ফের পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী হলেন নিহত কংগ্রেস নেতা তুহিন সামন্তের স্ত্রী। স্বামীকে খুনের মামলার বিচার এখনও শুরু হয়নি, কিন্তু দলীয় কর্মীদের অনুরোধে ‘জনতার দরবারে’ হাজির হলেন, দাবি নিষাদ সামন্তের।
২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি কাটোয়ার চাণ্ডুলি গ্রামে স্কুলের পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন চলাকালীন গোলমাল বাধে। অভিযোগ, সেই সময়ে নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালান কাটোয়ার তৎকালীন ওসি দেবজ্যোতি সাহা। নিহত হন কান্দি বিমলচন্দ্র আইন কলেজের শিক্ষক তুহিনবাবুর। বছর চারেক আগে এই মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। কিন্তু নানা কারণে মামলাটির বিচার এখনও শুরু হয়নি। নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। কাটোয়ার নন্দীগ্রামের সামন্ত পরিবার অবশ্য ক্ষতিপূরণ নিতে চায়নি, চেয়েছিল বিচার।
|
কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকে মুস্থুলি গ্রামে দেওয়াল লিখন। —নিজস্ব চিত্র। |
২০০৮ সালে শ্রীবাটি থেকে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হন তুহিনবাবুর স্ত্রী নিষাদদেবী। তবে সিপিএম প্রার্থী হরিনারায়ণ সামন্তের কাছে হেরে যান। এ বার প্রথমে ভোটে দাঁড়াতে রাজি না হলেও, পরে মুস্থুলি গ্রামের কংগ্রেস কর্মীদের অনুরোধে দাঁড়াতে রাজি হন বলে জানান নিষাদদেবী। কাটোয়া ২ ব্লকের ঘোড়ানাষ ও মুস্থুলি গ্রাম নিয়ে গঠিত পঞ্চায়েত সমিতির আসনটিতে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
নিষাদদেবীর দাবি, “কংগ্রেস করতে গিয়ে আমার স্বামী পুলিশের রোষে পড়ছিল। তাই তাঁকে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিতে হল। ছ’বছর কেটে গেলেও আমরা সুবিচার পেলাম না। নতুন মুখ্যমন্ত্রীর আমলেও বিচার শুরু হয়নি। কংগ্রেস কর্মীদের অনুরোধে ফের জনতার দরবারে হাজির হলাম।” মুস্থুলির বাসিন্দা তথা কাটোয়া পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের গৌতম ঘোষালের বক্তব্য, “গত বার নিষাদদেবী যখন প্রার্থী হন, তখনও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি। কঠিন লড়াইয়ের পরে আমরা হেরে যাই। এই ক’বছরেও তুহিন-হত্যার বিচার হয়নি। তাই মানুষের কাছে বিচার চেয়ে নিষাদদেবীকে প্রার্থী করেছি।” নিষাদদেবীর বিরুদ্ধে সিপিএমের প্রার্থী সোনামনি খাঁ ও তৃণমূলের প্রার্থী মৌসুমি ঘোষ। তাঁরা কংগ্রেস প্রার্থীর ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির এক নেতা বলেন, “আমাদের লড়াই দলগত, প্রার্থীর সঙ্গে নয়। বাকি বিষয় আদালতে বিচারাধীন।”
|