কাটতে পারে ভোটের বাধা
কমিশন-সরকার আইনি কাজিয়ায় যবনিকা কাল
ঞ্চায়েত নির্বাচনের বাধা কাল, শুক্রবার কাটতে চলেছে। কলকাতা হাইকোর্টে ওই দিন বিকেল ৪টেয় পঞ্চায়েত মামলার রায় দেবেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। সেই সঙ্গেই রাজ্য সরকার বনাম কমিশন দ্বৈরথে যবনিকা পড়বে।
হাইকোর্ট সূত্রের খবর, ভোটের পথ সুগম করতে আপাতত অন্তর্বর্তী রায় দেওয়া হচ্ছে। আনুষঙ্গিক অন্যান্য প্রসঙ্গের ফয়সালা হবে পরে।
নিয়ম অনুযায়ী পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ ১০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা। অন্তর্বর্তী রায়ের পরে সরকার যদি তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে না-যায়, সে-ক্ষেত্রে জুনের মধ্যে ওই ভোট করা সম্ভব বলে আইনজীবীদের অভিমত।
রাজ্য সরকার বনাম রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই মামলায় মূল বিতর্কের বিষয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ। কমিশন বারবার আদালতের কাছে দাবি করেছে, তারা স্বশাসিত সংস্থা। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব তাদের। অবাধ, মুক্ত, ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য তারা যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায়, রাজ্য সরকার সেই দাবি মানতে বাধ্য।
আর রাজ্য সরকার প্রথম থেকেই আদালতের কাছে বলে এসেছে, রাজ্য পুলিশ দিয়েই পঞ্চায়েত নির্বাচন করা সম্ভব। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই। যদি একান্তই প্রয়োজন হয়, তা হলে অন্য রাজ্য থেকে সশস্ত্র পুলিশ আনার ব্যবস্থা করবে সরকার।
পঞ্চায়েত নির্বাচন ক’দফায় হবে, তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ থাকলেও পরবর্তী কালে রাজ্যের ঘোষণা অনুযায়ী দু’দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে রাজি হয়ে যায় কমিশন।
কিন্তু শুনানি চলাকালীন আদালতে প্রশ্ন ওঠে রাজ্য পুলিশের সংখ্যা নিয়ে। কমিশন আদালতে জানায়, সরকারের যত পুলিশ আছে, তা দিয়ে কোনও ভাবেই অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য, তারাও অবাধ ও মুক্ত নির্বাচন চায়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটাই ভাল যে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই।
কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় সরকারকে লেখা রাজ্য পুলিশের ডিজি-র একটি ‘নোট’ নিয়ে। তাতে ডিজি জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘সিএপিএফ’ ব্যবহার করা হবে। বিতর্ক বাধে ‘সিএপিএফ’ কথাটি নিয়েই। শুনানিতে কমিশন প্রসঙ্গটি তোলায় রাজ্যের জিপি জানান, সিএপিএফ মানে ক্যালকাটা আর্মড পুলিশ ফোর্স। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। হাইকোর্ট রাজ্যের কাছে ওই কথাটির ব্যাখ্যা চায়।
ডিজি-র বক্তব্য জেনে অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, সিএপিএফ মানে সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স। এর অধীনে কেন্দ্রের কাছে ছ’টি বাহিনী রয়েছে।
রাজ্য পুলিশে কর্মীর সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তোলে কমিশন। অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে দু’জন করে সশস্ত্র পুলিশ ব্যবস্থা করা হবে। সারা রাজ্যে মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হবে ৪৮ হাজার। সে-ক্ষেত্রে প্রতিটিতে দু’জন করে সশস্ত্র পুলিশ দিলে মোট পুলিশ লাগবে ৯৬ হাজার। অথচ রাজ্যে মোট পুলিশকর্মীর সংখ্যা (গ্রিন পুলিশ ও মহিলা কনস্টেবল-সহ) ৫৫ হাজার। তাঁরা সকলে সশস্ত্রও নন। তা হলে কী ভাবে এই নির্বাচন হবে, কোথা থেকে পুলিশ পাওয়া যাবে প্রশ্ন তোলে কমিশন। বিচারপতি রাজ্যের কাছে জানতে চান, সরকার তো অন্যান্য রাজ্য থেকে পুলিশ আনতে রাজি। তা হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী নয় কেন? তার সুস্পষ্ট জবাব মেলেনি।
এই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার অন্তর্বর্তী রায় দিচ্ছেন বিচারপতি। গণতান্ত্রিক কাঠামো বজায় রেখে যাতে পঞ্চায়েত নির্বাচন করা যায়, সে-দিকে তাকিয়েই রায় দেওয়া হবে বলে আইনজীবীদের পর্যবেক্ষণ। মামলায় অন্য যে-সব বিষয় রয়েছে, সেগুলির ব্যাপারে রায় দেওয়া হবে পরে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.