ত্রাণশিবিরে পৌঁছেও কেউ কেঁদে চলেছেন, কেউ স্তব্ধ
রে ফেরা বাকি। কিন্তু ত্রাণশিবিরে পৌঁছেও আতঙ্ক কাটছে না পুণ্যার্থী-পর্যটকদের। আকাশভাঙা বর্ষণে বিধ্বস্ত হিমাচল ও উত্তরাখণ্ড থেকে বাস-গাড়ি-কপ্টারে নামিয়ে আনা হচ্ছে তাঁদের। হৃষীকেশে পৌঁছে তাঁদের কারও চোখে অবিরল জল। কেউ বা কথা হারিয়ে ফেলেছেন। কেউ কেউ দৌড়ে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাওয়া পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের দিকে। কবে, কী ভাবে ঘরে ফেরা যাবে, তা জানতে।
মদনবাবু দেরাদুনের শিবিরে পৌঁছন বুধবার বিকেলে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সকালে হৃষীকেশ থেকে চার ঘণ্টার পথ পেরিয়ে তেহরি বাঁধের কাছে শিবিরে। জানালেন, রুদ্রপ্রয়াগের রাস্তা বন্ধ। তেহরি বাঁধের উপর দিয়ে নতুন রাস্তা করা হয়েছে। বর্ষণ-বিধ্বস্ত এলাকা থেকে ওই রাস্তা ধরেই একের পর এক বাস আসছে তেহরিতে। তাঁর কথায়, “কেদারনাথ, বদ্রিনাথ, গৌরীকুণ্ড, শামলা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন চার পাশে শুধু মিলিটারি আর পুলিশ। বিধ্বস্ত পর্যটকেরা বাসে করে আসছেন। সকলেই আতঙ্কিত। ৬০-৭০ কিলোমিটার রাস্তা বাসে আসতে ৩৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে। রাস্তার এমনই অবস্থা হয়েছে।”
অন্তত ৫০০ বাস আর গোটা পঞ্চাশ গাড়ি-ট্যাক্সি পর্যটক-পুণ্যার্থীদের নামিয়ে আনার কাজে ব্যস্ত। দিল্লির বঙ্গভবনে বিশেষ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালি পর্যটকদের জন্য হৃষীকেশেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিশ্রাম ও চিকিৎসার জন্য পর্যটকদের রাখা হয়েছে হৃষীকেশ থানার পাশে একটি স্কুলে। স্টেশন ও বাসগুমটিতে বাংলার পর্যটকদের জন্য প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির দিল্লিতে রাজ্যের দফতরে নিযুক্ত কর্মীরা। আত্মীয়স্বজনকে নিতে এসেছেন অনেকেই। প্রিয়জনের নাম লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে তাঁরাও খোঁজাখুঁজি করছেন।
শুধু বাংলা নয়, অন্যান্য রাজ্যের পর্যটকদের ঘরে ফেরাতে বিশেষ ট্রেন দিচ্ছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার রাতেই দেরাদুন থেকে তিনটি বিশেষ ট্রেন ছাড়ার কথা। যাবে দিল্লি, লখনউ ও আম্বালা পর্যন্ত। উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নীরজ শর্মা বলেন, “দেরাদুনে অফিসারেরা আছেন। যে-সব রাজ্যের যাত্রী মিলবে, তেমন ভাবেই বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা হবে।” যদি বাংলার পর্যটক সংখ্যায় বেশি হন, হাওড়া বা শিয়ালদহ পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন চালানো হবে বলে উত্তর রেল সূত্রের খবর। হরিদ্বার থেকে যে-সব ট্রেন ছাড়বে, তাতে বিশেষ কোচ থাকছে। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে প্রতিদিন ১২০টি আসন রাখা হচ্ছে পর্যটকদের জন্য। তাঁদের নিয়ে প্রথম বিমানটির আজ, শুক্রবার সকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে দিল্লি থেকে ছাড়ার কথা। দিল্লির কালীমন্দির, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মতো কিছু কিছু জায়গায় পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে।
বাঁকুড়ার শান্তি ধীবর ও মনসারাম ধীবর গৌরীকুণ্ডের একটি হোটেলে কাজ করতেন। তাঁরাও নেমে এসেছেন। জানালেন, গৌরীকুণ্ডের মন্দির ছাড়া প্রায় সবই নিশ্চিহ্ন। স্নেহাশিস সরস্বতী নামে কলকাতার এক পর্যটকও নেমে এসেছেন অন্যদের সঙ্গে। ত্রাণ নিয়ে বহিরাগতদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘাত বাধছে বলে মদনবাবু জানান।
মহাকরণে দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান জানান, পর্যটকদের ফেরানো, তাঁদের ওষুধ ও খাওদাওয়া বাবদ এ দিন ২০ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.