সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী বরুণ বিশ্বাসকে খুনের মামলার শুনানি বন্ধ রাখার জন্য আদালতে আবেদন জানালেন বরুণের আত্মীয়েরা। মঙ্গলবার বনগাঁ মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক-১) অবশ্য সেই আবেদন খারিজ করে দেন। সরকার পক্ষের আইনজীবী সমীর দাস বলেন, “চার্জশিট ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে আদালতে। ১৭ জুন থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে বিচারক শুনানি বন্ধের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।”
কিন্তু কেন এমন আর্জি জানালেন বরুণের আত্মীয়েরা? সিআইডি তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে খুশি নন বলে আগেই জানিয়েছিলেন তাঁরা। সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে গড়ে ওঠা প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার বলেন, “আমরা ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই।’’ বরুণের দাদা অসিত বলেন, “চার্জশিটের প্রতিলিপি আমাদের দেওয়া হয়নি। ফলে কার নাম আছে সেখানে, কার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে কিছুই জানি না।” ২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবরডাঙা স্টেশনের বাইরে বরুণবাবুকে গুলি করে খুন করে এক দল দুষ্কৃতী। নব্বই দশকের গোড়ার দিকে সুটিয়ায় একের পর এক গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদী মঞ্চ গড়ে আন্দোলনে নামেন। বরুণ ছিলেন সেই মঞ্চেরই সম্পাদক। মিত্র ইন্সটিটিউশন (মেন)-এর শিক্ষক বরুণ এলাকায় সমাজসেবী হিসাবেও জনপ্রিয় ছিলেন। বরুণ-সহ কয়েক জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ধরাও পড়ে অপরাধীরা। কিন্তু হঠাত্ই খুন হন বরুণ। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে ৭ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। মূল অভিযুক্ত, গণধর্ষণের অন্যতম আসামী সুশান্ত চৌধুরী দমদম সেন্ট্রাল জেলে বসেই খুনের ছক কষেছিল বলে দাবি করে সিআইডি।
কিন্তু খুনের মদতদাতারা অধরা বলে অভিযোগ প্রতিবাদী মঞ্চের। খুনিদের টাকার জোগান দিয়েছিল যারা, তারাও ধরা পড়েনি বলে অভিযোগ। অসিতবাবুদের তরফে আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারককে জানান, মামলার তদন্ত ঠিক ভাবে এগোচ্ছে না। চার্জশিটের কপিও দেওয়া হয়নি বরুণের বাড়ির লোকজনকে। আদালতের নির্দেশে ওই কপি তাঁদের আজ, বুধবারই দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী সমীরবাবু। |