ব্যারাকপুরে হাঙ্গামা ও খুনের দু’টি ঘটনায় দুই মূল অভিযুক্ত পরপর দু’দিনে ধরা পড়ল পুলিশের হাতে। যার নেতৃত্বে ওই হাঙ্গামা বাধানো হয় বলে অভিযোগ, সেই শিবু যাদব বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয় বিহারের চম্পারণে। আর যে-খুনের ঘটনাকে ঘিরে ওই হাঙ্গামা, সেই হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লাল্টু ঘোষকে শুক্রবার দিঘায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ, শনিবার তাকে আনা হচ্ছে ব্যারাকপুরে।
ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রের খবর, হাঙ্গামার ঘটনায় শিবুর সঙ্গেই তার আট শাগরেদ ধরা পড়েছে বিহার পুলিশের হাতে। চম্পারণের আদালত ‘ট্রানজিট রিমান্ড’ দেওয়ার পরে আজ, শনিবার তাদের ব্যারাকপুর মহকুমা বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হতে পারে।
৬ জুন ব্যারাকপুরের সদরবাজার এলাকায় জিতুলাল তাঁতি (২৬) নামে শিবুর ঘনিষ্ঠ এক যুবক খুন হয়। ব্যারাকপুরের এক পুলিশকর্তা জানান, শিবুর জুয়ার কারবার দেখভাল করত জিতু। মণিরামপুরের ওই যুবককে বোমা মেরে এবং গুলি করে মারে এক দল দুষ্কৃতী। খুনের রাত থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা সদর বাজার ও মণিরামপুর এলাকা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিবু আর তার ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী রাতেই এক প্রস্ত হাঙ্গামা বাধায়। ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে পরের দিন সকালে। সে-দিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ওই এলাকায় ভাঙচুর চালানো হয়। গোলমালের ছবি তুলতে গিয়ে বেধড়ক মার খান দুই চিত্রসাংবাদিক। গুরুতর আহত হন দু’জনেই। হাঙ্গামার পরেই গা-ঢাকা দেয় শিবু। দিন ছয়েক পরে চম্পারণে সদলবল ধরা পড়ে সে।
কমিশনারেট সূত্রের খবর, শিবুকে সড়কপথেই ব্যারাকপুরে আনা হবে। তাকে এবং তার শাগরেদদের আনতে ছ’টি গাড়ি বিহার গিয়েছে। আজ, শনিবার ব্যারাকপুর আদালতে শিবুকে তোলার সময় যাতে নতুন করে কোনও গোলমাল না-হয়, তার জন্য পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ দিন সকালেই ব্যারাকপুরে সাংবাদিক-নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। সকালে ব্যারাকপুরের যান কমিশনের এডিজি এল এল ডঙ্গল। তিনি প্রথমেই চলে যান ব্যারাকপুর থানায়। সেখান থেকে এডিসি শুভঙ্কর ভট্টচার্যের সঙ্গে যান মণিরামপুর সদর বাজার এবং নয়াবস্তিতে। ওই এলাকা ঘুরে দেখার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। শেষে যান প্রহৃত দুই চিত্রসাংবাদিকের কাঁকিনাড়ার বাড়িতে যান। ভাঙচুর, মারধরের সময় পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, ওই দুই চিত্রসাংবাদিকের কাছে তা জানতে চান কমিশনের এডিজি।
|