হাতেখড়ি
ঘেঁটে ঘ। প্রথম বার স্টক এক্সচেঞ্জের দরজায় কড়া নাড়ার পর এমন দশা হয় অনেকেরই। ডি-ম্যাট, স্মল ক্যাপ, লার্জ ক্যাপ, পিই রেশিও-র মতো দাঁতভাঙা শব্দের ভিড়ে কেমন যেন গুলিয়ে যায় সব কিছু। মনে হয়, লগ্নির জন্য এ বড় শক্ত জায়গা। অথচ চড়া রিটার্নের খোঁজে শেয়ার বাজারে উঁকিও দিতে চান অনেকে। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক থেকে যায় স্রেফ সাহসের অভাবে। শেয়ার বাজার সম্পর্কে আমাদের অস্পষ্ট ধারণাই যার কারণ।
কিন্তু দেকো সিকিউরিটিজ-এর ডিরেক্টর অদিতি নন্দীর পরামর্শ, “বাজারে লগ্নির প্রথম শর্তই হল এ নিয়ে অযথা ভয় না পাওয়া। জানবেন, বাজারে টাকা ঢালা মানেই তা জলে যাওয়া নয়। দরকার শুধু গোড়ার বিষয়গুলি ভাল করে জেনে নেওয়া।” তাঁর মতে, প্রাথমিক ধারণা পোক্ত আর স্বচ্ছ হলে, বিষয়টা মোটেই জটিল মনে হবে না। একটু বুদ্ধি আর সঙ্গে লগ্নির বর্ণ পরিচয়টা পড়া থাকলে এগোনোর কৌশলও আপনা থেকেই শেখা হয়ে যাবে। এই গোড়ার বিষয়গুলি নিয়ে অদিতির সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসা শেয়ার বাজারের ‘অ আ ক খ’-র পাঠই এখানে আপনাদের সঙ্গে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

শুরুর খোঁজ
ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসে টাকা জমা বা তোলার কাজ যেমন আপনি নিজেই করতে পারেন, এখানে কিন্তু সেটা হবে না। কারণ শেয়ার বাজারে লেনদেন চালাতে হয় ব্রোকার সংস্থার মাধ্যমেই। কিন্তু সংস্থা বাছবেন কী ভাবে?
গোড়াতেই শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)-র www.sebi.gov.in ওয়েবসাইটে যান। সেখানে তাদের অনুমোদিত ব্রোকার সংস্থাগুলির তালিকা আছে। এমনকী তাদের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বা মামলা চললে, তারও খুঁটিনাটি পাবেন সাইটে। এ বার আপনার সুবিধামতো ব্রোকারকে বেছে নিন। এবং যোগাযোগ করুন।

বেশি টাকা নেই
অনেকেরই ধারণা, কাড়ি কাড়ি টাকা না থাকলে শেয়ারে লগ্নি করা যায় না। ভুল। বরং লগ্নির পথে সদ্য হাঁটতে শুরু করেছেন যাঁরা, প্রথমে তাঁদের খুব বেশি টাকা না লাগানোই ভাল। বরং ধীরে ধীরে শুরু করুন। ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য সঞ্চয়ের নিরাপদ খাতে টাকা রাখার পর বাড়তিটুকু লাগান। সেটা মাত্র ৪-৫ হাজারও হতে পারে। কিংবা যে টাকাটা অন্য সময়ে বাজে খরচ হয়ে যায়, সেটাকেও প্রাথমিক লগ্নির জন্য বরাদ্দ করতে পারেন। তেমন হলে শুরুতে একটাই শেয়ার কিনুন। তার পর ধীরে সুস্থে লগ্নি বাড়াতে থাকুন। এসআইপি-র মতো প্রতি মাসে একটা করে শেয়ার কিনতে পারেন।
অনেক ব্রোকার সংস্থা অবশ্য কম লগ্নিতে রাজি হয় না। তাই পছন্দসই সংস্থাকে খুঁজে বার করার পরিশ্রমটুকু আপনাকে করতেই হবে। দেখে নেবেন, শেষেমেশ যাকে পেলেন, সে সেবি-র নথিবদ্ধ তো!

প্রথমে কী করতে হবে
সব থেকে আগে দরকার তিনটি অ্যাকাউন্ট
১) নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
২) ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্ট।
৩) ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট। যাকে বলে ইউনিক ক্লায়েন্ট কোড।
শেয়ার কেনা-বেচার জন্য চেকের মাধ্যমে টাকা দিতে বা নিতে লাগে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।
ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টের কাজ আপনার কেনা শেয়ার জমা রাখা। পুরো নাম ডিমেটিরিয়ালাইজেশন অফ শেয়ার্স। এতে একটি অনলাইন অ্যাকাউন্টে আপনার নামে শেয়ারগুলি জমা থাকে। ডি-ম্যাট খোলা যায় ব্যাঙ্ক বা ব্রোকার সংস্থায়।
আর শেয়ার কেনা-বেচার মূল প্রক্রিয়া চলে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট মারফত। যে ব্রোকার সংস্থার মাধ্যমে আপনি স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার কেনা-বেচা করবেন, তারাই এটা খুলে দেবে।

শেয়ার বাছার দাওয়াই
সবাই চায় সেই সব শেয়ারে টাকা লাগাতে, যেখানে লাভের গুড় খুব মিষ্টি। কিন্তু ঝুঁকির তেতো ওষুধ গেলার সম্ভাবনা কম। তা তেমন শেয়ার বাছাই করবেন কী করে?
• ভেবে দেখুন, কোন ধরনের শিল্প বা সংস্থা সম্পর্কে আপনি মোটামুটি জানেন বা একটা ধারণা আছে। অনেকে গাড়ির ব্যাপারে আগ্রহী। কেউ কেউ আবার খোঁজখবর রাখেন ওষুধ বা ভোগ্যপণ্য সংস্থা সম্পর্কে। পরিচিত বিষয় নিয়ে এগোলে সুবিধা হবে। নিজের আগ্রহেই সংস্থা বা শিল্পের খুঁটিনাটি খবর রাখবেন আপনি। যা লগ্নিতে কাজে দেবে।
• ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) বা বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই)-এর ওয়েবসাইটে যান। সেখানে সব সংস্থার ব্যালান্স শিট দেওয়া থাকে। কোন সংস্থার আর্থিক অবস্থা এই মুহূর্তে কেমন, সেটা বুঝে নিতে পারবেন। এ বার ব্যালান্স শিটে কী দেখবেন জেনে রাখুন
• আর্নিংস পার শেয়ার। মানে শেয়ার পিছু আয়। সংস্থার নিট লাভ করার সম্ভাবনা কতটা, সেটাই যাচাই করা হয় এর মাধ্যমে। শেয়ার পিছু আয় হিসাব করার জন্য প্রথমে সংস্থার মোট আয় থেকে লগ্নিকারীদের দেওয়া ডিভিডেন্ড বাদ দেওয়া হয়। তার পর সেটাকে বাজারে সংস্থার মোট শেয়ার সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। এর থেকে বোঝা যায় সংস্থার মুনাফার কতটা অংশ প্রতিটি শেয়ারে বরাদ্দ হচ্ছে। এটা ১০ টাকার কম হলে সেই শেয়ার না কেনাই ভাল।
• পি/ই রেশিও। অর্থাৎ প্রাইস টু আর্নিং রেশিও। বাজারে কোনও সংস্থার শেয়ারের দামকে শেয়ার পিছু আয় দিয়ে ভাগ করে এটা বার করা হয়। এর থেকে বোঝা যায় সংস্থা কতটা দামি। এ ক্ষেত্রে একই সঙ্গে সংস্থাটি যে শিল্পের অন্তর্ভুক্ত, তার পি/ই রেশিও-ও দেখতে হবে। এ বার দু’টির তুলনা করুন। অনেকেই মনে করেন সংস্থার রেশিও শিল্পের রেশিও-র থেকে কম হলেই ভাল। বেশি হলে সংস্থাটি ‘ওভারপ্রাইসড’ (দাম যা হওয়া উচিত, তার থেকে বেশি) হওয়ার ভয় থাকে। সে ক্ষেত্রে সামান্য এ দিক-ও দিকেই শেয়ার দর ঝপ করে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা।
• প্রাইস টু বুক ভ্যালু রেশিও। কোনও সংস্থার শেয়ার কেনার অর্থ তার অংশীদার হওয়া। তত দিন পর্যন্ত, যত দিন না তা আপনি বেচে দিচ্ছেন। আর প্রাইস টু বুক ভ্যালু রেশিও হল, কোনও কারণে সংস্থাকে পাৎতাাড়ি গুটোতে হলে, লগ্নিকারী তাঁর অংশিদারীর সাপেক্ষে কত টাকা হাতে পাবেন তারই আনুপাতিক পরিমাপ।
বুক ভ্যালু বলতে বোঝায় শেয়ার পিছু সংস্থার সম্পদ, যা ব্যালান্স শিটে দেখানো থাকে। দেখা হয়, সংস্থাটির আজকে যা শেয়ার দর তা তার নিট সম্পদের অনুপাতে কতটা। এই রেশিও বিভিন্ন শিল্পের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা হয়। তাই এ ক্ষেত্রেও সংস্থা যে শিল্পের অন্তর্ভুক্ত তার প্রাইস টু বুক ভ্যালু রেশিও দেখুন। বলা হয়, শিল্পের থেকে সংস্থার রেশিও কম হলেই ভাল।
• ইন্টারেস্ট কভারেজ রেশিও। সংস্থাটি বাজারে তার ধার শোধের জন্য যত টাকা সুদ দেয়, তার তুলনায় কত গুণ নগদ তার ভাঁড়ারে আছে, এটা তারই অনুপাত। এর মাধ্যমে জানা যায়, সংস্থার আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি কি না।
• বিটা। বিটা আপনাকে বলে আপনার পছন্দের শেয়ার সূচকের তালে কতটা তাল মেলায়। যে শেয়ারের বিটা ১, সেটি শেয়ার সূচকের সঙ্গে একদম পা মিলিয়ে হাঁটবে। যার বিটা ১-এর কম সে চলবে পিছু পিছু। আর যার ১-এর থেকে বেশি সে দৌড়বে সূচকের আগেই।

সবুরে মেওয়া ফলে
বড় মাছ ধরতে গেলে ধৈর্য ধরতেই হয়। শেয়ার বাজারে টাকা ঢালার আগে মনে মনে পণ করুন যে, ‘স্বল্প মেয়াদে লগ্নি করব না।’ মনে রাখবেন পাঁচ বছরের বেশি সময় যদি শেয়ার ধরে রাখতে পারেন, তা হলে যে কোনও সঞ্চয় প্রকল্পের থেকে সাধারণত তা বেশি রিটার্ন দিতে পারে।

সব থেকে ভাল ফল পেতে
শেয়ারে লগ্নি করে সব থেকে ভাল ফল পেতে না কি প্রথমে অন্তত ১০-১২টি শেয়ার বাছা উচিত। যেগুলি ছড়িয়ে থাকবে চার-পাঁচটি শিল্পে। এর ফলে ঝুঁকি কমিয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়ার ব্যাপারে একটা সামঞ্জস্য তৈরি করা যায়। বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে এই ভাবে লগ্নি করেই শেয়ার বাজার থেকে ভাল মুনাফা ঘরে তুলেছেন অনেকে। এমনকী মিউচুয়াল ফান্ড ও ইটিএফ-এর ফান্ড ম্যানেজাররাও এই পদ্ধতিই অনুসরণ করেন। তবে এক সঙ্গে বেশি টাকা লাগাতে অসুবিধা থাকলে শেয়ারগুলি এক সঙ্গে কিনবেন না। বরং পরিকল্পনা মাফিক দফায় দফায় কিনুন।

চোখ বন্ধ করে ভরসা নয়
চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করলে ঠকতেই পারেন। তাই কতগুলো বিষয়ে সাবধান থাকুন।
১) প্রথাগত শিক্ষা না থাকলে ফিউচার অ্যান্ড অপশন্স-এ কখনও লগ্নি করবেন না। সেখানে যেমন সীমাহীন মুনাফা হওয়ার সুযোগ আছে, তেমনই বিপুল ক্ষতির মুখেও পড়তে পারেন আপনি।
২) পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি কাউকে দেওয়া উচিত নয়। এটি দেওয়ার অর্থ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আপনার অ্যাকাউন্ট পরিচালনার অধিকার দেওয়া। তখন অ্যাকাউন্টটি তার নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে। অর্থাৎ কী শেয়ার কিনবেন, কখন কিনবেন, কখন বেচবেন সেই সমস্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন সেই ব্যক্তি। এর ফলে আপনার অগোচরে শেয়ার কেনা-বেচা নিয়ে হয়তো অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে, যার উপর আপনার কোনও হাত থাকবে না। অথচ অ্যাকাউন্ট আপনার নামে হওয়ায় সেই সব কিছুর আর্থিক দায় নিতে হবে আপনাকেই।
৩) ব্রোকিং সংস্থায় গিয়ে ফর্ম ভর্তির সময় সতর্ক থাকুন। প্রতিটি পাতায় কী আছে, সেটা কেন পূরণ করতে হবে এই সব কিছু জেনে সই করুন। সেবির ওয়েবসাইটে এমন অনেক অভিযোগ দেখা যায় যে, ফর্ম সই করার সময় খেয়াল না করে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি-তে সই করে অনেকে ভুগেছেন।
৪) ভর্তি না করা ডেলিভারি ইনস্ট্রাকশন স্লিপ সই করে কাউকে দেবেন না। এটা চেক বইয়ের মতো। আপনি কি ব্ল্যাঙ্ক চেক সই করে কাউকে দেন? হাতের শেয়ার বেচার সময় এই স্লিপের মাধ্যমেই আপনার ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্ট থেকে সেগুলি ডেলিভারি করতে হয়। কাজেই ফাঁকা ডেলিভারি ইনস্ট্রাকশন স্লিপে সই করে দিলে শেয়ার আপনার অজ্ঞাতসারে অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটা অবশ্য এখন বৈদ্যুতিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেও করা যায়। সে ক্ষেত্রে ডেলিভারি স্লিপ সই করে ব্রোকারের অফিসে দিয়ে আসার দরকার পড়ে না।
৫) কোনও শেয়ারের পিছনে ছোটার আগে দেখে নিন তার ডেলিভারি পার্সেন্টেজ। এনএসই বা বিএসই-র ওয়েবসাইটে ‘রেট কোট’ লিঙ্কে এটা পাবেন। বাজারে যে শেয়ারে লগ্নি হচ্ছে, তার কতটা প্রতিনিয়ত ডেলিভারি হচ্ছে এটা তারই হার। ডেলিভারি বলতে বোঝাচ্ছে, কতটা শেয়ার সত্যিসত্যি হস্তান্তর বা কেনা-বেচা হচ্ছে। বলা হয় ডেলিভারি পার্সেন্টেজ বেশি হওয়ার অর্থ, শেয়ার হাত বদলাচ্ছে বা নগদে কেনা-বেচা হচ্ছে বেশি এবং ওই শেয়ার নিয়ে ফাটকা খেলা হচ্ছে কম। আর ওই হার কম হওয়ার অর্থ উল্টোটা। তখন যে কোনও মুহূর্তে ওই সব শেয়ারের দাম আচমকা পড়ে যেতে পারে।
এই প্রসঙ্গে বলি, ১৯৯২ সালে হর্ষদ মেহতা শেয়ার কেলেঙ্কারির সময় একটি নির্দিষ্ট সংস্থার শেয়ার দর প্রতি দিন ১০০/২০০ টাকা করে বাড়ত। ফলে অনেকেই ওই শেয়ারের প্রতি আকৃষ্ট হন। কিন্তু তখন যদি ওয়েবসাইটে তার ডেলিভারি পার্সেন্টেজ দেখে নেওয়ার সুবিধা থাকত, তা হলে সাধারণ লগ্নিকারীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হত না। কারণ তাঁরা বুঝতে পারতেন যে, আসলে ওই শেয়ার নিয়ে তুমুল ভাবে ফাটকা খেলা চলছে।
৬) যে কোনও শেয়ারে টাকা লাগানোর আগে, ভাল করে সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট দেখে নিন। সাধারণত, আজকের দিনে যে কোনও পেশাদার সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটটিকে ‘আপ-টু-ডেট’ রাখে। ভুয়ো সংস্থাকে চিনতে কিছুটা সাহায্য করবে এই প্রক্রিয়াটি।

তিন মন্ত্র
• অতি লোভ করলে ডুবতে পারেন। আশানুরূপ লাভ দেখতে পেলেই বিক্রি করে বেরিয়ে যান।
• শেয়ার কিনে প্রতি দিন তার গতিপ্রকৃতি দেখবেন না। দিগ্ভ্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন। বরং একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর দেখুন। তবে একেবারে ভুলে যাবেন না।
• আবেগকে প্রশ্রয় দেবেন না। অনেকে নিজের প্রথম লগ্নি করা বা বহু বছর ধরে বাবা-কাকার হাত ঘুরে আসা শেয়ার নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এবং বেচতে চান না। এটা মস্ত ভুল।
একটা কথা মনে রাখবেন, বুদ্ধি দিয়ে বিনিয়োগ করলে শেয়ার বাজার হয়তো আপনাকে নিরাশ করবে না।

ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ-এর পরামর্শ
কী করবেন কী করবেন না
সেবির নথিভুক্ত স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন করুন। অনথিভুক্ত মধ্যস্থতাকারীর কাছে যাবেন না।
ব্রোকারের কাছে অ্যাকাউন্ট খোলার আগে সব নিয়ম পড়ুন। অবাস্তব রিটার্নের প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পা দেবেন না।
লেনদেনের নথিতে কোনও বিষয়ে সন্দেহ হলে প্রশ্ন করুন। ঝুঁকির কথা ভুলবেন না।
লগ্নির সুরক্ষা, ঝুঁকি ও প্রাপ্তির মূল্যায়ন করুন। বাজার বহির্ভূত লেনদেন করবেন না।
নো ইওর ক্লায়েন্ট
ফর্ম ঠিক মতো ভরুন।
জল্পনা, গুজব বা অযাচিত পরামর্শের
ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবেন না।
প্রতিটি লেনদেন চুক্তিপত্রের মাধ্যমে করার চেষ্টা করুন।
চুক্তিপত্র যাচাই করুন। সন্দেহ হলে
স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে যান।
হঠাৎ লেনদেনের পরিমাণ বা দর
বাড়তে দেখলে বা বিজ্ঞাপনে বিশ্বাস করে
আর্থিক ভাবে দুর্বল সংস্থার শেয়ার কিনবেন না।
সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা, পরিচালনা, আর্থিক অবস্থা
ও সাম্প্রতিক তথ্য যাচাই করুন। সাহায্য নিন সংস্থা
ও স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ইত্যাদির।
টিভি চ্যানেল, ওয়েবসাইট
বা এসএমএসে দেওয়া উপদেশ
অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করবেন না।
প্রয়োজনে সঞ্চয় কত দ্রুত ভাঙাতে
পারবেন তা মাথায় রাখুন।
সংস্থার আর্থিক অবস্থার প্রচার
বা বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত হবেন না।
ঝুঁকি বইতে পারার
মতো লগ্নি-কৌশল নিন।
সকলকে এক দিকে ছুটতে দেখলেও বিনা
যুক্তিতে সেই পথ অনুসরণ করবেন না।
ব্রোকার/সাব-ব্রোকারকে
পরিষ্কার ও স্বচ্ছ নির্দেশ দিন।
পোস্ট ডেটেড চেক-এর মাধ্যমে নিশ্চিত
প্রাপ্তির গ্যারান্টিতেও প্ররোচিত হবেন না।
অতি লোভ না করে সঠিক সময়ে শেয়ার বিক্রি করুন। সন্দেহ বা অভিযোগ থাকলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে যান।
চারপাশে কী ঘটছে সে বিষয়ে সজাগ থাকুন। বন্ধুস্থানীয় বিনিয়োগকারীর চাপে পড়ে লগ্নি করবেন না।
শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে যথাসময়ে টাকা দিন। ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টের ফাঁকা
ডেলিভারি ইনস্ট্রাকশন স্লিপে সই করে
রাখবেন না বা কাউকে দেবেন না।
বিক্রির ক্ষেত্রে যথাসময়ে শেয়ার হস্তান্তর করুন।
ডেলিভারি ইনস্ট্রাকশন স্লিপ যত্ন করে ব্যবহার করুন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.