বললেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব |
সিপিএম অফিসে হামলা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই পথে নেমেছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। বিভিন্ন এলাকায় মিছিল হয়। সেই মিছিল থেকে সিপিএম অফিসে হামলা চালানোর অভিযোগও ওঠে। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই এই সব ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে বর্ণনা করলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়। বুধবার তিনি বলেন, “হয়তো কেউ কেউ অতি-উৎসাহী হয়ে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটিয়েছে। এমন ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি।” এ দিকে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও মিছিল করে তৃণমূল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তমলুকের নোনাকুড়ি বাজারে মিছিলের সময় সিপিএমের গ্রামীণ জোনাল কমিটির অফিস লক্ষ করে তৃণমূলের লোকেরা ইট, পাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্মল জানা বলেন, “জোনাল অফিসের কাছে দলের গণনাট্য শাখার কর্মী অজিত মান্নার চায়ের দোকানে ভাঙচুর করেন তৃণমূল সমর্থকরা। হলদিয়া সিটি সেন্টারের কাছে আমাদের লোকাল কমিটির অফিস ও পটাশপুর-২ ব্লকের প্রতাপদিঘি জোনাল কমিটির অফিসে ভাঙচুর করেছে।” |
|
ভাঙচুরের পর পটাশপুরের প্রতাপদিঘিতে সিপিএমের জোনাল পার্টি অফিস। ছবি: কৌশিক মিশ্র। |
তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন সিপিএমের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘দিল্লিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে এসএফআই ও সিপিএম সমর্থকরা যে ভাবে হেনস্থা করেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। নক্কারজনক এই আক্রমণের প্রতিবাদে আমাদের সমর্থকরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কোথাও ভাঙচুর হয়নি। দিল্লির ঘটনাকে লঘু করতেই আমাদের দলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ করছে।”
বুধবার সন্ধ্যায় আবার তৃণমূল সমর্থকরা মিছিল করার সময় ময়না বাজারে সিপিআই জোনাল ও আরএসপি লোকাল কমিটির অফিসে ভাঙচুর করে চার সিপিআই কর্মীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তৃণমূলের ময়নার ব্লক কার্যকরী সভাপতি সুব্রত মালাকার অবশ্য বলেন, “এ দিন আমাদের মিছিলের সময় আরএসপি পার্টি অফিসে ইট, পাটকেল জড়ো করেছিল। এই নিয়ে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ালেও কোন হামলা হয়নি।” বুধবার তমলুকে জেলা প্রশাসনিক অফিসের সামনে ও জেলা বিদ্যুৎ ভবনের অফিসের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন ডানপন্থী কর্মী সংগঠনের সদস্যরা। মেদিনীপুরে তৃণমূল প্রভাবিত সবক’টি সরকারি কর্মচারী সংগঠন একত্র হয়ে কালেক্টরেটে মিছিল করে। মঙ্গলবার রাতে খড়্গপুর লোকাল থানা এলাকার পপড়আড়ায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় জখম হন ৮ জন। এঁদের মধ্যে ৪ জন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জন সিপিএম কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। |
|
তমলুকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মিছিল (ডান দিকে)। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
ডেবরা, শালবনি, সবং সহ বিভিন্ন এলাকাতেও গোলমাল হয়। সবংয়ের দশগ্রাম লোকাল কমিটির অফিসে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। অফিসের আসবাব ভাঙচুর করা হয়। জোনাল সদস্য কালীপদ মাঝির বাড়িতে হামলা হয়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “কত দিন এই পরিস্থিতি চলবে জানি না।” সাঁকরাইল, দাঁতন, বেলদা থানা এলাকাতেও আক্রান্ত হন সিপিএমের অফিস এবং দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। জঙ্গলমহলেও সিপিএমের কার্যালয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে বেলিয়াবেড়া থানার তপসিয়া এলাকায় অবস্থিত সিপিএমের গোপীবল্লভপুর-২ জোনাল কার্যালয়ের দরজা ও জানালা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সিপিএমের ওই জোনাল সম্পাদক ব্যোমকেশ সিংহ। সিপিএমের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে এলাকায় মিছিল করে দলীয় ওই কার্যালয়টিতে হামলা চালায় তৃণমূল সমর্থকরা। স্থানীয় সিপিএম নেতা তপসিয়া লোকাল কমিটির দুই সদস্য সুনীলবরণ দাস ও শিবশঙ্কর খিলাড়িকে হেনস্থা করা হয়।
|
পুরনো খবর: দুই মেদিনীপুরেই প্রতিবাদ তৃণমূলের |
|