বিদ্যুৎ-মাসুল বৃদ্ধির আশঙ্কা
কয়লা-মূল্য স্থির করতে নয়া পথ দিল্লির
বিদ্যুৎ-শিল্পের চাহিদা মেটাতে গেলে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি ছাড়া উপায় নেই বলে বাজেটে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। এবং সে ক্ষেত্রে বিদেশি দামি কয়লার সঙ্গে সস্তার দেশি কয়লা মিশিয়ে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে তা গড় দামে বিক্রির পক্ষে তিনি সওয়াল করেছিলেন। কয়লার মূল্য নির্ধারণে এ বার প্রায় সেই পদ্ধতিই চালু করতে চলেছে মনমোহন সরকার।
তবে একটু ঘুরপথে। স্থির হয়েছে, গড় দামের পরিবর্তে আমদানি-কয়লার বাড়তি দাম কোল ইন্ডিয়া সরাসরি গ্রাহকদের থেকে আদায় করতে পারবে। অর্থাৎ, ‘পাস থ্রু মেকানিজম।’ কাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল। কেন্দ্রের এ হেন উদ্যোগ ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিদ্যুতের মাসুল থেকে শুরু করে রান্নার গ্যাস, ডিজেল আরও মহার্ঘ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শিল্প-প্রশাসনের কিছু মহলে।
বস্তুত দেশি-বিদেশি মেশানো কয়লা বিদ্যুৎ-শিল্পে বিক্রির কথা কেন্দ্র ভাবছে বেশ কিছু দিন ধরে। সে ক্ষেত্রে দু’ধরনের কয়লার গড় দাম আদায়ের কথা ভাবা হচ্ছিল। মন্ত্রকের পরিভাষায় ‘প্রাইস পুলিং।’ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশার মতো কয়েকটি রাজ্য গোড়া থেকে এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছে। যোজনা কমিশনের এক বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত তাঁদের আপত্তি জানিয়ে এসেছেন। ওঁদের বক্তব্য: সস্তার দেশি কয়লার সঙ্গে দামি বিদেশি কয়লা মেশালে দাম বাড়তে বাধ্য, তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ আরও বাড়বে।
এর জেরে কেন্দ্র সিদ্ধান্তটি স্থগিত রেখেছিল। এ বার কোল ইন্ডিয়া-র মুখ চেয়েই তারা এই নতুন সিদ্ধান্তটি নিয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের অভিযোগ। তাদের বক্তব্য: কয়লার উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে না-বাড়লেও গত ক’বছরে কোল ইন্ডিয়া-র বার্ষিক মুনাফা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তা সত্ত্বেও বেতন-পেনশন খাতে খরচ বাড়ায় কয়লা মন্ত্রক বারবার মূল্য নির্ধারণের নতুন ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আর তার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ, ইস্পাতের মতো শিল্পের ঘাড়ে। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের এক কর্তাও জানাচ্ছেন, দিন পনেরো আগে কোল ইন্ডিয়া বিভিন্ন মানের (গ্রেড) কয়লার দামের হেরফের করেছে, যাতে টনপিছু ৪.৭% দাম বেড়েছে। প্রতিক্রিয়ায় কয়েকটি বিদ্যুৎসংস্থা ইতিমধ্যে মাসুলবৃদ্ধির কথাও ভাবতে শুরু করেছে। সরকারের কী যুক্তি?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক সদস্যের দাবি: বর্তমান দামে কয়লার জোগান অনিশ্চিত। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমছে, ভুগছে আমজনতা থেকে শিল্পসংস্থা। কয়লা আমদানি হলে জোগান সুনিশ্চিত হবে।
সরকারি সূত্রে আরও বলা হচ্ছে, এমনিতেই পরিকাঠামোর অভাবে কোল ইন্ডিয়া চাহিদামতো কয়লা জোগাতে পারছিল না। সঙ্গে পরিবেশগত বাধা-সহ নানা কারণে খনন মার খেয়েছে। অদূর ভবিষ্যতেও চাহিদা-জোগানের ফারাক ঘোচার নয়। কারণ সরকারি হিসেবই হল, দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী যোজনাকালের শেষে, অর্থাৎ ২০১৭-য় দেশে কয়লার চাহিদা গিয়ে পৌঁছবে অন্তত ৬৮ কোটি টনে। অথচ জোগান ৫০ কোটি টন ছাড়াবে না। অর্থাৎ, ১৮ কোটি টন আমদানি করতে হবে। এ দিকে বেশ কয়েকটি বৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্প ছাড়পত্রের অপেক্ষায়। সেগুলোয় উৎপাদন শুরু হলে কয়লার চাহিদাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে।
মনমোহন সরকার তারই মোকাবিলার চেষ্টায় নেমেছে বলে কেন্দ্রীয় সূত্রের দাবি।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.