ইশরাত জহান ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় আদালতে কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল সিবিআই ও গুজরাত সরকার-দু’পক্ষই।
২০০৪ সালে গুজরাত পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১৯ বছরের কলেজ ছাত্রী ইশরাত জহান ও তাঁর তিন সঙ্গী জাভেদ শেখ ওরফে প্রাণেশ পিল্লাই, আমজাদ আলি রানা ও জিশান জোহর। গুজরাত পুলিশের দাবি, ইশরাত ও তাঁর সঙ্গীরা লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি। তারা মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুন করতে চেয়েছিল। কিন্তু, ইশরাতের পরিবার ভুয়ো সংঘর্ষের অভিযোগ তোলায় তদন্ত শুরু হয়। তার পরে জল বহু দূর গড়িয়েছে। মামলা নিয়ে ইউপিএ সরকার ও মোদীর মধ্যে রাজনৈতিক তরজা তো রয়েছেই। পাশাপাশি রয়েছে দুই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে ঝগড়া। সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে ইশরাতদের গতিবিধির খবর গুজরাত পুলিশকে দিয়েছিলেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) কর্তা রাজেন্দ্র কুমার।
এখন সেই রাজেন্দ্র কুমারকেই কাঠগড়ায় তুলতে চাইছে সিবিআই। তাদের সন্দেহ, এই ঘটনায় জড়িত গুজরাত পুলিশের অফিসারদের সঙ্গে রাজেন্দ্র কুমারের যোগসাজশ ছিল। বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ আইবি।
আজ গুজরাত হাইকোর্ট সাফ জানিয়েছে, আইবি-র দেওয়া তথ্য ঠিক ছিল কি না তা নিয়েই বেশি মাথা ঘামাচ্ছে সিবিআই। তাদের উচিত ওই সংঘর্ষ ভুয়ো কি না তা নিয়ে তদন্ত করা। কারণ, ইশরাত জহানরা জঙ্গি হলেও তাদের ভুয়ো সংঘর্ষে খুন করার অধিকার পুলিশের নেই।
অভিযুক্তদের গ্রেফতারির ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট না দিতে পারাতেও সিবিআইয়ের সমালোচনা করেছে হাইকোর্ট। বেঞ্চ জানিয়েছে, চার্জশিট দিতে দেরি হওয়ায় আইপিএস অফিসার জি এল সিঙ্ঘল-সহ অনেকেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
পাশাপাশি আজ ধাক্কা খেয়েছে গুজরাত সরকারও। আজ হাইকোর্টে একটি সিডি জমা দিতে চেয়েছিলেন রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট-জেনারেল তুষার মেটা। তিনি জানান, সিডিতে ইশরাতদের সঙ্গে তাদের পাকিস্তানি কর্তাদের কথোপকথনের রেকর্ড আছে। তা থেকেই প্রমাণ হবে, ইশরাতরা জঙ্গি ছিল। এবং তারা প্রকৃত সংঘর্ষেই নিহত হয়েছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, তাদের পক্ষে মামলার এই স্তরে ওই সিডি প্রমাণ হিসেবে নেওয়া সম্ভব নয়। প্রয়োজনে রাজ্য দায়রা আদালতে তা জমা দিতে পারে।
নিজের ব্লগে ইশরাত মামলা নিয়ে একটি প্রবন্ধ লেখায় বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির বিরুদ্ধে হাইকোর্টেরই অন্য বেঞ্চে একটি আদালত অবমাননার মামলা হয়েছিল। সেটি আজ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আবেদনকারী।
|