পর্যটকদের ঘরে ফেরাতে দুই মন্ত্রী পাঠালেন মমতা
ত্তরাখণ্ড ও হিমাচলের অকালবর্ষণে পশ্চিমবঙ্গের যে-সব পর্যটক ও তীর্থযাত্রী আটকে পড়েছেন, তাঁদের সঙ্গে ফের একটু একটু করে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কী ভাবে ফিরবেন, তা নিয়ে আত্মীয়স্বজনের দুর্ভাবনা কাটছে না। এই অবস্থায় পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী রচপাল সিংহকে উত্তরকাশীতে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচন না-থাকলে তিনিই যেতেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ওই দুই পাহাড়ি রাজ্যে বাংলার অন্তত ১৭০০ পর্যটক ও তীর্থযাত্রী আটকে আছেন বলে সরকারি সূত্রের খবর। শুধু গৌরীকুণ্ডেই বহু বাঙালি-সহ ৪০০ পর্যটক আটকে পড়েছেন। আছেন অন্ধ্র, মহারাষ্ট্রের লোকজনও। পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের খবর দেওয়ার জন্য আজ, বুধবার দিল্লিতে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। নম্বর: ০১১-২৩৭১-০৩৬২।
আগাম বর্ষার ভারী বৃষ্টিতে দু’টি পাহাড়ি রাজ্যের মধ্যে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উত্তরাখণ্ডে। সেখানকার কেদারনাথ, বদ্রিনাথ ও গোমুখে বেশ কিছু পর্যটক ও পুণ্যার্থী আটকে আছেন। ওই তিন তীর্থস্থানের সঙ্গে সব রকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সেখানে আটকে থাকা বাঙালিদের যাতে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা যায়, তার জন্য তিনি নিজে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে মমতা মঙ্গলবার জানান। যাত্রীদের হেলিকপ্টার ও চপারে দিল্লি পর্যন্ত উড়িয়ে আনার জন্য তিনি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
মমতা বলেন, “পর্যটক ও তীর্থযাত্রীরা দিল্লিতে পৌঁছলে তাঁদের থাকা-খাওয়া এবং কলকাতায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকারই। এ বিষয়ে দিল্লিতে রাজ্যের রেসিডেন্ট কমিশনার ভাস্কর খুলবে এবং কলকাতায় মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন।” মদনবাবু ও রচপাল এ দিনই দিল্লি উড়ে যান। তাঁরা দেরাদুনে শিবির করে পর্যটকদের সাহায্য করবেন। দুই মন্ত্রী যাবেন উত্তরকাশীতেও।
এ রাজ্যের একটি বেসরকারি ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে সফরে বেরোনো ৭৪ জনের একটি দল উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলে আটকে আছে। সংস্থার তরফে নিতাই সেনগুপ্ত বলেন, “সকলেই হোটেলে নিরাপদে আছেন। পাঁচ দিনের খাবার মজুত আছে। বুধবার না-হলেও বৃহস্পতিবার সকলকে নামিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে। যোগাযোগ পরিষেবায় সমস্যার মধ্যে কোনও ভাবে নেটওয়ার্ক পেলে পর্যটকেরাই ফোনে খবর পাঠাচ্ছেন।”
বাঁকুড়ার সোনামুখী ও কোতুলপুর থেকে বেড়াতে যাওয়া ২৭ জনের সঙ্গে রবিবার বিকেলের পর থেকে আত্মীয়েরা আর যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। মঙ্গলবার বিকেলে ফের যোগাযোগ শুরু হয়। আটকে পড়া পর্যটকদের মধ্যে সোনামুখীর বিজন ঘোষাল ও অজিত ঘোষাল আনন্দবাজারকে ফোনে বলেন, “শনিবার হোটেলে জল ঢুকতে শুরু করেছিল। পুলিশকর্মীরা এসে কাছাকাছি উঁচু জায়গায় একটি ফাঁকা আবাসনে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু রসদ পর্যাপ্ত নয়। মেরেকেটে আর দু’দিন হয়তো চলবে।” তাঁরা জানান, শনিবার থেকেই গোটা এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। দলে ১৩ জন মহিলা রয়েছেন। সোমবার দলের ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাঁরা আতান্তরে পড়েন। বিজনবাবু জানান, এ দিন পর্যটনমন্ত্রী মদনবাবু তাঁদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে উদ্ধারের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।
আর মমতা জানান, আটকে পড়া পর্যটক-পুণ্যার্থীরা ভাল আছেন। তিনি বলেন, “ওঁরা খাবারদাবারও পাচ্ছেন। আমি নিজে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, কেদারনাথের অবস্থা খারাপ হলেও বদ্রিনাথের পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। যদি ওঁদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আমরা পাশে দাঁড়াতে পারি বলেও ওঁদের মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।”
হিমাচলপ্রদেশের মুখ্যসচিব সুদৃপ্ত রায় জানান, এ দিন আবহাওয়ার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। আগামী তিন দিন বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। তাই পর্যটকদের নামিয়ে আনা যাবে বলে আশা করছে হিমাচল প্রশাসন। কিছু বিদেশি পর্যটকও আটকে আছেন। ওই রাজ্যের মুখ্যসচিব বলেন, “পর্যটক, তীর্থযাত্রীদের উদ্ধারের কাজে ফৌজের দু’টি বড় হেলিকপ্টার ছাড়াও রাজ্যের একটি মাঝারি মাপের কপ্টার নামানো হয়েছে।” তিনি জানান, আপাতত সকলকে আনা হবে শিমলার রামপুরে। সেখান থেকে সড়কপথে গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা হবে।

দিল্লিতে কন্ট্রোল রুম: ০১১-২৩৭১-০৩৬২

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.