কেন্দ্রীয় সরকার ডাকঘরে সুদ কমানোয় স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়েছিল বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর দাবি, সেই ফাঁকেই বাজারে ঢুকে পড়ে নানা অর্থলগ্নি সংস্থা। তাঁদের আমলে রাজ্য স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে এক নম্বরে ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পূর্বস্থলী ও সন্ধ্যায় কালনায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসে সভা করেন সূর্যকান্তবাবু। পূর্বস্থলীর সভায় জনসমাগম দেখে তিনি বলেন, “একটা সময়ে মানুষ আমাদের ভুল বুঝে কিছুটা দূরে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু এই সভায় এসে মনে হচ্ছে, মানুষ আবার আমাদের দিকে ফিরে আসছেন।”
এ দিন কালনার নিভুজি কলবাড়ি এলাকার সভায় সূর্যকান্তবাবু দলের নেতা-কর্মীদের বলেন, “পঞ্চায়েতে যেখানে প্রার্থী দেওয়া যায়নি সেখানে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে প্রমাণ করে দিতে হবে, আমদের শক্তি কতখানি। সাধারণ মানুষ যদি তৃণমূল বা কংগ্রেস করেন, সেটা আমাদেরই দুর্বলতা।” তাঁর আরও দাবি, “আমরাই পিছিয়ে পড়া মানুষকে ক্ষমতা দিয়েছি। গ্রামের আদিবাসী মহিলারা প্রধান হয়েছেন।” |
পূর্বস্থলীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “উনি অসুস্থ, মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। আগেও বলেছি, এখনও বলছি, ওঁর চিকিৎসা দরকার। যাঁরা তাঁর স্বাস্থ্যের দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের বলছি, যত্ন নিন।” তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, “তৃণমূলের হাত থেকে তৃণমূলকে বাঁচাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দরকার।”
পূর্বস্থলীর সভায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অঞ্জু কর প্রদীপ তা ও কমল গায়েন হত্যার প্রসঙ্গ তুলে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেন। এক তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় ধৃত পূর্বস্থলীর সিপিএম নেতা তথা পারুলিয়া কুলকামিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ সাহার কথাও তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, “প্রদীপ সাহাকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় এমন একটি স্কুল তিনি তৈরি করেছেন যেখানকার ছাত্র এ বার রাজ্যে মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে। সেই রকম মানুষকে দিনের পর দিন ষড়যন্ত্র করে বন্দি করে রাখা হয়েছে।”
পূর্বস্থলীর তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ অবশ্য সূর্যকান্তবাবুদের তোলা নানা অভিযোগ মানতে চাননি। সিপিএমের সভায় ভিড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওঁরা যে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছেন তা যে ঠিক নয়, এই সভা তার প্রমাণ। তৃণমূল সন্ত্রাস করলে ওঁরা এই সভা করতেই পারতেন না।” |