রেলের নিয়োগ সংক্রান্ত মেডিক্যাল পরীক্ষায় চিকিৎসকেরা ঘুষ নিচ্ছেন, এমন অভিযোগ বেশ কিছু দিন ধরেই সিবিআই দফতরে জমা পড়ছিল। কয়েক বার অভিযান চালিয়েও সিবিআই অফিসারেরা সুবিধা করতে পারেননি। প্রায় সাত দিন ধরে বসে থেকে বুধবার মালদহ রেলওয়ে হাসপাতালের এক চিকিৎসক-সহ দু’জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করলেন সিবিআই অফিসারেরা। সিবিআইয়ের ডিআইজি নবীনকুমার সিংহ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্ত চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনও চক্র রয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে।”
পূর্ব রেলের তরফে মালদহের ডিভিশন হাসপাতালে ১২২০ জন পরীক্ষার্থীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর নির্দেশ হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন চিকিৎসক সৌমেন দাস ও নীলেন্দু চক্রবর্তীকে। প্রতি দিন ৩৫ থেকে ৪০ জন ‘ফিট সার্টিফিকেট’ নেওয়ার জন্য হাজির হচ্ছেন। অভিযোগ, প্রতি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া হচ্ছিল। টাকা না দিলে সেই পরীক্ষার্থীকে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের কাছে।
পাঁচ জন পরীক্ষার্থী সৌমেনবাবু ও নীলেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সিবিআইয়ের টিম মালদহে গিয়ে নজরদারি শুরু করে।
অভিযোগ পেয়ে সিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শান্তনু করের নেতৃত্বে ২২ জনের একটি দল সাদা পোষাকে প্রায় সাত দিন ওই হাসপাতালে ঘাঁটি গাড়েন। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চিকিৎসক সৌমেন দাস ও তাঁর সহকারী মাধব দাসকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন সিবিআই অফিসাররা।
সিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শান্তনুবাবু বলেন, “টাকা নিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষায় পাশ করানোর অভিযোগে মালদহ রেল হাসপাতালের চিকিৎসক সৌমেন দাস ও তাঁর অ্যাটেনডেন্ট মাধব দাসকে হাতেনাতে ধরে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য এক জন চিকিৎসককে রেলের ভিজিল্যান্স বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।”
ধৃতদের বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হবে। মালদহের ডিআরএম রবীন্দরকুমার গুপ্তা বলেন, “রেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করতে সিবিআই সাহায্য চায়। আমরা সাহায্য করেছি।” |