিসে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযানের আগেই পালিয়ে যান কাত্যায়নবাবু ও সংস্থার আরও দুই অধিকর্তা সরস্বতী বসু এবং সত্যব্রত বসু। সংস্থার দুই মহিলা কর্মী-সহ ১০ জন কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তা থেকে পুলিশ জানতে পারে, ওই সংস্থা জমি-বাড়ি কেনাবেচা ছাড়াও নানা ব্যবসা করত। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা মিলে মোট ২৪ টি অফিস ছিল সংস্থার। সারা দেশে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সংস্থার ৪৯টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরও হদিশ পায় পুলিশ। সেগুলি সিল করে দেওয়া হয়।
মামলা শুরুর পরে কেটে গিয়েছে নয় সপ্তাহ। ইতিমধ্যেই টাকা দিয়ে জমি না পাওয়ার একাধিক অভিযোগ দায়ের হয় ওই সংস্থার বিরুদ্ধে। গয়না কেনার প্রকল্পে টাকা দিয়ে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগও হয়। কিন্তু প্রধান তিন অভিযুক্তকে পুলিশ এখনও ধরতে না পারায় ইতিমধ্যেই পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে পুলিশের দাবি, কাত্যায়ণবাবু-সহ ওই তিন অভিযুক্ত দেশের মধ্যেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তাতেও সফল না হয়ে ওই তিন জনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল পুলিশ। ১৯ জুন বিচারক ৪ জুলাইয়ের মধ্যে তিন জনকে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। মাইকে করে তা ঘোষণাও করা হয়। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও ধরা দেননি তাঁরা।
|