বছর ঘুরেও হয়নি চার্জ গঠন
বেঁচেও মরে আছি,
আক্ষেপ কাটোয়ার ধর্ষিতার

তিনি খুন হননি বলেই কি এক মাসে বিচার শেষ করে দোষীদের সাজা দেওয়া হয়নিপ্রশ্ন তুললেন কাটোয়া ধর্ষণ-কাণ্ডের অভিযোগকারিণী।
সোমবার কামদুনি গিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে এক মাসের মধ্যে বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার দোষীদের ফাঁসি চাইবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার দুপুরে কাটোয়ার অভিযোগকারিণী বলেন, “আমাকে সমাজে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। আমার মেয়েরা বড় হচ্ছে। খুন হইনি বলেই কি আমি এক মাসে বিচার পেলাম না?” ঘটনাচক্রে, দিল্লি ধর্ষণ-কাণ্ডের পরে পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণের অভিযোগকারিণীও প্রশ্ন তুলেছিলেন, “মারা যাইনি বলেই কি এখনও বিচার পেলাম না?”
এক সময়ে বীরভূমের কীর্ণাহারে সেলাইয়ের কাজ করতেন কেতুগ্রামের ওই বিধবা। গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি কীর্ণাহার থেকে ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিল বছর এগারোর ছোট মেয়ে। কেতুগ্রামের পাচুন্দির কাছে ট্রেনে ডাকাতি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময়ে মেয়ের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ওই মহিলাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আট জনের মধ্যে সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত-সহ চার জনকে শনাক্তও করেছেন ওই মহিলা ও তাঁর মেয়ে। পুলিশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার্জশিট দিয়েছে। কিন্তু এখনও মামলার চার্জ গঠন হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ঘটনার পরে ‘ওর স্বামী সিপিএম করে’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন। কামদুনি গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর ‘রাজনৈতিক রং’ খোঁজার চেষ্টার এ দিন নিন্দা করেন ওই মহিলা। বীরভূমের নানুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বসে এ দিন তিনি বলেন, “আমার ঘটনাতেও উনি রাজনীতি দেখেছিলেন। বারবার এ রকম বললে তো শয়তানদের সাহস বেড়ে যাবে। মেয়েদের উপরে অত্যাচার কোনও দিন থামবে না। মেয়ে হয়ে মেয়ের পাশে না দাঁড়িয়ে উনি অন্যায় কথা বলেই চলেছেন।”
ঘটনার পরে মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছিল তাঁর গ্রাম। কামদুনির ঘটনায় সরকার ক্ষতিপূরণ দিতে চায় শুনে কেতুগ্রামের সেই গ্রামের কয়েক জন মহিলা বলেই ফেললেন, “ক্ষতিপূরণ দেওয়া মানে তো মুখ বন্ধের চেষ্টা। নিহত ছাত্রীর পরিবার ঠিক কাজই করেছেন। আমরা চাই, এ ধরনের সমস্ত ঘটনায় অপরাধীরা কোন দলের তা না দেখে বা সাজানো না বলে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত বিচার করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন।” বিধবাও জানালেন, কোনও আর্থিক সাহায্য নয়, তিনি দ্রুত বিচার চান।
নানুরে এ দিন যে বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল, তার দরজায় ছিল পুলিশি পাহারা। মহিলা বলেন, “আমার মেয়ে এখনও আতঙ্কে রয়েছে। রাতে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। আতঙ্ক এতটাই যে পুলিশের পাহারা ছাড়া বেরোতে পারি না। যত দেরি হবে, তত ধামাচাপা পড়ে যাবে। আমার বেঁচে থাকাটা তো মরারই সামিল!”

 

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.