১৫ দিনে চার্জশিট পেশের কী হল, প্রশ্ন কামদুনির
বারাসতের কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে ২০ দিন। কেন এখনও চার্জশিট দিতে পারল না সিআইডি? প্রশ্ন তুললেন কামদুনির বাসিন্দারা। বস্তুত, দুষ্কৃতীদের রক্তচক্ষু ও শাসক দলের শাসানি সাঁড়াশি ত্রাসের বাতাবরণেই বুধবার কামদুনির বিভিন্ন মোড়ে গ্রামবাসীদের জটলায় এটাই ছিল প্রধান আলোচ্য।
ঘটনার বেশ কয়েক দিন পরে মুখ্যমন্ত্রী কামদুনিতে যান। ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিয়ে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে এক মাসেই বিচার শেষ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, দোষীদের ফাঁসিই চাইবেন তাঁরা। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, ঘটনা ঘটেছে ৭ জুন। এখনও চার্জশিটের নামগন্ধ নেই। তা হলে কীসের ভিত্তিতে ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, সত্যিই কি দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের চরম শাস্তির ব্যবস্থা হবে?
এক গ্রামবাসী বলেন, “দোষীদের দ্রুত শাস্তি দেওয়ার আর্জি নিয়েই তো আমরা সে-দিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী শুনলেন না। শুনলে হয়তো অন্য রকম কিছু হত।” গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, মামলায় দেরি হতে থাকলে শেষ পর্যন্ত যথাযথ বিচার মিলবে তো? দোষীদের সকলে শাস্তি পাবে তো? এক গ্রামবাসীর ক্ষোভ, “অনেকেই তো আসছেন আমাদের সহানুভূতি জানাতে। কিন্তু চার্জশিট কবে দেওয়া হবে, সেই প্রশ্ন তুললে কেউই আমাদের কোনও আলোর দিশা দেখাতে পারছেন না।”

চলছে তল্লাশি। কামদুনির রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র
এ দিন সকাল থেকে কোনও মিছিল না-হলেও বেলা ৩টে নাগাদ নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি বা এবিটিএ-এর ১০ সদস্যের একটি দল কামদুনিতে আসে। ওই দলের প্রতিনিধিরা প্রথমেই কামদুনি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের খোঁজ করেন। কিন্তু তিনি তত ক্ষণে বাড়ি চলে গিয়েছেন। প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে গ্রামের মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন ওই প্রধান শিক্ষক। তাই তাঁকে শো-কজ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শো-কজ নোটিস প্রত্যাহারের দাবিতে গ্রামবাসীরা মিছিল করেছেন।
এবিটিএ-র প্রতিনিধিরা জানান, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের নিয়ে শনিবার বেলা ৩টেয় মিছিল করা হবে। প্রদীপবাবুকে ওই মিছিলে যোগ দিতে বলেন তাঁরা। প্রদীপবাবুকে শো-কজ নোটিস দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের নিন্দাও করেন প্রতিনিধিরা। এবিটিএ-এর দলটি কামদুনির দুই প্রতিবাদী তরুণী টুম্পা কয়াল ও মৌসুমী কয়ালের বাড়িতেও যায়। দলের প্রতিনিধিরা দুই তরুণীকে অভয় দেন।
রাজারহাট নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত এ দিন বিকেলে ফের হাজির হন কামদুনিতে। দু’টি গাড়িতে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে এলেও আগের বারের মতো অবশ্য আর কোনও খিচুড়ি-ভোজের আয়োজন করেননি তিনি। গ্রামের বাঁশের মাচায় কিছু ক্ষণ বসেন তাঁরা। তার পরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গ্রামের কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে চলে যান। এ দিন কামদুনিতে আসেন ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামের পুলিশ ক্যাম্প ঘুরে দেখেন। পাঁচিল ঘেরা যে-জায়গায় ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটেছিল, সেখানেও যান তিনি।
এ দিন সকাল থেকেই কামদুনির বিভিন্ন মোড় এবং গ্রামের রাস্তায় প্রচুর পুলিশকে টহল দিতে দেখা যায়। বাইরের যে-সব লোক গ্রামে ঢোকেন, তাঁরা কেন আসছেন, সেই বিষয়েও খোঁজখবর করে টহলদার পুলিশ। অনেকের ব্যাগ তল্লাশি করা হয়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.