এখনও ধরা পড়েননি দুর্গাপুরের ‘অ্যাক্সেস মাল্টি ডেভলপার্স লিমিটেড’-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাত্যায়ন ভট্টাচার্য। তবে কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সংস্থার নানা নথির সঙ্গে পুরসভার কিছু সার্ভে ফর্মও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ওই সংস্থার দুর্গাপুরের একাধিক কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। উদ্ধার হয় বেশ কিছু জরুরি নথিও। অন্ডালের ময়রা গ্রামের অজিত কুমার দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। বুধবার সংস্থার ধৃত ৮ কর্মী-আধিকারিককে আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান।
এ দিন অভিযান চালানোর সময়ে সংস্থার একটি কার্যালয় থেকে তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার বেশ কিছু সার্ভে ফর্ম মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরের রাজনৈতিক মহলে। সিপিএমের দাবি, এ থেকে তৃণমূলের সঙ্গে ওই সংস্থার যোগসাজশ আরও স্পষ্টও হয়ে গেল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, পুরসভার সম্পত্তি কর নির্ধারণের কাজে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা চালানোর জন্য ওই ফর্ম ছাপা হয়। অধিকাংশই ইতিমধ্যে ব্যবহৃত। কিন্তু একটি জমি কেনা-বেচার কাজে যুুক্ত সংস্থার ঘরে কী ভাবে এল পুরসভার এই ফর্ম? পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, টেন্ডার না ডেকেই একটি বেসরকারি সংস্থাকে পুরসভা এই কাজের দায়িত্ব দেয়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে সেই সংস্থার অস্থায়ী কর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা চালানোর কাজ করছেন। অ্যাক্সেসের সঙ্গে এই বেসরকারি সংস্থার কোনও যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র থেকে খবর, পুরসভার কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাটি আসলে বকলমে ওই অ্যাক্সেসেরই একটি শাখা।
এ নিয়ে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “সাধারণত, ওয়েস্ট বেঙ্গল ভ্যালুয়েশন বোর্ড মারফত এই সমীক্ষা করা হয়। বছর ৫-৬ আগে বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরসভার পক্ষ থেকে এই সমীক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সমীক্ষা ফর্ম যদি কোনও বিতর্কিত সংস্থার ঘরে পাওয়া যায় তা খুবই উদ্বেগের।” সিপিএমের অভিযোগ, বর্তমান তৃণমূল মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্য তৃণমূল নেতাদের ওই সংস্থার কর্তা ব্যক্তিদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে। এমনকী পুরসভা ভোটের আগে একতরফা ভাবে ওই সংস্থার চ্যানেল তৃণমূলের পক্ষে প্রচার করেছিল বলেও তাঁদের অভিযোগ। তবে মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “টেন্ডার থেকে একটি সংস্থাকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে কীভাবে অ্যাক্সেসের অফিসে ওই ফর্ম চলে গেল তা জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” |