বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ব্যারাকে মৃত্যু পুলিশকর্মীর, আহত ২
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক পুলিশ অফিসারের। গুরুতর আহত এক পুলিশকর্মীকে ভর্তি করা হয়েছে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে। ঘটনার জেরে বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্মীকে মারধর করায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে হাসনাবাদ থানায়। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মৃত এএসআইয়ের নাম ইন্দ্রজিৎ হালদার (৩৮)। তাঁর বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। দেহ বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসনাবাদ থানার লাগোয়াই রয়েছে পুলিশ ব্যারাক। বাড়িটি দীর্ঘদিনের পুরনো, মেরামতির অভাবে বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও খুব খারাপ। ওই ব্যারাকেই থাকতেন হাসনাবাদ থানার কনস্টেবল সমর দাস। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ বারান্দায় লোহার তারে কাপড় শুকোতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে সহকর্মীরা বিদ্যুতের মেন সুইচ বন্ধ করে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে। এর কিছু পরে এএসআই ইন্দ্রজিৎবাবু স্নান সেরে ব্যারাকে ফিরে ওই লোহার তারেই কাপড় শুকোতে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়েন। মাটিতে পড়ে গিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
মৃত ইন্দ্রজিৎ হালদার।
স্বাভাবিকভাবেই এমন ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় ব্যারাকে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন অন্য পুলিশকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, সমরবাবু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর বার বার স্থানীয় বিদ্যুৎ দফতরে যোগাযোগ করা হলেও কোনও কর্মী আসেননি। ইতিমধ্যে আরও একজন পুলিশকর্মীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত পুলিশকর্মীরা গিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের থানায় নিয়ে আসেন। দেখা যায়, পুরনো তার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শর্ট সার্কিটের ফলে পুরো ব্যারাকই বিদ্যুৎবাহী হয়ে পড়ে। যার ফলেই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানান বিদ্যুৎকর্মীরা। বিদ্যুৎকর্মীদের আসতে দেরি নিয়ে চেঁচামেচির মধ্যেই আচমকা এক বহিরাগত ঘুঁষি মারেন বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজার রাজীব রায়চৌধুরীকে। তাঁকেও সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে।
এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সহকর্মীর মৃত্যুতে শোকাহত গোটা থানা। কান্নায় ভেঙে পড়ে এক পুলিশ অফিসার বিদ্যুৎ গাইন বলেন, “সমরকে হালপাতালে ভর্তি করে ব্যারাকে ফিরে সে কথাই বলছিলাম ইন্দ্রজিৎবাবুকে। কথার ফাঁকেই তিনি তারে কাপড় মেলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়েন। প্রথম ঘটনার পরই বিদ্যুৎ দফতরকে বার বার ফোন করা হলেও তাঁরা আসেননি। সময়মত এলে একটা মানুষকে এ ভাবে মরতে হত না।”
ব্যারাকে বিদ্যুতের সংযোগ পূর্ত দফতরের করা বলে দাবি করে বিদ্যুৎ দফতরের বসিরহাট ডিভিশনাল ম্যানেজার প্রসূন ভৌমিক বলেন, “জরুরি কাজে দফতরের দু’টি গাড়ি বাইরে থাকায় থানায় যেতে দেরি হচ্ছিল বলে পুলিশের গাড়ি গিয়ে তাঁদের নিয়ে আসে। থানায় পুলিশের সামনেই একজন রাজীববাবুকে মারধর করে। দফতরের কর্মীর উপর হামলার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা জানাচ্ছেন, হাসনাবাদ থানায় শর্ট-সার্কিট হওয়ার ঘটনায় তাঁদের কোনও গাফিলতি নেই। থানার ভিতরে ওয়্যারিং-সহ অন্যান্য কাজের দায়িত্বে থাকে পূর্ত দফতর বা থানারই নিয়োগ করা কোনও এজেন্ট। তাঁদের কোনও কাজে গাফিলতি থেকেই শর্ট-সার্কিটের ঘটনা ঘটতে পারে বলে বিদ্যুৎ কর্তারা মনে করছেন।
বিদ্যুৎ ভবন সূত্রে খবর, ওই পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর ঘটনায় হাসনাবাদে বণ্টন সংস্থার যে স্টেশন ম্যানেজার দায়িত্বে ছিলেন তাঁকে থানায় তুলে আনা হয়। বিদ্যুৎ ভবনের পদস্থ কর্তাদের মধ্যস্থতায় পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.