রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পে কারও বাড়িতে এক বছর আগে, কারও বা মাস খানেক আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তার পরে আর আলো জ্বলেনি। কিন্তু সংযোগ ‘ছিন্ন’ হয়ে যাওয়ার ভয়ে গ্রামবাসীরা বিল মিটিয়ে আসছেন নিয়মিত। এমনই অবস্থা নলহাটি থানার ভবানন্দপুর গ্রামের উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ায়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের ৫২টি বিপিএল পরিবারের মধ্যে ৪৮টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর খানেক আগে উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ায় দু’টি ১০ কেভির ট্রান্সফর্মার বসানো হয়। উত্তরপাড়ায় প্রায় এক বছর আগে ২৫টি বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়। সংযোগের দিন ১ ঘণ্টা বিদ্যুতের আলো জ্বলেছিল বলে জানালেন মান্তু মাল। তার পর থেকে আর আলো জ্বলেনি। তিনি বলেন, “প্রতি মাসে বাড়িতে বিল আসে। আর আমি নিয়মিত নলহাটি আফিসে গিয়ে বিল দিয়ে আসি।” কেন বিল দেন? এ প্রশ্নের উত্তরে দীনবন্ধু লেট, ভাদেশ্বরী লেট, বিধান লেটদের অভিযোগ, “বিল না দিলে বলেছে লাইন কেটে দেবে। কেউ কেউ বলেন পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে।” |
ভবানন্দপুর গ্রামে বিকল হয়ে রয়েছে ট্রান্সফর্মার।—নিজস্ব চিত্র। |
ওই পাড়ার পিন্টু লেট জানান, প্রতি তিন মাস অন্তর তাঁদের বাড়িতে বিল আসে। মাসে ৩৮ টাকা করে। কারও কারও সেটা বেড়ে ১৪৩ টাকা বা ১৪৮ বা ১২৮ টাকা। কখনও কখনও তাঁদের কাছে বিল পরিশোধের নোটিসও আসে। তখন তাঁরা আর দেরি না করে বিল পরিশোধ করে দেন।
দক্ষিণপাড়ায় এক বছর আগে ট্রান্সফর্মার বসলেও তখন সংযোগ দেওয়া হয়নি। এক মাস আগে যদি বা বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হল, আলো জ্বলেনি। কারণ, ট্রান্সফর্মারটাই তো বিকল। নতুন সংযোগ পেয়েছেন সুব্রত কোনাই, শ্রীনাথ কোনাই-সহ প্রায় ১৫ জন। তাঁরা বলেন, “এখন সংযোগ না নিলে পরে আর পাওয়া যাবে না।” নলহাটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের সহকারী বাস্তুকার সুপ্রিয়বাবু দে বলেন, “ট্রান্সফর্মার দু’টি যে বিকল হয়ে রয়েছে তা জানা নেই। এ ব্যাপারে দফতরে কোনও নথি নেই। ভয় দেখানোর অভিযোগও ঠিক নয়। কারণ, নিয়মিত বিল পেয়ে যাচ্ছি। তাই ভেবেছি সংযোগ রয়েছে এবং আলো জ্বলছে।”
দিনবন্ধু লেট জানান, তিনি গত ১ ডিসেম্বর বর্ধমানে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে অভিযোগ করেছিলেন। সেখান থেকে বলা হয়েছিল নলহাটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে। এই কেন্দ্রের সহকারী বাস্তুকার সুপ্রিয়বাবু বলেন, “এই প্রকল্পে একটি করে ১০ ওয়াটের বাল্ব জ্বালানো যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। কারণ অনেক বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। তার ফলে ট্রান্সফর্মার বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।” সংশ্লিষ্ট দফতরের রামপুরহাটের বাস্তুকার নারায়ণ দে বলেন, “এটা আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।”
|