কলে জল মেলে না, ভরসা ঝরনা |
বছরের পর বছর জলকষ্ট চলছে গ্রাম জুড়ে। দু’বছর আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বার টানা কয়েক মাস বৃষ্টি না হওয়ায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ভুটান সংলগ্ন মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের মাকরাপাড়া এলাকায়। প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে ভুটান পাহাড়ের ঝর্নার জল বয়ে আনতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে ভুটান পাহাড়ের ঝর্না থেকে গ্রামে জল সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আজ, বুধবার দফতরের ইঞ্জিনিয়ররা মাকরাপাড়া গ্রামে যাবেন। জলপাইগুড়ির নির্বাহী বাস্তুকার সুজিত মণ্ডল বলেন, “ভুটানের ঝর্নার জল আনা সম্ভব হলে ওই গ্রামের জলকষ্ট দূর হবে।” |
এটাই নিত্য রুটিন বীরপাড়া ব্লকের মাকরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের। ভুটান পাহাড়ে রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি। |
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, ৪০০ ফুট গভীরে জলস্তরের সন্ধান পেয়ে তিন বছর আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে গ্রামে জল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই সময় গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় কল বসানো হয়। কিন্তু এলাকার একটি অংশে পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব হলেও বাকি অংশ শুকনো অবস্থায় পড়ে থাকে। সেখানকার বাসিন্দাদের ঘুম থেকে উঠে জ্যারিকেন নিয়ে পাহাড়ে চলে যেতে হচ্ছে জলের সন্ধানে। গত দু’মাসে জলস্তর এতটাই নীচে নেমেছে যে পাম্পে জল উঠছে না। ফলে গ্রামে যে অংশে জল সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছিল সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। ওই এলাকার লোকজনকেও জলের খোঁজে পাহাড়ে ছুটতে হচ্ছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ দাস বলেন, “পাম্পে জল উঠছে না। গ্রাম শুকিয়ে কাঠ হয়েছে। বিষয়টি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তাদের জানানো হয়েছে।” ভুটানের পাহাড়ে গেলে যে জল মিলছে সেটাও নয়। স্থানীয় সন্তোষ ত্রয়ী বলেন, “দু কিলোমিটার দূরে ভুটানের ঝর্না থেকে জল এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিন্তু সব সময় জল মিলছে না। এ ভাবে ক’দিন চলতে হবে জানি না।” সন্তোষের মতো একই প্রশ্ন গ্রামের ৮ হাজার বাসিন্দার। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলপাইগুড়ি জেলার এক কর্তা জানান, ওই প্রশ্নের উত্তর খুব সহজে দেওয়া সম্ভব নয়। সমস্যা মেটাতে ভুটান পাহাড়ের ঝর্নার জল বয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। ভুটানের আধিকারিকদের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা চলছে। বুধবার মাকরাপাড়া গ্রামে গিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন।
|