‘সিএম রাখি, না কুল রাখি!’
মুরগির বাজারে বেরিয়ে পুরকর্তাদের হাল এখন এমনই। মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, ১৫০ টাকা কেজি দরে বাজারে মুরগির মাংস বেচতে হবে। এ দিকে কলকাতা পুরসভার সিদ্ধান্ত, সব্জি, মাংস সব কিছুতে পাইকারি দরের সঙ্গে ২০ শতাংশ লাভ রেখে বিক্রি করতে পারেন খুচরো বিক্রেতারা। সেই সিদ্ধান্ত মানতে হলে মুরগির মাংসের কিলো যে ১৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়!
এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া দাম অবশ্য শহরের কোনও বাজারেই বিশেষ কাজে আসেনি। গড়পড়তা মুরগি বিকোচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০-১৯০ টাকায়। মহাকরণ-সহ গুটিকয়েক সরকারি দোকানে শুধু ১৫০ টাকা কিলোয় মুরগি মেলে।
কেন বাজারে মুরগির দাম কমছে না, তা পর্যালোচনায় শুক্রবার এক বৈঠক ডাকেন পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ। ছিলেন দুই মেয়র পারিষদ তারক সিংহ ও পার্থপ্রতিম হাজারি, প্রাণিসম্পদ বিকাশ নিগমের এমডি, পশ্চিমবঙ্গ পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক, কলকাতা পুলিশের ডিসি (এনফোর্সমেন্ট)-সহ টাস্ক ফোর্সের একাধিক সদস্য ও বিভিন্ন বাজারের প্রতিনিধিরা। |
বৈঠকে একাধিক ব্যবসায়ীর বক্তব্য ছিল, মুরগির দাম প্রায়ই কম-বেশি হয়। গোটা মুরগি কিনে তা কেটে বিক্রি করতে যে খরচ হয়, তাতে কিলোপ্রতি ১৫০ টাকায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মুরগির দাম বেঁধে দিলেও তা চালু করতে পারছেন না তাঁরা। ওই ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল দর অন্তত ১৬০ টাকা করা হোক। তা নিয়ে পুরসভার একাধিক অফিসার কিছুটা সহমতও হন। ঠিক হয়, পাইকারি দরে গোটা মুরগির দামের উপর ২০ শতাংশ লাভে তা বিক্রি করতে হবে। পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদন মাইতি বলেন, “এখন গোটা মুরগির পাইকারি মূল্য ৯১ টাকা। এক কিলো গোটা মুরগি ছাড়িয়ে ৬৫০ গ্রাম হয়। অর্থাৎ কিলোপ্রতি দর ১৪০ টাকা।” এ দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তার উপর ২০ শতাংশ লাভ ধরে তা ১৬০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
কিন্তু টাস্কফোর্সের সদস্যেরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বলা দর থেকে এক পয়সাও কমানো যাবে না। শেষে ঠিক হয়, ১৫০ টাকাতেই মুরগির মাংস বিক্রি করতে হবে। যাঁরা তা মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে এনফোর্সমেন্ট শাখাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই অভিযান চালাবে পুলিশ। পুর প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আর দিন কয়েকের মধ্যেই ১৯টি কেন্দ্র থেকে সরকারি দরে মুরগির মাংস মিলবে।
|