মানসাই বাজারে এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও রহস্যের জট খোলেনি। শুক্রবার গ্রামে বহু দোকান বন্ধ ছিল। এলাকায় পুলিশ ও র্যাফের টহল চলেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় মনোয়ার রহমান নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তৃণমূলের অভিযোগের আঙুল সিপিএমের দিকে। সিপিএমের ইঙ্গিত অবশ্য কেএলও-র দিকেই। কোচবিহারের এসপি অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “তদন্তে যা জানা গিয়েছে, তাতে ভয় দেখিয়ে রাস্তা ফাঁকা করতেই দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। কেএলও কিংবা অন্য কোন জঙ্গি গোষ্ঠী জড়িত কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” |
মনোয়ার রহমানের উদ্বিগ্ন পরিবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব |
অসম পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুষ্কৃতীরা অসমের ধুবুরির খেড়বাড়ির কাছে বৌসেরকুটি এলাকায় রায়ডাক নদীর উপরে নির্মীয়মান একটি সেতুর সামনে ঠিকাদার সংস্থার তৈরি শ্রমিক শিবিরে হামলা চালায়। যে সংস্থা ওই সেতুটি তৈরি করছে তাদের কাছ থেকে সম্প্রতি কেএলও মোটা টাকা দাবি করেছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কিন্তু ওই সংস্থা সেই টাকা দিতে রাজি হয়নি। এরপরে হামলা হয়। সেখানে অন্তত ৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে তারা। তাদের ছোড়া গুলিতে ওই শিবিরের সামনে রাখা একটি বাইকের তেলের ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণও হয়েছে। এরপরেই পালানোর সময়ে মানসাই বাজারের কাছে তারা যানজটে আটকে পড়ে। তখনই দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া ভাবে গুলি চালিয়ে রাস্তা ফাঁকা করার চেষ্টা করেছিল বলে অসম পুলিশের সন্দেহ। সেই সময়েই মনোয়ারের ডান হাত ও কোমরে গুলি লাগে। রাতেই তাঁকে কোচবিহার জেলা হাসপাতাল থেকে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর ভাই মতিয়ার রহমান বলেন, “আমাদের পরিবারের সকলেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। এ ভাবে দাদার উপরে গুলি চলবে ভাবতেই পারিনি।” ওই ঘটনায় আহত দধিমোহন রায় হালাকুরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, “সিপিএমের হাতে থাকা সমস্ত অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওই সব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ফের সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। তাই মনোয়ারকে গুলি করা হয়।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তমসের আলির দাবি, “অসম থেকে ঢুকে পড়া উগ্রপন্থীদের একটি দল পালিয়ে যাওয়ার সময়ে গুলি চালিয়েছে। এলাকার সবাই তা জানেন। অস্ত্র যদি থাকে তা তৃণমূলের কাছেই আছে।”
|