|
|
|
|
সমবায় ব্যাঙ্কে অনিয়ম, তদন্তে নামল রাজ্য সরকার |
দিবাকর রায় • কলকাতা |
শহর এলাকার বেশ কয়েকটি সমবায় ব্যাঙ্কের (আরবান কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক) পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে তদন্ত শুরু করল রাজ্য সমবায় দফতর। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার নির্দেশ পাওয়ার পরে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বক্তব্য, বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও রাজ্যে শহরের বেশ কয়েকটি সমবায় ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে ভুয়ো নামে অ্যাকাউন্ট তৈরি, আর্থিক অসঙ্গতি-সহ বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী আরবিআইয়ের নির্দেশের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা সব কাগজপত্র খতিয়ে দেখছি। তদন্ত হচ্ছে। ব্যাঙ্কগুলিকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে। তবে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে হবে।” বৃহস্পতিবার সমবায় দফতরে সাতটি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।
রাজ্য সমবায় দফতর সূত্রে খবর, শহর এলাকার ১৫টি সমবায় ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া জেলার ওই ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল। অভিযোগ, ওই ব্যাঙ্কগুলিতে আরবিআইয়ের কেওয়াইসি (নো ইওর কাস্টমার) নির্দেশিকা মেনে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। ফলে বেশ কিছু ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই সেই ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ঋণ শোধের সময়ে গ্রাহকদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সমবায় দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “তদন্তে বোঝার চেষ্টা করছি, জেনে বুঝে এমন হয়েছে, নাকি গ্রাহকরাই তথ্য দেননি। যাঁদের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে, সেই গ্রাহকদের কাছে ফের তথ্য চাওয়া হচ্ছে। যাঁরা ঋণ নিয়েছেন তাঁদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। মোটা অঙ্কের টাকা যাঁরা জমা রেখেছেন, তাঁদের বিষয়ে তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। যদি ব্যাঙ্কের কর্মচারী বা পরিচালনের দায়িত্বে থাকা কেউ জড়িত থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আরবিআই সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে প্রথম বার সর্তক করে। সেই সময়ে ব্যাঙ্কগুলিকে ‘হাই রিস্ক’ গ্রাহকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় তথ্য (নো ইওর কাস্টমার) ব্যাঙ্কের ডেটাবেসে রাখার জন্য বলা হয়। অভিযোগ, ওই নির্দেশিকা পাওয়ার পরেও রাজ্যের প্রায় ১৫টি আরবান কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক সেই নির্দেশ কার্যত মানেনি। সে কারণে ক্ষুব্ধ আরবিআই কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন বিত্ত নিগম এবং রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের ১২০ এবং ২০ কোটি টাকা তছরূপ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইউকো ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে ওই টাকা লোপাট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। তার পরে আরবিআইয়ের নিদের্শে সমবায় দফতরের এই তদন্তের গুরুত্ব আছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বেশ কয়েকটি লগ্নি সংস্থার টাকা ভুয়ো নামে আরবান কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে রয়েছে বলেও অনুমান করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|