ভ্যাপসা গরম কাটিয়ে বাংলায় বর্ষা এ সপ্তাহেই
স্বাভাবিক নিয়ম মানলে উত্তরবঙ্গে তার পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল বুধবারেই। কিন্তু মায়ানমারে এক সপ্তাহ ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছে মৌসুমি বায়ু। এ দিন সেই অচলাবস্থা কাটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আর তার জেরেই ৮ জুন, শনিবারের মধ্যে উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকতে চলেছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
উত্তর-পূর্বাঞ্চল হয়ে উত্তরবঙ্গে বর্ষা সমাগমের স্বাভাবিক সময় ৫ জুন। এ বার তার থেকে দিন তিনেক দেরিতে কোচবিহার দিয়ে সে বাংলায় ঢুকবে বলে আবহবিদদের আশা। উত্তরবঙ্গে বর্ষার আগমন-বার্তা ঘোষণা করা হলেও সে কবে দক্ষিণবঙ্গে পৌঁছবে, হাওয়া অফিসের কাছে এখনও তার নির্দিষ্ট কোনও খবর নেই। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢোকে মৌসুমি বায়ুর দু’টি ভিন্ন শাখা বেয়ে। কেরলের শাখাটি উত্তর দিকে উঠতে উঠতে চলে আসে পূর্ব ভারতে। সেটাই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা নিয়ে আসে।
মৌসুমি বায়ুর অন্য শাখা আন্দামান থেকে মায়ানমার, উত্তর-পূর্বাঞ্চল হয়ে ঢোকে উত্তরবঙ্গে।
বর্ষার যে-শাখাটি আন্দামান দিয়ে ঢোকে, তা মায়ানমারে পৌঁছে গিয়েছিল ২৭ মে। তার পরে ন’দিন সে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। মৌসুমি বায়ু এত দীর্ঘ সময় ওখানে থমকে না-থাকলে গত শনিবারেই বর্ষা উত্তরবঙ্গে পৌঁছে যেত বলে এক আবহবিদ জানান। সেটা হত সময়ের আগেই উত্তর বাংলায় বর্ষার হাজিরা।
কেরল দিয়ে বর্ষার মূল শাখাটি নির্ধারিত তারিখে, অর্থাৎ ১ জুন মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকেছে। কেরলে মৌসুমি বায়ুর আবির্ভাবের স্বাভাবিক সময় এটাই। বর্ষার ওই শাখা আরবসাগর ও বঙ্গোপসাগর হয়ে ক্রমেই উপরের দিকে উঠতে থাকে। এই সময়ে আরবসাগরে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে পশ্চিম ভারতে অতি-সক্রিয় হয়ে ওঠে বর্ষা। উল্টো দিকে মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে পূর্ব ভারতে। আবার বঙ্গোপসাগরে কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় হলে পূর্ব ভারতের বর্ষা-ভাগ্য প্রসন্ন হয়।
গত পাঁচ দিনে আরবসাগরে বায়ুপ্রবাহ অনুকূল থাকায় মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় বর্ষা ঢুকে পড়েছে। তার ফলে ভুগছে পূর্ব ভারত। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণবঙ্গে মৌসুমি বায়ু কবে ঢুকবে, সেটা পুরোপুরি নির্ভর করছে বঙ্গোপসাগরের বায়ুপ্রবাহের উপরে। বর্ষা এই মুহূর্তে অন্ধ্রপ্রদেশের দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে। তা অন্ধ্রের বাকি অংশ, ওড়িশা হয়ে কবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছবে, আবহবিদেরা এখনও তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
বর্ষার যে-শাখাটি মায়ানমারে রয়েছে, সেটি আজ, বৃহস্পতিবার থেকে সক্রিয় হবে বলে আবহবিদেরা জানিয়েছেন। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “বৃহস্পতিবার কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলায় ভাল বৃষ্টি শুরু হবে। শনিবারের মধ্যে ওই এলাকায় বর্ষার পৌঁছে যাওয়ার কথা।”
সাধারণ ভাবে ৮ জুন নাগাদ দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এসে যায়। এ বার সে ঠিক কবে পৌঁছবে?
গোকুলবাবু বলেন, “কেরলে নির্দিষ্ট সময়ে বর্ষা ঢুকেছে। দক্ষিণবঙ্গে স্বাভাবিক নিয়মেই বর্ষার ঢুকে পড়ার কথা। ৮ জুনের দু’চার দিন পরেও যদি সে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে, সেটাকে স্বাভাবিকই বলব আমরা।”
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, উত্তরবঙ্গে বর্ষার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় বঙ্গোপসাগর থেকে মেঘ ঢুকে পাড়ি দিচ্ছে তরাই-ডুয়ার্সে। তা যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়েই। এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের আর্দ্রতা বেড়ে যাচ্ছে চড়চড় করে। অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় গলদ্ঘর্ম কলকাতার মানুষ। মানায়মারে বর্ষার শাখাটি সক্রিয় হলে বঙ্গোপসাগরের বায়ুপ্রবাহেও বদল ঘটবে বলে আবহবিদদের আশা। তাঁরা জানাচ্ছেন, সেই ধাক্কায় পূর্ব ভারতের দিকে বর্ষা এগিয়ে আসতে পারে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.