|
|
|
|
হাওয়া-বদল বঙ্গোপসাগরে |
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে না গিয়ে বর্ষা থমকে মায়ানমারেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নির্ঘণ্ট মেনে কেরলে বর্ষা ঢুকলেও তা থমকে গিয়েছে বঙ্গোপসাগরে!
আবহবিদেরা বলছেন, ১ জুন কেরলে বর্ষা ঢুকলেও তা আর উত্তরের দিকে উঠে আসছে না। এবং তার জন্য দায়ী বঙ্গোপসাগরের বায়ুপ্রবাহের সাময়িক বদল। সাধারণত, বঙ্গোপসাগরের বায়ুপ্রবাহের জেরেই বর্ষা উত্তর-পূর্ব ভারত ও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগরে পরিস্থিতি কিছুটা প্রতিকূল থাকার ফলে গত তিন দিন ধরে মায়ানমারেই আটকে রয়েছে বর্ষা। এর জেরেই নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গিয়েও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বর্ষা হাজির হয়নি। যার প্রভাব উত্তরবঙ্গে পড়তে পারে বলেও আবহবিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
এক আবহবিদ জানান, স্বাভাবিক নিয়মে ১ জুন মায়ানমার-মিজোরাম সীমান্ত দিয়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বর্ষা ঢোকে। কিন্তু এ বছর মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরের শাখাটি এখনও দুর্বল। তার উপরে বঙ্গোপসাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতি। সব মিলিয়েই উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে এখনও বর্ষা ঢুকতে পারছে না বলে তাঁর দাবি। আবহবিজ্ঞানীরা জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হাজির হওয়ার পরেই পরেই উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকে পড়ে। কিন্তু এ বছর নির্দিষ্ট সময়ের দু’দিন পরেও উত্তর-পূর্বে মৌসুমি বায়ু না পৌঁছনোয় উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রেও বর্ষা বিলম্বিত হতে পারে বলে আবহবিদদের একাংশের আশঙ্কা। তবে সোমবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বর্ষার অগ্রগতি স্বাভাবিক বলেই তাঁদের দাবি।
কী অবস্থা বর্ষার? |
|
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানী জানান, মৌসুমি বায়ুর একটি শাখা ২৭ মে মায়ানমারে পৌঁছে গিয়েছিল। অন্য শাখাটি ১ জুন কেরলে ঢোকার পরে তা তামিলনাড়ু পেরিয়ে বঙ্গোপসাগর হয়ে মায়ানমারে ঢুকেছে। কিন্তু তার পর থেকে সেটির আর কোনও অগ্রগতি হয়নি। সোমবার কর্নাটক উপকূলেও বর্ষা হাজির হয়েছে। কিন্তু সেখানেও মৌসুমি বায়ু নির্দিষ্ট গতিপথে না গিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল পেরিয়ে মায়ানমারে মিশেছে।
এই অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, আগামী কয়েক দিনে বর্ষার কী অগ্রগতি হবে? কবেই বা সে হাজির হবে উত্তর-পূর্বে?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন জানান, উত্তর-পূর্বের বর্ষা ঢোকার ক্ষেত্রে একটা বাধা রয়েছে। সেই বাধা কবে কাটবে, তা আজ, মঙ্গলবারের পর বোঝা যাবে। তবে মোটের উপর বর্ষার পরিস্থিতি এ বছর স্বাভাবিক বলেই আবহাওয়া দফতরের দাবি। সেই সূত্র ধরেই এ বছর গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার আগমন স্বাভাবিক হতে পারে বলে আবহবিদদের একাংশ দাবি করছেন। যদিও আবহবিজ্ঞানীদের আর একটি অংশ বলছেন, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার হাজির হতে দেরি হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। স্বাভাবিক নিয়মে ৮ জুন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা হাজির হওয়ার কথা। যদিও গত বছর বঙ্গোপসাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্যই নির্দিষ্ট সময়ের দিন দশেক পরে বর্ষা ঢুকেছিল দক্ষিণবঙ্গে।
তবে মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, চলতি বছরে গরম কালেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি পেয়েছে দক্ষিণবঙ্গ। সপ্তাহ খানেক আগে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি নিম্নচাপের ফলে বর্ষার আমেজ তৈরি হয়েছিল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে। কিন্তু তার প্রভাব কেটে যেতেই ফের অস্বস্তিকর আবহাওয়া মালুম হচ্ছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। বেড়েছে তাপমাত্রাও। আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীদের পূবার্ভাস, আগামী কয়েক দিন এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বজায় থাকবে।
|
পুরনো খবর: দক্ষিণবঙ্গে হাজিরা নির্দিষ্ট সময়েই, ইঙ্গিত দিচ্ছে বর্ষা |
|
|
|
|
|