প্রেসিডেন্সিকে ‘সেন্টার অফ এক্সেলেন্স’ বা উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং সেখানে বিশ্বমানের পঠনপাঠনের ব্যবস্থা চালু করার জন্য মেন্টর গ্রুপ গড়া হয়েছে আগেই। এ বার শুরু হল সেখানকার বিভাগ ধরে ধরে উপদেষ্টা কমিটি গড়ার পালা। সেই উদ্যোগের সূচনা হল অর্থনীতি বিভাগের জন্য আলাদা উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে। ওই প্রতিষ্ঠানে এমন কমিটি এই প্রথম বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
প্রেসিডেন্সির উপাচার্য মালবিকা সরকার বুধবার জানান, অর্থনীতি বিভাগের পঠনপাঠনকে বিশ্বমানে উন্নীত করার উদ্দেশ্যেই চার সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গড়া হয়েছে। ওই কমিটিতে থাকছেন আইআইএমের প্রাক্তন অধিকর্তা অমিতাভ বসু, আইআইএমের শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ অনুপ সিংহ, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট (আইএসআই)-এর প্রাক্তন শিক্ষক দীপঙ্কর কুণ্ডু এবং অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দাশগুপ্ত। ভবিষ্যতে একই উদ্দেশ্যে অন্যান্য বিভাগেও এই ধরনের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান উপাচার্য।
প্রেসিডেন্সির অর্থনীতি বিভাগের সুনাম দীর্ঘদিনের। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী। অর্থনীতির আরও অনেক প্রথিতযশা শিক্ষক ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু সেই বিভাগে এখন শিক্ষক আছেন মাত্র চার জন। আরও অভিজ্ঞ শিক্ষক দরকার। তাই বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়া হয়েছে। যে-সব শিক্ষক এবং অর্থনীতিবিদ ওই কমিটিতে আছেন, তাঁরা মূলত পাঠ্যক্রম রূপায়ণ, পঠনপাঠন ইত্যাদি বিষয়ে সহায়তা করবেন। তাঁরা যাতে ক্লাসও নেন, তাঁদের সেই অনুরোধও জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ।
পঠনপাঠনের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য প্রেসিডেন্সি এর আগেই প্রাক্তনীদের কাছে আবেদন জানিয়েছে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে অনেক প্রাক্তনী বিভিন্ন বিভাগে ক্লাসও নিচ্ছেন। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে মালবিকাদেবীর বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন্টর গ্রুপের সদস্যেরাও যাতে ক্লাস নেন, তার জন্য তাঁদের অনুরোধ করা হবে। ব্রাত্যবাবুর বক্তব্য, মেন্টর গ্রুপের সদস্যেরা খ্যাতিমান শিক্ষক। তাঁরা ক্লাস নিলে পঠনপাঠনের মান উন্নত হবে। পড়ানোর প্রস্তাবকে ইতিমধ্যেই স্বাগত জানিয়েছেন মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান সুগত বসু। তিনি বলেছেন, “সানন্দে ক্লাস নেব। অমর্ত্য সেন আর আমি হার্ভার্ডে যৌথ ভাবে কিছু ক্লাস নিই। প্রযুক্তির সাহায্যে সেই সব ক্লাস প্রেসিডেন্সিতে দেখানোর চেষ্টা হবে।”
সদ্য গড়া উপদেষ্টা কমিটির সদস্যেরা পঠনপাঠনের ব্যাপারে কী বলছেন? ওই কমিটির অন্যতম সদস্য আইআইএমের শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ অনুপ সিংহ এ দিন বলেন, “কমিটির সদস্য হওয়ার প্রস্তাবে সম্মত জানিয়ে দিয়েছি। তবে ঠিক কী ভাবে ওই বিভাগকে সাহায্য করতে হবে, তা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে দেখতে হবে, ওই বিভাগে কী কী খামতি রয়েছে।” তিনি জানান, প্রয়োজনে ওই বিভাগের ক্লাস নিতে ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। উপদেষ্টা কমিটি এ ব্যাপারে যে-সিদ্ধান্ত নেবে, তা মেনে চলা হবে।
|