টাইগারের শ্বশুরবাড়ির শহরে আসছেন গুরু গ্রেগ
শ জন ক্রিকেটরসিকের মধ্যে সাড়ে ন’জন ওপরের শিরোনামকে সংশোধন করে লিখবে— টাইগারের শ্বশুরবাড়ির শহরে আসছেন গুরু গ্রেগ নয়। অনেক উপযুক্ত হেডলাইন হবেফের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শহরে গুরু গ্রেগ!
কিন্তু পাঁচ বছর পর গ্রেগরি স্টিভন চ্যাপেলের কলকাতা আগমনের সঙ্গে সৌরভের কোনও সম্পর্ক নেই। গ্রেগ আসছেন এমএকে পটৌডি স্মারক বক্তৃতা দিতে। যার আয়োজক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকা। উদ্বোধনী বক্তৃতায় গত বছর তারা লাহৌর থেকে উড়িয়ে এনেছিল ইমরান খানকে। এ বার আরও চমকপ্রদ। অস্ট্রেলীয় বোর্ডের বিশেষ সম্মতি জোগাড় করে তাদের মহাবিতর্কিত ক্রিকেট উপদেষ্টাকে উড়িয়ে আনছে মেলবোর্ন থেকে!
পটৌডির প্রাক্তন নবাবের সঙ্গে (নতুন নবাব সঈফ) চ্যাপেল পরিবারের সম্পর্ক বরাবরই খুব মজবুত। ইয়ান ও গ্রেগ চ্যাপেলবিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে ঠোঁটকাটা দু’জন মানুষও বরাবর পটৌডি সম্পর্কে খুব সপ্রশংস। গ্রেগ টেস্টে কখনও পটৌডির বিরুদ্ধে না খেললেও ইয়ান একাধিক বার খেলেছেন। চ্যাপেলরা পটৌডির ভক্ত হয়ে যান মেলবোর্ন টেস্টে আহত পা নিয়ে তাঁর ৮৫ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস দেখে। সালটা ১৯৬৭-’৬৮। খেলার পর গ্রেগের দাদা ইয়ান মুগ্ধ হয়ে সাক্ষাৎকার দেন, ‘‘একটা চোখ এমনিতেই নেই। তার ওপর একটা পা কাজ করছে না। প্রতিবন্ধীর প্রতিবন্ধী। সেই লোকটা গ্রাহাম ম্যাকেঞ্জিকে কী করে হেলমেটহীন ফাস্ট উইকেটে এমন তুলে তুলে মেরেছিল দেখে আমি অভিভূত হয়ে যাই।” চ্যাপেল পরিবার হতবাক হয়ে গেছিল যে, সফরে নিজস্ব ব্যাট বলে কিছু নিয়ে আসেননি টাইগার। ব্যাট করতে যাওয়ার সময় যার ব্যাট হাতের কাছে দেখতে পেতেন তারটাই নিয়ে চলে যেতেন। এমনকী সেটা চন্দ্রশেখরের মতো টেলএন্ডারের ব্যাট হলেও!
এমনিতে ভারত সফর। তাও আবার কিনা ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ চলাকালীন আগমন। গ্রেগের কাছে ভয়ঙ্কর স্পর্শকাতর এলাকা। কিন্তু পটৌডির প্রতি তাঁদের এমনই গভীর অনুরাগ যে, এক কথায় আনন্দবাজার সংস্থাকে ‘হ্যাঁ’ করে দেন মেজ চ্যাপেল। পটৌডি খানদানের অনুমোদন-সহ আগামী বুধবারের সাম্মানিক বক্তৃতাতে এ বারও শর্মিলা উপস্থিত থাকবেন। বুধবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের চালু করা প্রথম পটৌডি বক্তৃতাতে কিন্তু তাঁকে দেখা গেল না। পরিবারের কাউকেও না। সম্মানীয় বক্তা সুনীল গাওস্কর জানালেন, বেগম সাহেবা আমাকে ফোনে বললেন, ওঁর শরীরটা ভাল যাচ্ছে না।
শর্মিলার অনুপস্থিতিতে হালকা জল্পনা তৈরি হল, তা হলে কি সত্যি মিটমাট হয়ে গিয়েছে বোর্ড আর পটৌডি খানদানে? না কি সংশয়ের ছোট ছোট ক্ষত এখনও জোরদার ভাবে অক্ষত? বোর্ড প্রধান শ্রীনিবাসনের বিনীত বক্তব্যে এটুকু বোঝা গেল, ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের ট্রফির নামকরণ এবং আইপিএলের জন্য প্রদেয় টাকা নিয়ে দু’পক্ষে যে সংঘাত চলছিল, তারা অন্তত তা মিটিয়ে ফেলতে চায়।
পটৌডির বেশ কিছু সতীর্থকে দেখা গেল রাতের অনুষ্ঠানে। ইঞ্জিনিয়ার, দুরানি, প্রসন্ন, বেদী, আব্বাস আলি বেগ, ঘাউড়ি, ওয়াড়েকর, বোড়ডে, অজিত পাই। তাঁদের কারও বলার সুযোগ ছিল না। গাওস্করও আক্রমণাত্মক মেজাজে যাননি। নির্ভরযোগ্য গোড়াপত্তনকারীর মোড-এ ছিলেন। তবে সচিনদের সামনে রেখে বললেন, পটৌডি ভারতীয় টেস্ট ব্যাটিংকে সাবধানতার চিরপরিচিত গণ্ডি থেকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন মুক্ত আকাশে।
ইমরান যে ভাবে পটৌডি-বক্তৃতার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন টাইগারোচিত ফ্ল্যামবয়েন্স আর প্রতিবাদী মেজাজ দিয়ে। বোর্ড অনুষ্ঠানের বাতাবরণে তা ছিল না। আঙ্গিকটা অনেক বেশি সতর্ক সমঝোতার। তাই আবেগটা ডানা মেলল না প্রাক্তন পটৌডির অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মনোভাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। বোর্ড সদস্যরা পর্যন্ত অনেকে বেরিয়ে এসে বললেন, আবহটা যে এত নিষ্প্রাণ হতে পারে ভাবাই যায়নি। পটৌডির কোনও কোনও সতীর্থকে তো বেশ বিরক্তই দেখাল।
গ্রেগ চ্যাপেলতিনি কোন পথে হাঁটবেন? নিরাপদ থাকবেন? না কি টিম ইন্ডিয়ার লাগাতার ব্যর্থতার সময়ে আসা সংক্ষিপ্ত ভারত সফরে চিরপরিচিত সেই অন ড্রাইভের ফুলকি দেখা যাবে? ভারতীয় ক্রিকেট মহল আগামী সাত দিন তাদের কল্পনাকে বিস্তৃত করে এবং না করে এর উত্তর খুঁজবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.