রোজ ভ্যালী কর্তার গ্রেফতার চেয়ে আদালতে বিহার পুলিশ
রোজ ভ্যালী কর্তার বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানার আর্জি জানাতে চলেছে বিহার পুলিশ।
গত কাল রাত পর্যন্ত পটনার দু’টি জায়গায় রোজ ভ্যালী সংস্থার দু’টি অফিসে হানা দিয়ে পুলিশ ১২ জনকে আটক করে জেরা শুরু করে। একই সঙ্গে পাঁচ জন অভিযোগকারীকেও পুলিশ জেরা করে। পরে এই ১২ জনকে গ্রেফতারও করা হয়। আদালতে ১৭ জনের বয়ানই নথিভুক্ত করা হবে বলে বিহার পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। পটনায় এই সংস্থার তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রোজ ভ্যালীর এই তিনটি অ্যাকাউন্টে পাঁচ কোটি টাকা রয়েছে। পটনার এসএসপি মনু মহারাজ বলেন, “আদালতে দেওয়া এঁদের বয়ানের ভিত্তিতে আমরা রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইব। তারপর পটনা পুলিশের একটি দলকে কলকাতায় পাঠানো হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল পটনার নিশাবাদ এবং আদালত গঞ্জে রোজ ভ্যালীর দু’টি অফিসে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। নিশাবাদের অফিস থেকে ধরা হয় রিজিওনাল ম্যানেজার-সহ ১২ জনকে। উদ্ধার করা হয় নগদ পাঁচ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। বাজেয়াপ্ত করা হয় বিভিন্ন বন্ডের কাগজ। মনু মহারাজ বলেন, “হোটেল ব্যবসার নামে এই সংস্থা বেআইনি ভাবে এখানে টাকা তুলত। সেবির অনুমতি ছাড়াই টাকা তোলা হচ্ছিল।” ইতিমধ্যে উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদী সব জেলাশাসককে এই ধরনের লগ্নিকারী সংস্থার অফিস বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে রোজ ভ্যালী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিবময় দত্ত বলেন, “তদন্তের বিষয়টি জানি। আমাদের আইনজীবীরা পটনায় গিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন।”
বিহার ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের আর এক প্রতিবেশী রাজ্য, অসমে সারদা-সহ এই ধরনের বেসরকারি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান শুরু হয়েছে। সিবিআই তদন্ত হাতে নেওয়ার আগেই অসমে সারদা-কাণ্ডের কয়েকটি মামলার তদন্তে নামল কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দিসপুর থানায় দায়ের হওয়া দু’টি ও গীতানগরে দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করতে চলেছে বলে রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে দু’টি অভিযোগ আমানতকারীদের দায়ের করা। আর একটিতে, সারদা গোষ্ঠীর সংবাদকর্মীরা বেতন না পাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন।
বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যায়ও এই সব লগ্নিকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। ২০০০ সাল থেকে বরাকের ৩টি জেলায় শাখা খুলে বহু কোটি টাকা আত্মসাৎ করা ‘কসমিক নেগোসিয়েটরস্ লিমিটেড’-এর দুই মাথাকে গত রাতে নতুনবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অসিতকুমার নাথ ও রুনু নাথ নামে ওই দম্পতি সংস্থার সহকারী অধিকর্তা ছিলেন। তবে সংস্থার মাথা সঞ্জিৎ চক্রবর্তী এখনও অধরা। ত্রিপুরার সঞ্জিৎ কলকাতার কসবা এলাকায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বরাকে আরও এমন সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। অসমে কয়েকশো কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে জড়িত ‘জীবন সুরক্ষা গোষ্ঠী’-র মাথা উত্তম দাস দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর বা মহেশতলা এলাকায় আত্মগোপন করে আছেন বলে রাজ্য সিআইডি সূত্রে খবর।

শুনানি শেষ
কলকাতা হাইকোর্টে রোজ ভ্যালী বনাম সেবি-র মামলার শুনানি শেষ হল শুক্রবার। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানান, হাইকোর্টে গ্রীষ্মাবকাশ শুরু হবে ১৭ মে। তার আগেই রায় দেবেন তিনি। সেবি ২০১১ সালের জানুয়ারিতে রোজ ভ্যালীকে আমানত সংগ্রহ ও সম্পত্তি বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেয়। সংস্থাটি এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গেলে সেই মামলা খারিজ হয়। পরে সেবি সংক্রান্ত আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে অন্য একটি মামলা করে রোজ ভ্যালী। সেই মামলার শুনানিতে এ দিন সংস্থাটির পক্ষে বলা হয়, সেবি একতরফা ভাবে একটি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এই ধরনের বহু সংস্থাই আমানত সংগ্রহ করছে। সেবি-র তরফে বলা হয়, এই ধরনের অনেক সংস্থার বিরুদ্ধে একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.