রাজ্য পুলিশের কর্মীর ভুল চিকিৎসা করায় বাঁকুড়ার এক দন্ত চিকিসককে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করল জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। প্রশ্ন উঠেছে, ওই চিকিৎসকের ডিগ্রি ও চিকিৎসা করার অনুমতি নিয়েও।
যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই প্রিয়রঞ্জন সাহা চৌধুরী বাঁকুড়া শহরের চাঁদমারিডাঙার বাসিন্দা। নিজের বাড়ির নীচ তলায় তাঁর চেম্বার। বাঁকুড়া থানার শালবনি এলাকার বাসিন্দা, রাজ্য পুলিশের কর্মী সমীর মণ্ডল জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালে দাঁতে ব্যথা অনুভব করায় তিনি প্রিয়রঞ্জনবাবুর কাছে গিয়ে ভুল চিকিৎসার শিকার হন। অভিযোগকারীর আইনজীবী আনন্দমোহন মণ্ডল বলেন, “২০০৯ সালেই প্রিয়রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে ৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে অভিযোগ করা হয়। গত শুক্রবার ক্রেতা সুরক্ষা আদালত তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় দেয়।” |
সমীরবাবু জানান, উপরের পাটির বাঁ দিকের একটি দাঁতে যন্ত্রণা হওয়ায় তিনি ওই চিকিৎসকের কাছে যান। উনি দাঁতের এক্স-রে করিয়ে সাত দিন পরে যোগাযোগ করতে বলেন। সমীরবাবুর অভিযোগ, “সাত দিন পর ওই ডাক্তার আমার উপরের পাটির বাঁ দিকের তিনটি দাঁত মাড়ি-সহ তুলে ফেলে দেন। প্রচণ্ড রক্তপাত শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টাতেও ডাক্তার রক্তপাত বন্ধ করতে পারেননি। এর পরে এক ব্যক্তিকে ডেকে আনেন ডাক্তার। দু’জনে মিলেও রক্ত পড়া থামাতে ব্যর্থ হন। বেগতিক দেখে সমীরবাবুর ভাইয়ের এক বন্ধু বাঁকুড়া মেডিক্যালের এক হাউসস্টাফকে ডেকে নিয়ে এসে অবস্থার সামাল দেন।” পরে অন্য এক চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ভেল্লোর গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে কিছুটা সুস্থ হন বলে জানান সমীরবাবু।
সেখান থেকে ফিরে আসার পরেই জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে অভিযোগ করেন সমীরবাবু। তাঁর দাবি, “ওই ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার জন্য আমার এখন কথা বলায় সমস্যা হয়। কথা জড়িয়ে যায়। বাঁ দিকের দাঁতে কিছু চিবোতে পারি না।” প্রিয়রঞ্জনবাবু তাঁর চেম্বারের সাইনবোর্ডে যে শিক্ষাগত মানের কথা উল্লেখ করেছেন, তা নিয়েও এই মামলার রায়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
বাঁকুড়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ দিন্দা বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত শুরু করব।” এ দিন সকালে প্রিয়রঞ্জনবাবুর চেম্বারে গিয়ে তাঁর দেখা মেলেনি। তাঁকে মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি অপেক্ষা করতে বললেও উপরতলা থেকে নামেননি। এক মহিলা পরে বলেন, ডাক্তারবাবু অসুস্থ। দেখা করতে পারবেন না। বিকেল থেকেও তাঁর মোবাইল ছিল স্যুইচ অফ। |