যতটা স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা, ততটাই অস্বচ্ছতা দেখা যাচ্ছে আইসিসি মিটিং নিয়ে ভারতীয় কর্তাদের গেমপ্ল্যানে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা নাটকের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার একটা আপসসূত্রে এসেছে ভারতীয় বোর্ড। যাতে সব পক্ষকেই খুশি করা যায়। ঠিক হয়েছে, ফাইনালের দিন, ২৩ জুন, চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারদের বৈঠকে পাঠানো হবে ভারতীয় বোর্ডের সচিব সঞ্জয় পাটিলকে। কপিলদের বিশ্বকাপ জয়ের ৩০ বছর পূর্তির দিন, অর্থাৎ ২৫ জুন জগমোহন ডালমিয়া যাবেন আইসিসি-র বার্ষিক সম্মেলনে এবং ফিনান্স কমিটির অতি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পাঠানো হবে শ্রীনিবাসনকে। শোনা যাচ্ছে এই সূত্র তৈরি করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের বর্তমান চাণক্য অরুণ জেটলি।
কার্ডিফে এ দিন এক বোর্ডকর্তা বলছিলেন, “আপনারা শ্রীনিবাসনের বৈঠকে থাকা নিয়ে এত জলঘোলা করছেন কেন? শ্রীনিবাসন তো নিজেই ফিনান্স কমিটির সদস্য। উনি বোর্ডের প্রতিনিধি হিসাবে নন, ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে বৈঠকে থাকছেন।”
তবে ললিত মোদীর মতো উগ্রপন্থীরা কেউ কেউ পরিষ্কার বলছেন, “আগেই তো বলেছিলাম, শ্রীনিবাসনকে আইসিসি বৈঠকে যোগ দেওয়া থেকে আটকানো যাবে না। বাকিদের সেই সাহসই নেই।” বোর্ডের অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্ল আবার বলছিলেন, “ডালমিয়াজি নিজেই সিদ্ধান্ত নিন না আইসিসি-র বৈঠকে কে যাবে।” কিন্তু ঘটনা হল, ডালমিয়ার হাতে এই মুহূর্তে এত ক্ষমতা নেই যে বৈঠকে কে যাবেন, তা ঠিক করতে পারেন। তাই বল ঠেলে দেওয়া হয়েছিল জেটলির কোর্টে।
এ দিন সেমিফাইনাল দেখতে মাঠে হাজির ছিলেন জেটলি, শুক্ল, নিরঞ্জন শাহের মতো বোর্ডকর্তারা। হঠাৎ রটে যায়, শ্রীনিবাসনও খেলা দেখতে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে ফটোগ্রাফার এবং টিভি ক্যামেরা ছোটে শ্রীনি-র খোঁজে আইসিসি বক্সে। তাঁকে অবশ্য পাওয়া যায়নি।
জেটলি এখন ইংল্যান্ডে। ফাইনালের দিনও থাকবেন। তা হলে কেন তিনি নিজে যাচ্ছেন না আইসিসি-র বৈঠকে? ব্যক্তিগত কাজে ইংল্যান্ডে আসা জেটলি আইসিসি বৈঠকে যেতে রাজি নন। আনন্দবাজার প্রতিনিধির সামনে কার্ডিফ প্যাভিলিয়ন লাউঞ্জে রাজীব শুক্ল এ দিন নিরঞ্জনকেও অনুরোধ করেছিলেন আইসিসি-র বৈঠকে থাকতে। কিন্তু প্রাক্তন বোর্ড সচিব রাজি হননি। নিরঞ্জন বলেন, “সঞ্জয় পাটিল যখন আছে, তখন ওরই যাওয়া উচিত।”
ভারতীয় বোর্ডের একটা অংশ কিন্তু এখনও শ্রীনিবাসনের আইসিসি বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করার ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছে না। তাদের বক্তব্য, যেখানে ডিআরএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় উঠবে, যেখানে বাকি বিশ্বকে বোঝানো প্রয়োজন যে, ভারতীয় ক্রিকেটের সত্যিই শোধন পর্ব শুরু হয়েছে, সেখানে শ্রীনিবাসন কেন বোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করবেন?
কিন্তু ঘটনা হল, বাইশ গজে যেমন অ্যাডভান্টেজ ধোনি, সে রকমই মাঠের বাইরে অ্যাডভান্টেজ শ্রীনিবাসন। যদি তিনি নিজেকে সরিয়ে না নেন, তা হলে সেই শ্রীনিকেই আইসিসি বৈঠকে দেখা যাবে। ডালমিয়া শুক্রবার রাতে লন্ডনগামী বিমান ধরছেন। আর নিজে থেকে শ্রীনিবাসনের সরে যাওয়ার সম্ভাবনা? অত্যন্ত ক্ষীণ।
|