চিত্তরঞ্জন রোড
পরপর দুর্ঘটনা, তবু হুঁশ নেই প্রশাসনের
চারজনের মৃত্যুতেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। দুর্ঘটনার পনেরো দিন পরেও বেহাল পড়ে রয়েছে আসানসোলের চিত্তরঞ্জন রোড। প্রায় প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগে রয়েছে। ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন মানুষ। যদিও দুর্ঘটনার চার দিনের মাথায় রাস্তাটি অস্থায়ী ভাবে সারানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন সালানপুরের বিডিও ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা।
গত ১১ জুন চিত্তরঞ্জন রোডের দেন্দুয়া মোড়ের কাছে পথ দুর্ঘটনায় মারা যান একটি অটোর চার যাত্রী। তাঁদের মধ্যে তিনজনই ছিলেন এক পরিবারের। রাস্তা খারাপ হওয়ায় উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরি বেসামাল হয়ে অটোটির উপর আছড়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই চারজন। অটোর চালক-সহ আরও দু’জন গুরুতর আহত হন। ঘটনার পরেই উত্তেজিত স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা সংস্কারের দাবিতে প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ করেন। পুলিশ কর্তারাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন নি। শেষে সালানপুরের বিডিও প্রশান্ত মাইতি ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে চারদিনের মাথায় রাস্তাটি অস্থায়ী ভাবে সারানোর আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। পঞ্চায়েত ভোট মিটে গেলে রাস্তাটি স্থায়ী ভাবে সংস্কার করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার পনেরো দিন পেরিয়ে গেলেও রাস্তার কাজে হাত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। উপরন্তু, রাস্তাটি সারনো নিয়েও ব্লক প্রশাসন ও পূর্ত দফতরের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিডিওর কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “পূর্ত দফতর আমাকে কথা দিয়েছিল কাজ শুরু করবে। তাও কেন শুরু করেনি জানিনা।” বিষয়টি নিয়ে তিনি পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন।

দেন্দুয়া মোড়ে এমনই হাল রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।
ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, ওই রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে এর আগেও এলাকাবাসীরা ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। স্মারকলিপিও দিয়েছেন। পরপর বিক্ষোভ হওয়ায় এ বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ত দফতরের আসানসোল শাখার আধিকারিকদের সঙ্গে ব্লক প্রশাসনের বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়, এপ্রিল মাসের মধ্যে ঠিকাদারী সংস্থাগুলির কাছে দরপত্র ডাকা হবে। ২০ এপ্রিলের মধ্যে কাজে হাত পড়বে, জুন মাসের মধ্যে রাস্তাটি পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে। পুরো প্রক্রিয়াটি দেখভালের জন্য দফতরের একজন সহকারী বাস্তুকারকে দায়িত্বও দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, প্রস্তুতিই সার, কাজ একচুলও এগোয়নি। বরং প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে।
যোগাযোগ করা হয় পূর্ত দফতরের সঙ্গেও। তাতে জানা গিয়েছে, ওই রাস্তাটির যাবতীয় দেখভাল করে পূর্ত দফতরের ২ নম্বর বিভাগ। বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও কেন রাস্তা তৈরি হয়নি তা জানতে চাওয়া হলে ওই দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র প্রণব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “১৮ কোটি টাকার রাস্তা এভাবে একদিনে বানানো যায় না। যারা শুধু আমাদের কাঁধে দায় চাপাচ্ছেন তাঁরা নিজেরা এই রাস্তা বানাবার দায়িত্ব নিলেই তো পারতেন।” কিন্তু অন্য কেউ এই এই রাস্তা বানাতে যাবেন কেন? এই রাস্তা বানাবার দায়িত্ব তো পূর্ত দফতরেরই? প্রণববাবু জানান, রাস্তা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দরপত্র ডেকে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবে থেকে কাজ শুরু করা হবে তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি প্রণববাবু।
কিন্তু আশ্বাসে আর ভরসা রাখতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, তাহলে কী আরও কয়েকজনের প্রাণ যাওয়ার পরেই রাস্তা সারানোর কাজে হাত দেবে পূর্ত দফতর? এলাকাবাসীর মতো এর উত্তর অজানা পূর্ত দফতরেরও।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.