অটো ও মিনিট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হল চার জনের। মঙ্গলবার সকালে সালানপুরের দেন্দুয়া মোড়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের মধ্যে তিন জন একই পরিবারের সদস্য। মৃত এক কিশোরের পরিচয় জানা যায়নি। বেহাল রাস্তার জন্যই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে, এই অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী দেহ আটকে পথ অবরোধ করেন। প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে পুলিশ-প্রশাসন রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। মিনিট্রাকটি আটক করেছে পুলিশ। সেটির চালক ও খালাসি পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ যাত্রীবোঝাই একটি অটো চিত্তরঞ্জনের দিকে যাচ্ছিল। দেন্দুয়া মোড়ের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা ধানের বস্তা বোঝাই মিনিট্রাকটি সামনের একটি গাড়িকে অতিক্রম করার সময়ে প্রথমে যাত্রীবোঝাই অটোর ডান দিকে ধাক্কা মারে। |
দুর্ঘটনাগ্রস্ত মিনিট্রাক। |
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খারাপ রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে লরিটি অটোর উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারাই উদ্ধারকাজে হাত লাগান। মিনিট্রাকটিকে কোনও রকমে সরিয়ে অটোর যাত্রীদের উদ্ধার করেন তাঁরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় লীলা মণ্ডল (৪৫) ও তাঁর মেয়ে লক্ষ্মী মণ্ডলের (২৭)। লক্ষ্মীদেবীর পাঁচ বছরের ছেলে মন্নু ও অজ্ঞাতপরিচয় এক বছর বারোর কিশোরকে গুরুতর জখম অবস্থায় রূপনারায়ণপুরে পিঠাইকেয়ারি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছু ক্ষণ পরে চিকিৎসকেরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। অটোর চালক ও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মোটরবাইক আরোহী এই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন।
লীলাদেবীর বাড়ি কুলটির নিয়ামতপুরে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। লক্ষ্মীদেবীর স্বামী কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, দু’দিন আগে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁর মেয়ে লক্ষ্মী ও দুই নাতি এসেছিল। মঙ্গলবার লীলাদেবী মেয়ে ও ছোট নাতিকে নিয়ে সালানপুরের বনজেমাহারিতে মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝপথে ঘটে গেল দুর্ঘটনা। |
দুর্ঘটনার পরেই মৃতদেহ আটকে ওই মোড়ে চিত্তরঞ্জন রোড অবরোধ শুরু করেন এলাকাবাসী। মিনিট্রাকটি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সালানপুর থানার পুলিশ। ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশের একটি জিপও ভাঙচুর করে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, শুধু এ দিন নয়, বেহাল রাস্তার জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তা কবে সারানো হবে, ঘটনাস্থলে এসে প্রশাসনিক কর্তারা নির্দিষ্ট ভাবে তা যতক্ষণ না জানাচ্ছেন, ততক্ষণ অবরোধ চলবে বলে দাবি করে জনতা। আসানসোল-দুর্গাপুরের এসিপি (পশ্চিম) তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী ও র্যাফ ঘটনাস্থলে গেলেও অবরোধ চলতে থাকে। বিকাল সাড়ে ৩টে নাগাদ সালানপুরের বিডিও প্রশান্ত মাইতি ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা সারানোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। দেহ উদ্ধার করে আসানসোল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
|