বাঁ চোখ উপড়ানো এবং বাঁ কানের কিছুটা অংশ ছেঁড়া অবস্থায় এক নিখোঁজ স্কুলছাত্রীর দেহ মিলল বাড়ির কাছের পাটখেত থেকে। শুক্রবার গাইঘাটার রাজাপুর কলোনি এলাকার ঘটনা। এলাকাবাসী এবং নিহত ছাত্রীর পরিবারের লোকজনের সন্দেহ, এটি শারীরিক নির্যাতন করে খুনের ঘটনা। তবে, ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির কোনও লিখিত অভিযোগ থানায় করা হয়নি।
পুলিশের দাবি, ময়না-তদন্তের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকেরা তাদের জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। ভারী এবং ভোঁতা কোনও জিনিস দিয়ে ঘাড়ে আঘাতের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “খুনের কারণ পরিষ্কার নয়। ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সঞ্জয় মণ্ডল নামে তাদের প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর বারোর ওই ছাত্রী মা ও ভাইয়ের সঙ্গে রাজাপুরে থাকত। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ মেয়েকে লঙ্কা কিনে আনতে বলে ছাত্রীর মা ঘাস কাটতে বেরিয়ে যান। আগামী সপ্তাহে পেটে একটি অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা থাকায় কয়েকদিন ধরে ছাত্রীটি স্কুলে যাচ্ছিল না। দুপুরে খেত থেকে ফিরে মহিলা আর মেয়েকে দেখতে পাননি। রাত পর্যন্ত পড়শিরাও খোঁজাখুঁজি করেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এক চাষি ওই ছাত্রীর দেহ পাটখেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যে জায়গা থেকে দেহটি মিলেছে, সেখানে পাটগাছগুলি নুয়ে পড়েছে। মাটিতে রক্তের দাগ। পুলিশকে ঘিরে গ্রামবাসীরা ঘটনায় জড়িতদের তাঁদের সামনে হাজির করানোর দাবি জানাতে থাকেন। ঘটনাস্থলে যান সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের ‘প্রতিবাদী মঞ্চে’র প্রতিনিধিরাও। তাঁরাও দুষ্কৃতীদের শাস্তি দাবি করেন। ওই ছাত্রীর মাসির সন্দেহ, “বোনঝিকে অন্য কোথাও খুন করে দেহটি ওই এলাকায় ফেলে রাখা হয়। খুনের আগে তার উপরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল।” একই সন্দেহ প্রকাশ করেন ওই ছাত্রীর মা এবং কয়েকজন গ্রামবাসীও। ছাত্রীর মামা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন থানায়।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, “আমাদের গরু-ছাগল এবং যাতায়াতের রাস্তা নিয়ে সঞ্জয়ের সঙ্গে আমার গোলমাল হয়েছিল। তা ছাড়া, ও বাড়িতে অসামাজিক কাজকর্ম চালাত। তার প্রতিবাদ করার জন্যই মনে হয় ও লোকজন নিয়ে মেয়েকে খুন করেছে।” সঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন অবশ্য অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় চাঁদপাড়ায় গাইঘাটা ব্লক অফিসের সামনে কংগ্রেস এক ঘণ্টা যশোহর রোড অবরোধ করে। |