এত দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে আর কোনও অস্ট্রেলীয় ক্যাপ্টেন ভারতে এসেছেন? বোধহয় না।
রিকি পন্টিংয়ের পর মাইকেল হাসির অবসরের সিদ্ধান্ত। চোট পাওয়ার পর শেন ওয়াটসনকে অল রাউন্ডার হিসেবে না পাওয়া এবং সবচেয়ে বড় কথা নিজের হ্যামস্ট্রিং সমস্যা। সব মিলিয়ে যথেষ্ট নাজেহাল অবস্থাতেই ভারতে আসছেন মাইকেল ক্লার্ক।
অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের চোটের অবস্থা এমনই যে, প্রস্তুতি ম্যাচ তো দূরের কথা, চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টেও তিনি নামতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। ক্লার্ক নিজে অবশ্য বলছেন, “প্রথম টেস্টের আগে আশা করছি ফিট হয়ে যাব।” তবে ভারতে রওনা হওয়ার আগে সিডনিতে কথাগুলো বলার সময়ও যথেষ্ট চিন্তিত দেখিয়েছে তাঁকে।
চিন্তাটা অমূলক নয়। মঙ্গলবার ক্লার্ক যখন আকাশে, তখন তাঁর দলের ব্যাটসম্যানরা চেন্নাইয়ের গুরু নানক কলেজ গ্রাউন্ডে ভারতের দ্বিতীয় সারির বোলিং লাইন আপের বিরুদ্ধে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। দু’দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিন ৯০ ওভারও উইকেটে টিকে থাকতে পারলেন না ম্যাথু ওয়েডের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ২৪১ রানেই শেষ তাঁরা। উসমান খোয়াজা (৩২), ওয়েড (৩৫), স্টিভন স্মিথরা (৪১) চেষ্টা করলেও ক্যাপ্টেনকে আশ্বস্ত করার মতো রান করতে পারেননি। শুধু ওপেনার এড কাওয়ানের ৫৮ রানে কিছুটা ভরসা রাখতে পারেন ক্লার্ক।
আর কার সামনে ভেঙে পড়ল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং? এমন এক জন অফ স্পিনার, যাঁর নাম ঘরোয়া ক্রিকেটেও খুব বেশি শোনা যায়নি। বুধবার পঁচিশে পা দিতে যাওয়া জম্মু-কাশ্মীরের পারভেজ রসুলের বোলিং হিসাবটা এ রকম: ২৮.৩-৯-৪৫-৭। তাঁর এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য বিষেণ সিংহ বেদীকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন রসুল। বলছেন, “বেদী আমাকে বার বার বলেছেন, ফ্লাইট দিতে ভয় পেও না।” |
উথাপ্পার আলিঙ্গনে রসুল (বাঁ দিকে) । মঙ্গলবার চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই |
ভারতের মাটিতে ভারতীয় স্পিনারদের সামলানোটা যে কতটা কঠিন হবে অস্ট্রেলীয়দের কাছে, সেটা প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচই বুঝিয়ে দিচ্ছে। ক্লার্কও যেন আগাম আঁচ পেয়ে সিডনি ছাড়ার আগে বলে এসেছেন, “নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ভারত সফর বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমার নেতৃত্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। যখনই ওখানে টেস্ট সিরিজ খেলতে গিয়েছি, তখনই প্রচুর সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমাদের দলের ক্রিকেটাররা ভাল করেই ব্যাপারটা জানে।”
পরিস্থিতি, পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আগাম ভারতে চলে এসেছেন অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার। যেমন এসেছিলেন ইংরেজরা। এর পর একটি তিন দিনের ম্যাচও খেলবে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্টের আগে সেই ম্যাচে খেলতে মরিয়া ক্লার্ক। বলছিলেন, “ভাল পারফরম্যান্সের জন্য প্রস্তুতিটাই আসল। ভারতের আবহাওয়ায়, ওখানকার উইকেটে, প্রচুর রিভার্স সুইং, স্পিন খেলার জন্য নিজেকে তৈরি করে নেওয়াটা খুব জরুরি। ভারতে গিয়ে সেটাই করতে হবে আমাকে। প্রস্তুতি ম্যাচটা খেলার চেষ্টা করব। ওই পরিবেশে ম্যাচ খেলে নিজেকে তৈরি করার চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না।” |