কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানকারী নান্টু পালের কাউন্সিলর পদ খারিজের উপরে স্থগিতাদেশ দিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ পুর দফতরের যুগ্ম সচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকার তরফে ওই আদেশ দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ তথা জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার নান্টুবাবুর কাউন্সিলর পদ খারিজের নির্দেশ দেন। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন নান্টুবাবু।
এই স্থগিতাদেশের ফলে ফের শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেস পরিচালিত বোর্ড সমস্যায় পড়েছে। কারণ, নান্টুবাবুর কাউন্সিলর পদ খারিজ হওয়ার পরে তড়িঘড়ি ফের বাজেট বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেন পুর কর্তৃপক্ষ। আগামী ২ জুলাই ওই বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ, নান্টুবাবু কাউন্সিলর পদ বহাল হওয়ার অর্থ তিনি চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন বলে তৃণমূলের দাবি। যদিও পুরসভার মেয়র তথা কংগ্রেস নেত্রী গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “এটা রাজনৈতিক অভিসন্ধি ছাড়া আর কিছু নয়। এভাবে কোন স্থগিতাদেশ হয় কি না তা জানা নেই।”
ফের কাউন্সিলর পদে থাকছেন নান্টু পাল, চেয়ারম্যান হিসেবেও আছেন তিনি। আপাতত তাঁদের নৈতিক জয় হয়েছে বলে মনে করছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “নান্টুবাবু যা করছেন, তা আইন মেনে করছেন। তাই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ এসেছে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, কংগ্রেস চাইছে বামেদের সঙ্গে নিয়ে ৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে।” তবে এই রায়ে কিছুটা হতাশ কংগ্রেস শিবির। পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা নিয়ে কোন কথাই বলতে চান নি মেয়র। সবটাই আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করেই পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান গঙ্গোত্রী দেবী। দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের মহাসচিব কৃষ্ণ পাল বলেন, “বাজেট বৈঠক ডাকার অধিকার একমাত্র নান্টুবাবুর রয়েছে। যে মিটিং ডাকা হয়েছে তা অবৈধ।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “বর্তমান পুরসভায় একটাই বৈধ পদ রয়েছে সেটা চেয়ারম্যানের। বাকি গুলি জোর করে আকড়ে রয়েছেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররা।”
সোমবার বাজেট মিটিং এর চিঠি পাঠিয়েছিলেন ডেপুটি মেয়র তথা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা সবিতা অগ্রবাল। কিন্তু এভাবে বাজেট মিটিং ডাকা যায় কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিন তৃণমূল। আর এদিন রায়ের পর নান্টু পাল বলেন, “আমি যে হেতু দায়িত্বে রয়েছি তাই এ ভাবে অন্য কেউ বাজেট ডাকতে পারেন না। আইনত ২ জুলাই বাজেট হতে পারে না।” তবে পুরসভার এই জটিল পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে বামেরা। বিষয়টি অনৈতিক বলে অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “যেখানে নান্টু পাল নিজে স্বীকার করছেন, তিনি তৃণমূলে রয়েছেন, সেখানে আবার আবেদন করার কি দরকার ছিল?” পাশাপাশি, তাঁর বক্তব্য, “দিনের পর দিন উন্নয়ন বন্ধ রেখে কংগ্রেস-তৃণমূলের কোন্দল দেখে মানুষ বীতশ্রদ্ধ। নতুন করে নির্বাচন হোক।”
|