কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জেলায় থাকতে পারবেন না তিনি। তাই জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে এক বার পা রেখেই শুক্রবার নদিয়ায় আত্মীয়ের বাড়ি রওনা হয়ে গেলেন সিপিএম নেতা প্রদীপ তা ও কমল গায়েন হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত পতিতপাবন তা। তবে তার আগে বিকেলে বর্ধমান জেলা সংশোধানাগার থেকে বেরোনোর সময়ে তাঁর হাতে ফুলের স্তবক তুলে দেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গেই হেঁটে দেওয়ানদিঘি যান তিনি।
২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দেওয়ানদিঘিতে জোড়া সিপিএম নেতা খুনের দিন ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার হন পতিতপাবনবাবু। অন্য অভিযুক্তেরা আগেই জামিন পেলেও ঘটনার এক বছর সাড়ে তিন মাসের মাথায় জামিন পেলেন তিনি। তাঁর আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “৩০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত জামিনে পতিতপাবনবাবু মুক্তি পেয়েছেন। তিনি বর্ধমান জেলায় থাকতে পারবেন না। তবে সপ্তাহে এক দিন তাঁকে বর্ধমান থানায় হাজিরা দিতে হবে। জামিনের কাগজপত্র সিজেএম আদালতে পৌঁছনোর পরে তাঁকে জেল থেকে ছাড়া হয়েছে।” |
দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পতিতবাবু। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ জেলা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বেরোন তিনি। পরনে ছিল সাদা পাজামা, পাঞ্জাবি। গলায় তৃণমূলের তেরঙা উত্তরীয়। জেল থেকে বেরিয়েই তিনি বলেন, “সিপিএম ও পুলিশ ষড়যন্ত্র করে আমাদের আটকে রেখেছিল। ইতিমধ্যে বর্ধমান ১ ব্লকে পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বাকি আসনগুলিতেও যাতে দল জেতে, সে দিকে এখন আমাদের নজর।”
জেল থেকে পতিতপাবনবাবু ছাড়া পাওয়ার সময়ে হাজির ছিলেন বর্ধমান ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি কাকলি তা, প্রাক্তন সভাপতি দেবু গুহ, তৃণমূল নেতা অরূপ দাস প্রমুখ। পতিতপাবনবাবুকে নিয়ে তাঁরা রওনা হন দেওয়ানদিঘির দিকে। তবে বাড়িতে ঢুকেই বেরিয়ে আসেন তিনি। কাকলিদেবী বলেন, “উনি বাড়িতে দেখা করেই বেরিয়ে এসেছেন। আমাদের সঙ্গে দেওয়ানদিঘি বাজারে দলের অফিসে বৈঠক করেছেন।” বৈঠকের পরেই নদিয়া রওনা হওয়ার কথা পতিতপাবনবাবুর। সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি থাকবেন বলে কাকলিদেবী জানান।
হাইকোর্টের নির্দেশে যেখানে জেলাতেই পতিতবাবু থাকতে পারবেন না, সেখানে তিনি কী ভাবে মিছিল করে দেওয়ানদিঘি গেলেন? বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমাদের হাতে কোর্টের কোনও নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি। তাই আমরা তাঁকে মিছিল করা থেকে বিরত করতে পারিনি।” তৃণমূলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথের দাবি, “পতিতপাবনবাবুকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এলাকার মানুষ তাতে ক্ষুব্ধ ছিলেন। জামিন পেতে তাঁরাই তাঁকে নিয়ে মিছিল করেছেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের যোগ নেই।”
|